নন্দনে পাকিস্তানের ছবি ‘জয়ল্যান্ড’ দেখতে দর্শকদের ভিড় উপচে পড়ল। নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই নন্দনে ভিড় কম। তবে বিকেল গড়াতেই ভাঙল ভুল। নন্দনের মূল ভবনের সামনে সিনেপ্রেমীদের দীর্ঘ লাইন শিশির মঞ্চ অতিক্রম করেছে। ‘হাওয়া’ তো আর দেখানো হচ্ছে না। তা হলে? আসলে নন্দন ১-এ বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ দেখানো হবে পাকিস্তানের বিতর্কিত ছবি ‘জয়ল্যান্ড’। শুধু বাংলা সিনেমা নয়, ভাল ছবির পাশে দাঁড়াতে বাঙালির যে কোনও আপত্তি নেই, তা যেন আরও এক বার প্রমাণ করল ২৮তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব।
মঙ্গলবার চলচ্চিত্র উৎসবে এসেছিলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী জয়া আহসান। ছবি: সংগৃহীত।
চলতি বছরে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি সম্মান ছিনিয়ে নেয় সাঈম সাদিক পরিচালিত ‘জয়ল্যান্ড’। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী স্বাধীনতার পাশাপাশি রূপান্তরকামীদের অধিকারের স্বপক্ষে কথা বলে এই ছবি। পাকিস্তানের হয়ে ছবিটি আগামী বছর অস্কারে সেরা আন্তর্জাতিক ছবি বিভাগে লড়বে। মজার বিষয়, অস্কারে মনোনীত হওয়ার পরেও পাকিস্তানে কিন্তু ছবিটির প্রদর্শনের উপর নেমে এসেছে নিষেধাজ্ঞা।
‘জয়ল্যান্ড’ ছবির একটি দৃশ্যে রূপান্তরকামী অভিনেত্রী আলিনা খান এবং অভিনেতা আলি জুনেজো। ছবি: সংগৃহীত।
মঙ্গলবার নন্দনে দর্শকরা ছবিটি দেখার জন্য কয়েক ঘণ্টা লাইন দেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। দর্শকাসন ভরে যাওয়ার পর বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রেক্ষাগৃহের মূল প্রবেশদ্বার। যা নিয়ে সিনেপ্রেমীদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কলকাতায় আয়োজিত চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত বাংলাদেশের ‘হাওয়া’ ছবিটি দেখার উৎসাহের কথা এখনও মনে আছে অনেকের। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় দিন নন্দনে ছবিটি প্রদর্শনের সময়েও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
মঙ্গলবার ‘জয়ল্যান্ড’ ঘিরে দর্শকদের উৎসাহ নন্দনে আসা অনেককেই ফিরিয়ে নিয়ে গেল ‘হাওয়া’-র নস্ট্যালজিয়ায়।
উৎসবে মাস্টার ক্লাসে মঙ্গলবার অংশ নেন বর্ষীয়ান পরিচালক সাজি এন কারুন। পরিচালক অতনু ঘোষের সঞ্চালনায় আলোচনার বিষয় ছিল ‘দৃশ্যকল্প এবং চলমান চিত্রমালা’। দুপুরে সৌকর্য ঘোষাল পরিচালিত ‘ওসিডি’ ছবির সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দেন জয়া আহসান। সন্ধ্যায় সিনে আড্ডার বিষয় ছিল ‘হাস্যকৌতুক কী শারীরিক ভঙ্গিমা না টাইমিং’। নন্দনে সুইৎজ়ারল্যান্ডের ছবি ‘নেবারস’ দেখার জন্যও দর্শকের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।