‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে রাজা-মাম্পি।
ক্যামেরা-রোল-অ্যাকশন শব্দগুলো শোনা যাচ্ছে এখনও। বৃহস্পতিবার সেটে বিজয়া দশমী উপলক্ষে সিঁদুরও খেলেছে রাজা-মাম্পি। সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে, চর্চায়। তার পরেই ফেসবুকে আছড়ে পড়েছে আরও একটি খবর। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘দেশের মাটি’। তাতে সিলমোহর দিয়েছেন ধারাবাহিকের প্রযোজক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, ‘‘চ্যানেল এবং প্রযোজনা সংস্থা যৌথ ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই ধারাবাহিকের শেষ সম্প্রচার ৩১ অক্টোবর।’’
১ নভেম্বর থেকে একই সময়ে দেখা যাবে নতুন ধারাবাহিক ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি’। তাতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন দীপান্বিতা রক্ষিত, রাহুল মজুমদার। দীপান্বিতা এর আগে ছিলেন ‘সাঁঝের বাতি’ ধারাবাহিকে। রাহুলের শেষ কাজ ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’।
‘দেশের মাটি’ যে বন্ধ হতে পারে, সে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল কিছু দিন ধরেই। যা জেনেও বিশ্বাস করতে পারেননি ধারাবাহিকের দর্শক-অনুরাগীরা। ফেসবুকের ফ্যানপেজে রোজই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন তাঁরা। তবু কোথাও যেন প্রশ্ন ছিল, সত্যিই কি আর দেখা যাবে না কিয়ান-নোয়া, রাজা-মাম্পি, দাদান-ঠাম্মিকে? ডোডো-উজ্জয়িনীর অনুচ্চারিত প্রেম কি অধরাই থেকে যাবে? কিংবা পুলিশকর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে ‘অভিমন্যু’র দাপট!
বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইন জানিয়েছিল, চিত্রনাট্যের খাতিরে পুলিশের উর্দি ছেড়ে রাজনীতিবিদ হিসেবে ধারাবাহিকে দেখা যেতে পারে ‘অভিমন্যু’ ওরফে বাস্তবের দুঁদে পুলিশকর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার পরই রাতারাতি এমন সিদ্ধান্ত চ্যানেল ও প্রযোজনা সংস্থার। শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনকে রাহুল প্রথম জানান ধারাবাহিক বন্ধের খবর।
কী বলছেন দেশের মাটির ‘রাজা’? অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপশোস, ‘‘দুঃখ হচ্ছে। কিন্তু এটাই জীবন। এটাই বাস্তব।’’
ধারাবাহিকের অপর জুটি কিয়ান-নোয়া।
মনখারাপ মাম্পির বাবা ‘চাঁদু’ ওরফে দিগন্ত বাগচীরও। বলেছেন, ‘‘কিছু বলার ভাষা নেই। এখনও পর্বের কাজ চলছে। আমাদের মেনে নিতে হবে।’’ কী কারণে আচমকা বন্ধ ধারাবাহিক? সদুত্তর নেই ‘নোয়া’ ওরফে শ্রুতি দাসের কাছে। তাই, যে কোনও শুরুরই শেষ থাকে— এমন আপ্তবাক্যই শুনিয়েছেন তিনি। তা বলে একটি ধারাবাহিক মাত্র ২৩০ বা তার কিছু বেশি পর্বে শেষ হয়ে যাবে? নিশ্চুপ ‘নোয়া’।
শুরু থেকেই গায়ের রঙের কারণে বিতর্কের কেন্দ্রে ‘নোয়া’র চরিত্র। দর্শক পছন্দ করেনি কিয়ান-নোয়া অর্থাৎ দিব্যজ্যোতি দত্ত-শ্রুতি জুটিকেও। এগুলো কি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ? অভিনেত্রীর দাবি, সবটাই লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলতে পারবেন। পাশাপাশি শ্রুতি এ-ও বলেছেন, ‘‘আমরা অভিনয় দিয়ে চরিত্র জীবন্ত করি। বাকিটা বাস্তব করে তোলে দর্শকদের ভালবাসা। তাই একটা ধারাবাহিক ঘিরে ওঁদের উন্মাদনা আমাদের সব সময় ছুঁয়ে যায়। এখানেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।’’
ধারাবাহিক শুরুর প্রথম দিন থেকেই ফ্যানপেজে, ফেসবুকে চর্চায় ‘দেশের মাটি’ এবং রাজা-মাম্পি, কিয়ান-নোয়া জুটি। বিশেষত রাজা-মাম্পি জুটি খুব অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়েছিল। ফলে, তাদের নিয়ে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে খুলে যায় ‘রাম্পি’ বা ‘রাজমা’ গ্রুপ। সেখানে ‘রাজা’ ওরফে রাহুল এবং ‘মাম্পি’ ওরফে রুকমা রায়কে নিয়ে অনুরাগীদের উত্তেজনা দেখার মতো। সে সব যদিও ছাপ ফেলেনি প্রতি সপ্তাহের রেটিং চার্টে। শুরুতে ভাল নম্বর। ক্রমশ সেই সংখ্যা নিম্নগামী। চলতি সপ্তাহে ধারাবাহিকের ঝুলিতে নম্বর ৪.৬। তার আগের সপ্তাহে ৪.৮। কম রেটিং-ই কি তা হলে ধারাবাহিক বন্ধের অন্যতম কারণ? এমন পরিস্থিতিতে সাধারণত সময়ের পরিবর্তন করে ধারাবাহিকের সম্প্রচার হয়। যেমন, ‘মোহর’। এই ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে তেমন হল না কেন? শৈবাল বলেছেন, ‘‘চ্যানেলের এটাই রায়। মেনে নিয়েছেন সবাই।’’