আপাতত ইশার হাতে আর একটি ছবির কাজ রয়েছে। ছবি: ইশার ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।
গায়ে হালকা চাদর, চোখে একটা ভয় পাওয়া ভাব। মেয়েটা ঘুরছে দার্জিলিঙে ‘সোয়েটার’-এর সেটে।
কখনও মায়ের কাছে ধমক খাচ্ছে, কখনও বা উল বুনতে গিয়ে খেতে ভুলে যাচ্ছে। কে বলুনতো মেয়েটা?
আপনি চেনেন এঁকে। ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ দিয়ে যিনি পা রেখেছিলেন সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে। অর্থাত্, অভিনেত্রী ইশা সাহা। তিনিই শিলাদিত্য মৌলিক পরিচালিত ‘সোয়েটার’ ছবির নায়িকা।
শট দেওয়ার ফাঁকে উল বুনতে বুনতে ইশা বললেন,‘‘সোয়াটারের সঙ্গে আমারজন্ম-জন্মান্তরের সম্পর্ক। আমি খুব শীতকাতুরে। বাড়িতেও একটু ঠাণ্ডা পড়লেই সর্দি, কাশি, লেপ নেমে যায় আমার। ফলে সোয়েটারের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক আমার।’’
এই ছবিতে ইশার চরিত্রের নাম টুকু। যে আন্ডার কনফিডেন্ট, কনফিউজড। কী করা উচিত, কী করবে না, সব সময় ভাবছে সে। বাবা-মায়ের অবহেলা পেয়েছে। এ হেন টুকু প্রেমও করে। সেখানেও প্রেমিক কন্ট্রোল করে তাকে। আসলে সকলেই মেয়েটিকে ডমিনেট করার চেষ্টা করে। এর পর এক অদ্ভুত শর্ত নিয়ে অদ্ভুত বিয়ের সম্বন্ধ আসে টুকুর। সেখান থেকে শুরু হয় ‘সোয়েটার’-এর জার্নি।
আরও পড়ুন, ‘মান্টো’ একটা আইডিয়া, আমি সেটাই দেখাতে চেয়েছি, বললেন নন্দিতা
ইশাকে এ ছবিতেও ডিগ্ল্যাম লুকে দেখবেন দর্শক। পর পর ছবিতে অনেকটা একই ধরনের লুক সেট হচ্ছে কি? ইশার উত্তর, ‘‘এখনও পর্যন্ত সবকটাতেই আমার ডিগ্ল্যাম লুক। গ্ল্যামারের জন্য তো অনেকে রয়েছে। আমি না হয় ডিগ্ল্যাম হলাম। আমার ভাল লাগে। এখানে তো অনেকটা টোন ডাউন করতে হয়েছে। আমাকে হয়তো প্রোডিউসার বা অডিয়েন্স এখনও গ্ল্যামারাস লুকে দেখতে চায় না,’’ হেসে বিকেলের জলখাবারের প্লেটের চিঁড়ের পোলাও আর পান্তুয়া থেকে শুধু মিষ্টিটা তুলে নিলেন নায়িকা। প্রোডাকশনের কাছে আবদার করলেন, ‘‘আমি আর একটা মিষ্টি খাব কিন্তু।’’
আপাতত ইশার হাতে আর একটি ছবির কাজ রয়েছে। তিনি জানালেন, ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘দুর্গেশগড়...’-এর শুটিং শুরু হবে আগামী ডিসেম্বরে। মাঝে আর একটা প্রজেক্ট হতে পারে। কিন্তু এখনই কিছু খোলসা করতে চাইলেন না।
ছোট্ট কেরিয়ারেই অভিনয় করে এত প্রশংসা পান ইশা। অথচ অফার এত কম কেন? এ বার ঠোঁটের কোণে সেই চেনা হাসি। ইশা স্পষ্ট বললেন, ‘‘আমার কাছে লাইন দিয়ে সিনেমা নেই। ঝুড়ি ঝুড়ি অফার আসে না আমার। এখনও তো লার্নিং প্রসেসে রয়েছি। একটু বেছে কাজ করি। কারণ সব চরিত্র তো আমার জন্য নয়।’’
আরও পড়ুন, ‘অন্য হিরোরাও তো প্রোডিউসার হয়েছেন, ডিফারেন্স দেখতে পাচ্ছেন?’ বলছেন দেব
কিছুদিন আগেই ওয়েব সিরিজ ‘জাপানি টয়’-এ কাজ করেছেন। তাঁর দাবি, রেসপন্সও ভাল। এই মুহূর্তে আরও ওয়েবের অফার আছে ইশার কাছে। কিন্তু তিনি করতে চান না। নায়িকার যুক্তি, ‘‘ওয়েবের অফার আছে। কিন্তু মনে হচ্ছে একই রকম হচ্ছে। নতুন কোনও সাবজেক্ট এলে করব। আরও একটা বিষয়। আমরা বলছি বটে, ওয়েবই আগামী দিনের সব কিছু। কিন্তু সেটা আমার মনে হয় না। টিভি না থাকলে মা-ঠাকুমারা কী করবে? টিভি দেখেই তো বড় হয়েছি আমরা।’’
দার্জিলিঙে শুটিংয়ের ফাঁকে ইশা।
পাহাড়ি হাওয়ায় তখন বৃষ্টির গন্ধ। সে দিনের মতো শুটিং প্যাকআপ। ‘টুকু’র খোলস ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন ইশা। যিনি এ আড্ডা, গল্পের মধ্যেও নিজের মতো করে শুরু করবেন পরের দিনের প্রস্তুতি...।