ছবিতে দেবের লুক।
হেয়ার স্কুল-সংলগ্ন যে খেলার মাঠটি রয়েছে, সেখানেই বাংলা তথা এ দেশের ফুটবল খেলার প্রথম ভিত গাঁথা হয়েছিল। তার নেপথ্যে যে মানুষটি ছিলেন, সেই নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর নামেই মাঠটি নামাঙ্কিত। যদিও ভারতীয় ফুটবলের জনকের নাম ভুলে গিয়েছে আত্মবিস্মৃত বাঙালি। তাঁকেই পর্দায় জীবন্ত করে তুলবেন দেব। ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘গোলন্দাজ’ ছবিতে দেবের লুক তুলে ধরেছে উনিশ শতকের শেষের দিকের নগেন্দ্রপ্রসাদকে, যে ছবির শুটিং শুরু হচ্ছে আজ থেকে।
পিরিয়ড লুক বলতে এর আগে ‘চাঁদের পাহাড়’-এর শঙ্করের চরিত্রে দেখা গিয়েছে অভিনেতাকে। তবে নগেন্দ্রপ্রসাদের আদল দেবের মধ্যে ফুটিয়ে তোলার মূল চ্যালেঞ্জ ছিল, চেহারার মধ্য দিয়ে ওই সময়টাকে ধরা। পরিচালক জানালেন, ‘‘নগেন্দ্রপ্রসাদের কম বয়সের একটা ছবি আমাদের কাছে আছে। চেষ্টা করা হয়েছে, তার যতটা কাছাকাছি যাওয়া যায়।’’ এ রকম একটি ঐতিহাসিক চরিত্রকে পর্দায় বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা নিয়ে দেব বললেন, ‘‘উনি জমিদার বাড়ির ছেলে ছিলেন। চেহারা, গায়ের রং, শরীরী ভাষা সবটাই আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি ওয়র্কশপের সময়ে।’’
তেমন ভাবে ফুটবল খেলেননি কোনও দিন। সেই দেবকেই নগেন্দ্রপ্রসাদ হয়ে ওঠার জন্য নিয়মিত প্র্যাকটিস আর ওয়র্কআউট করতে হয়েছে। লো-কার্ব ডায়েটে থেকে অনেকটা ওজন ঝরিয়েছেন তিনি। ট্যানডও হয়েছেন। ‘‘সকাল আটটা থেকে দুপুর একটা অবধি টানা প্র্যাকটিস চলত। এখানে তো সিক্স প্যাক চলবে না, তাই আমাকে লিন হতে হয়েছে। অনেকেই জানেন না, নগেন্দ্রপ্রসাদ কুস্তি চ্যাম্পিয়নও ছিলেন। তাই কুস্তিও শিখতে হয়েছে। আর খালি পায়ে ফুটবল খেলাটা কিন্তু বেশ কষ্টকর,’’ বললেন দেব। পরিচালকের মাথায় গল্পটা যখন থেকে দানা বাঁধছিল, তখন থেকেই তাঁর মাথায় ছিল দেবের চেহারা। নগেন্দ্রপ্রসাদের বাবার চরিত্রে শ্রীকান্ত আচার্যকে কাস্ট করার প্রাথমিক কারণও ছিল চেহারার মিল, জানালেন ধ্রুব। এ ধরনের পিরিয়ড ছবিতে যে পরিমাণ রিসার্চ প্রয়োজন, তার জন্য প্রাথমিক ভাবে ধ্রুব আর তাঁর টিম শরণাপন্ন হয়েছিলেন ন্যাশনাল লাইব্রেরির। নগেন্দ্রপ্রসাদের পৈতৃক ভিটে বর্ধমানে। কলকাতায় এখনও বাস করেন তাঁর বংশধরেরা। ‘‘এ ছবির রিসার্চ নিয়েই আর একটা ছবি তৈরি করা যায়। তবে এটা নগেন্দ্রপ্রসাদের বায়োপিক নয়। কারণ বায়োপিক আরও ইতিহাস-নির্ভর হওয়া দরকার,’’ বললেন পরিচালক। ‘গোলন্দাজ’-এর খেলোয়াড়দের প্রায় সকলেই নতুন মুখ। ছবিতে রয়েছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ইন্দ্রাশিস রায়, ইশা সাহা প্রমুখ। শুটিং চলবে কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায়।