Debchandrima Singha Roy

এক মাস বাড়ি থেকে বেরোইনি, ঘরেও শাড়ি পরে থাকতাম: দেবচন্দ্রিমা

মুম্বই গিয়ে শুধুই কাজ নিয়ে ব্যস্ত অভিনেত্রী। ‘সুহাগন চুড়েল’-এ অভিনয় করছেন তিনি। এই ধারাবাহিকের জন্য মন দিতে হয়েছিল হিন্দি উচ্চারণেই।

Advertisement

স্বরলিপি দাশগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৪ ১৭:০১
Share:

দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায়। ছবি: সংগৃহীত।

টলিপাড়ায় কাজ করতে করতেই মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন বাংলার মেয়ে দেবচন্দ্রিমা সিংহরায়। মুম্বইয়ের ছোট পর্দার ধারাবাহিকের কাজ নিয়ে আপাতত ব্যস্ত তিনি। ‌অধিকাংশ সময়ে হিন্দি ভাষায় কথা বলছেন। হিন্দিতে অভিনয়ের পাশাপাশি এখন উর্দুও শেখাও শুরু করেছেন। এ সবের মধ্যেও বাংলাতেও কাজ চলছে। ১৫ অগস্ট মুক্তি পাচ্ছে তাঁর ওয়েব সিরিজ় ‘পরিণীতা’। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের এই উপন্যাস অবলম্বনে এর আগে বড় পর্দায় ছবি দেখেছেন দর্শক। ‘ললিতা’র চরিত্রে অভিনয় করার আগে অজয় কর ও প্রদীপ সরকার দুই পরিচালকেরই তৈরি ‘পরিণীতা’ দেখেছেন দেবচন্দ্রিমাও। কিন্তু সেই ছবির প্রভাব নিজের উপর পড়তে দেননি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনকে দেবচন্দ্রিমা বলেন, “দুটো ছবিই এক বার করে দেখেছি এই কাজের প্রস্তাব পাওয়ার পরেই। এর বেশি দেখলে নকল করার প্রবণতা চলে আসে। বরং উপন্যাসটাই বেশি করে পড়েছি, যাতে নিজের মতো করে চরিত্রকে ভাবতে পারি। আগের দুটো ছবি থেকে ভিন্ন অভিনয় করতেই হত, কারণ দর্শকও পাল্টেছে। তাই এখনকার আমেজ রেখে কী ভাবে গল্পকে তুলে ধরা যায়, সেই চেষ্টাই করা হয়েছে।”

কিন্তু, পুরনো প্রেক্ষাপটেই তৈরি ‘পরিণীতা’। তাই ললিতার চরিত্রের জন্য নাকি বেশ পরিশ্রমও করতে হয়েছে দেবচন্দ্রিমাকে। অভিনেত্রীর কথায়, “চরিত্রটার জন্য প্রস্তুতি পর্ব সাংঘাতিক ছিল। প্রয়োজন ছাড়া এক মাস বাড়ি থেকে বেরোইনি। কিন্তু বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা, এ সব বন্ধ করে দিয়েছিলাম। দেবচন্দ্রিমার জীবনযাপনটায় দাঁড়ি টেনেছিলাম। এটা তো পুরনো দিনের গল্প। তাই সেই পুরনো দিনের আদবকায়দা রপ্ত করতেও বেশ সময় লাগতই। আমার হাঁটাচলাতেও এই সময়ের ছাপ রয়েছে। তাই ললিতা হয়ে উঠতে আমি বাড়িতেই শাড়ি পরে ঘুরতাম। বার বার স্ক্রিপ্ট পড়তাম। সময় লেগেছে। তবে পেরেছি শেষ পর্যন্ত।”

