মহম্মদ রফি ও কিশোরকুমারের সঙ্গে বাপ্পি।
বাপ্পিদার কথাতেই ছিল, ‘দেবশ্রীর সঙ্গে আমার সব গান হিট’। ‘আমি কলকাতার রসগোল্লা’, ‘আর কত কাল একা থাকব’... ‘রক্তলেখা’র শুটিংয়ের একটা অংশ বাপ্পিদার মুম্বইয়ের বাড়িতে হয়েছিল। সেই সময়ে বাংলা ছবি মুম্বইয়ে গিয়ে শুট করার চল শুরু হয়েছিল। অবশ্য কাজের বাইরেই বাপ্পিদার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা বেশি। আমার দিদিদের বন্ধু ছিলেন। আবার আমার ছোট কাকিমা বাপ্পিদার মাসি।
প্রচুর শো করেছি একসঙ্গে। স্টেজে বাপ্পিদার সঙ্গে গাওয়াটাই দারুণ রোমহর্ষক ছিল। জিজ্ঞেস করতেন, ‘কী গাইব?’ হয়তো বললাম, ‘ওই শোনো পাখিও বলছে কথা’। উৎসাহ নিয়ে শুরু করতেন। নিজের অংশটা এলেই আমার হাতে মাইকটা ধরিয়ে বলতেন, ‘আমি না ভুলে গিয়েছি, তুমি গাও’!
কৃষ্ণনগরে শো হলে গাড়ি থামিয়ে সরপুরিয়া খেতেন। ওঁর বাড়িতে কোনও নবদম্পতি গেলে তাঁদের খেতে দিতেন রুপোর থালায়। পুজোর সময়ে ‘মুখার্জিবাড়ি’র ভোগ খেতে খুব ভালবাসতেন। মুম্বই গিয়ে ওঁর বাড়ি না গেলে খুব রাগ করতেন। আবার কলকাতায় এলে আমাদের বাড়িতে আসবেনই। অনেক সময়ে সারা রাত ধরে মজলিস চলত। একবার ‘তোমার রক্তে আমার সোহাগ’ ছবির গান কম্পোজ় করতে গিয়ে ভোরের ফ্লাইটও মিস করেছিলেন বাপ্পিদা!
পোষ্যদের নিয়ে র্যালি করেছিলাম একবার। বাপ্পিদা কুকুরে ভয় পেলেও আমাকে উৎসাহ দিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন। দিদির দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফোন করেছিলেন আমেরিকা থেকে। মৃত্যুর দিনসাতেক আগেই দিদির সঙ্গে কথা হয়েছিল। শেষের দিকে গলা খারাপ হয়ে যাওয়ায় খুব কষ্ট পেতেন। ওঁর চলে যাওয়াটা ব্যক্তিগত ক্ষতি।
অনুলিখন: ঈপ্সিতা বসু