জিৎ
রুজি-রোজগারের আগে মানুষের নিরাপত্তা। গত কয়েক দিনে নানা বাংলা ছবি ও ওয়েব সিরিজ়ের শুট বাতিল করা হয়েছে। বাকি ছিল সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রি। করোনাভাইরাসের ত্রাসে আজ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হল সব ধারাবাহিকের শুটিং। মঙ্গলবার ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কারস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপতি অরূপ বিশ্বাস সাংবাদিক বৈঠকে এই খবর জানান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩০ তারিখের পর সিনেমা জগতের সকলকে নিয়ে একটি রিভিউ মিটিং করবেন বলে জানানো হয়েছে। সেখানেই স্থির হবে, ফের কবে থেকে কাজ শুরু হবে। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, প্রযোজক নিসপাল সিংহ, আর্টিস্ট ফোরামের তরফে অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ।
ছবির জগতের পাশাপাশি বাংলা সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপ্তিও অনেক বেশি। পরিচালক-প্রযোজক, শিল্পী ছাড়াও এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার টেকনিশিয়ান। সিরিয়ালের শুট বন্ধ হওয়ার ফলে তাঁরাই আর্থিক ভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা। প্রোডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘সব অ্যাসোসিয়েশনই একসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্ষতি সকলেরই হবে, এক-এক জনের এক-এক ভাবে। প্রযোজক-শিল্পীরা যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, ততটাই টেকনিশিয়ানরাও। আর গোটা বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থাই এখন সঙ্কটের মুখে। তাই সব কিছু নিয়েই চিন্তাভাবনা করা হবে।’’ বলিউডের প্রোডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন যদিও এই পরিস্থিতিতে টেকনিশিয়ানদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করার চিন্তাভাবনা করছে।
প্রায় ৩৬৫ দিন সিরিয়ালের শুটিং করতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠেন টেলি দুনিয়ার তারকারা। তবে এই ঘোষণার পরে হঠাৎ পাওয়া ছুটি কী ভাবে কাটাবেন, ভাবতে শুরু করেছেন তাঁরা। ‘নকশিকাঁথা’ ধারাবাহিকের মুখ্য শিল্পী মানালি দে বললেন, ‘‘ছুটি পেয়েছি ঠিকই। তবে এখন তো বেশি কিছু করা যাবে না। শান্তিনিকেতনে একটা বাড়ি আছে। ওখানেই বড়জোর যাব। আর বাড়িতে বন্ধুদের ডেকে আড্ডা দিতে পারি।’’ ছুটি বিফলে যাতে না যায়, তাই পরিবার নিয়ে উত্তরবঙ্গে চলে যাচ্ছেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘‘আমার শ্বশুরবাড়ি ওখানেই। ৩০ তারিখে কী সিদ্ধান্ত হয়, সেই বুঝে ফিরব।’’
নকশিকাঁথা’র দৃশ্য
সিরিয়াল জগতে ছুটির মেজাজ হলেও, কাজ অসমাপ্ত রেখে ফিরতে হচ্ছে জিৎ এবং তাঁর ছবি ‘বাজ়ি’র ইউনিটকে। লন্ডনে ছবির শুটিং করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। ১১ মার্চ থেকে শুটিং শুরু হয় ওখানে। তবে পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হতে থাকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ট্রাভেল অ্যাডভাইসরি কমিটি থেকে জারি হওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলি থেকে কোনও ব্যক্তি ১৮ মার্চের পরে দেশে ফিরতে পারবেন না। ফেরার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। তাই কাজ বাকি রেখেই তড়িঘড়ি ফিরে আসে ছবির টিম। অন্য দিকে, আগামিকাল দক্ষিণ আফ্রিকায় শুটিং সেরে দেশে ফিরছে ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’-এর টিম। অর্থাৎ পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতের বাইরে থেকে আসা যে কোনও ব্যক্তিকে সরকারি নির্দেশ মেনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রয়োজনে কোয়রান্টিন করার কথা। তারকাদের ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম বলবৎ হবে।