Advertisement

‘ললিতা’ বেশে দেবচন্দ্রিমা।

চরিত্রের প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে গৌরব চক্রবর্তীও তাঁকে সাহায্য করেছেন বলে জানান দেবচন্দ্রিমা। ‘পরিণীতা’য় শেখরের চরিত্রে অভিনয় করেছেন গৌরব। তিনি বলেন, “গৌরবদার মধ্যে সাবেকিয়ানার একটা ছাপ রয়েছে। ওঁর পরিবারের জন্যই হয়তো। তাই প্রথম দিন স্ক্রিপ্ট রিডিং-এর সময় গৌরবদার অভিনয় দেখে ভেবেছিলাম, আমি শেষ। গৌরবদাকে তো কোনও প্রস্তুতিই নিতে হবে না। তবে আমায় হাল ছাড়লে হবে না। পরিশ্রম করে নিজেকে তৈরি করতেই হবে।”

‘পরিণীতা’য় গিরীনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্পণ ঘোষাল। সম্পর্কই এই উপন্যাসের অন্যতম আকর্ষণ। এক দিকে শেখরের প্রতি ললিতার একাগ্র প্রেম। অন্য দিকে গিরীনের আগমন। কিন্তু ব্যক্তিগত দিক থেকে দেবচন্দ্রিমার জীবনে প্রেম ঠিক কোথায় অবস্থান করছে? প্রশ্ন করতেই অভিনেত্রী বলেন, “আমি এখন ভীষণ ভাবে ‘সিঙ্গল’। কোনও সম্পর্কে নেই। এমনকি, প্রেম নিয়ে ভাবার অবকাশও পাচ্ছি না। নতুন শহরে কাজ করতে এসেছি। এখানে এখন ভিত শক্ত করব কী করে, তা-ই আমার লক্ষ্য।” তবে প্রেমের ক্ষেত্রে বিশ্বাস ও প্রতিশ্রুতিকে বরাবর মর্যাদা দিতে ভালবাসেন দেবচন্দ্রিমা। তাঁর কথায়, “আমি প্রেমে খুব ‘কমিটেড’ থাকি। কারও জমি, বাড়ি, গাড়ি আছে কি না, এই নিয়ে আমার কোনও মাথা ব্যথা নেই। আমি নিজের উপার্জন করি। তাই কাউকে যদি এক বার বলি, আমি তাঁর সঙ্গে আছি, সব সময় থাকব।”

মুম্বই গিয়ে শুধুই কাজ নিয়ে ব্যস্ত অভিনেত্রী। ‘সুহাগন চুড়েল’-এ অভিনয় করছেন তিনি। এই ধারাবাহিকের জন্য মন দিতে হয়েছিল হিন্দি উচ্চারণেই। দেবচন্দ্রিমা বলেন, “শুদ্ধ হিন্দিতেও কিছু সংলাপ থাকে। তাই শুরুর দিকে বেশ অসুবিধা হত। তবে এখন বলতে বলতে আমি পটু হয়ে গিয়েছি। এখন আমার হিন্দিতে বাঙালি টানও থাকে না। বাংলা আমার মাতৃভাষা। আমি ভুলব না। কিন্তু আমি উচ্চারণ ঠিক করতে অধিকাংশ সময় হিন্দিতে কথা বলি। অনেকে মনে করেন, আমি বাংলা ভুলে গিয়েছি। বাংলা আমি কখনওই ভুলব না। আর এখন আমি উর্দু শিখছি।”

‘সুহাগন চুড়েল’ শেষ হচ্ছে অক্টোবরে। তার পরে কলকাতা ফেরার পরিকল্পনা রয়েছে দেবচন্দ্রিমার। তখন বাংলাতে কয়েকটি কাজ সেরেই ফের মুম্বই ফিরবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন অভিনেত্রী। বিশেষ করে, দুর্গাপুজোর জন্যই অক্টোবরে কলকাতা ফেরার পরিকল্পনা দেবচন্দ্রিমার। তাঁর কথায়, “পুজোয় কলকাতা থাকতেই হবে। কাজ শুরুর সময় থেকে বলে রেখেছিলাম, পুজোর চার দিন ছুটি চাই-ই চাই। ওই চার দিন আমি কলকাতাতেই থাকব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement