সিনেমা, সিরিয়াল মিলিয়ে তো অনেক দিন হল ইন্ডাস্ট্রিতে। সাক্ষাত্কারের সংখ্যা এত কম কেন?
এটা ডেলিবারেটলি নয়। মনে হয় কম কাজ করি বলে হয়তো ইন্টারভিউয়ের সংখ্যা কম। আর গত তিন-চার বছর ধরে যে সব কাজ করেছি, সবই অনসম্বল কাস্টের। ফলে আমার সোলো ইন্টারভিউ হয়নি। আমাকে অ্যাপ্রোচই করা হয়নি।
কম কাজ করেন কেন? অফার আসে না?
অফার আসে। আমি বেসিক্যালি কুঁড়ে।
কিন্তু কাজের খিদে তো থাকে…
বরাবরই চুজ করে কাজ করি। সে জন্য কম হয়ে যায়। কাজ তো শুধু আমার পছন্দে হবে না। ডিরেক্টর, প্রোডিউসার, আমার— এই তিন জনের একসঙ্গে মতের মিল হয় খুব কম সময়। সে জন্য হয়তো…। তার মানে আমি কম কাজ করতে চাই এমন নয়। কাজ করতে চাই। কিন্তু ওই মতের মিলটা জরুরি। এমন নয় যে আমি পার্টিকুলার কোনও জনার নিজের জন্য ঠিক করে রেখেছি। কিন্তু কনটেন্টটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট।
আরও পড়ুন, বুম্বাদার ডেডিকেশন আমাকে ইনসিকিওর করে দেয়, স্বীকারোক্তি ঋত্বিকের
আপনার পিআর কেমন?
ইন্ডাস্ট্রিতে সকলের সঙ্গেই আমার খুব ভাল সম্পর্ক। তাঁদের সহজেই কাজের কথা বলতে পারি। বলিও। কিন্তু ওই পর্যন্ত।
তার পর আর ডাক আসে না, তাই তো?
দেখুন, এটা খুব ছোট ইন্ডাস্ট্রি। কাজ কম হয়। আর কাজ যা হয়, সেই তুলনায় বিশেষ করে অভিনেতাদের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রত্যেক বছর ভাল রোলে সবার ফিট করা সম্ভব নয়। পরমদা, আবিরদা, যিশুদা খুব ভাল কাজ করছে। সেই কাজগুলো আমাদের কাছে আসবে, এমন জায়গাই তৈরি হয়নি।
কেন তৈরি হচ্ছে না? নতুনদের ওপর পরিচালক-প্রযোজকরা ভরসা করছেন না?
ভরসা করছে না বললে ভুল বলা হবে। এই জেনারেশনকে নিয়ে লেখা হয় না। ২০১৮-র ছবিগুলো যদি দেখেন, আবিরদা, পরমদা বা যিশুদার ছবিগুলো বলছি, ওরা যেগুলো করেছে তার একটা রোলেও আমি ফিট করি না।
প্রত্যেক বছর ভাল রোলে সবার ফিট করা সম্ভব নয়, বললেন অভিনেতা।
সেটাই তো জানতে চাইলাম, আপনাদের নিয়ে লেখা হচ্ছে না কেন?
সেটা পরিচালক, স্ক্রিপ্ট রাইটারদের ব্যাপার। আমার হাতে যেটুকু আছে, আমি এক জনকে বলতে পারি যে, সিরিয়াসলি রেডি টু ডু আ ফিল্ম। সেটা আমি প্রুভ করতে পারব, যখন উনি আমাকে শুট করবেন। ফলে আমাকে অপেক্ষা করতেই হবে।
পরমব্রত, আবির বা যিশুর পাশাপাশি আপনি বা এই জেনারেশনের অন্যান্যরা কোথায়? সমস্যাটা কি কোএগজিস্টটেন্সের?
না। আমি বিশ্বাস করি, আমরা কোএগজিস্ট করতে পারব। সব ইন্ডাস্ট্রিতেই সেটা হয়। কিন্তু ওই যে বললাম, এখানে কাজ খুব কম হয়। পুজোতে পাঁচটা ছবি রিলিজ করবে। সেটা এখন থেকে ঠিক হয়ে বসে আছে। আমার এটাতে আপত্তি। পাঁচটা ভাল ছবি একসঙ্গে আসাটা নিয়ে আমার প্রবলেম। আর তা ছাড়া…
আরও পড়ুন, ‘ও জানতেই পারল না, আমার ওকে মনে আছে…’
কী?
হিন্দি ছবি বা বাইরের ছবিকে আমরা এত প্রাধান্য দিই যে…। কলকাতায় বা পশ্চিমবঙ্গে তারা যা ব্যবসা করে, আমাদের ছবিকে যদি সেই প্রাধান্যটা না দিই, কোনওদিনই সেই জায়গাটা রিচ করতে পারব না। এটা তো আমার হাতে নেই। যেদিন পশ্চিমবঙ্গ থেকে শাহরুখ খান নয়, যিশু সেনগুপ্ত বেশি পয়সা পাবে, সে দিন ইন্দ্রাশিস, গৌরবের কাজের পরিমাণ বাড়বে। টাকার পরিমাণও বাড়বে। এখানে যদি সারাক্ষণই শাহরুখ, বরুণ ধবন, টাইগার শ্রফ রুল করে তা হলে আমরা কখনও ভাল করতে পারব না।
সে জন্যই কি আবার টেলিভিশনে ফিরলেন?
দেখুন, আমি নিজের ইমেজ ভাঙতে চাই না। সিনেমায় ছোট ছোট কাজ করিনি যে এমন নয়। কিন্তু দেখলাম যে ধরনের কাজ চাইছি, তা অনেক বেশি করে টেলিভিশন দিচ্ছে। ওয়েব দিচ্ছে। তবে অনেস্টলি বলছি, ছবিতে ভাল রোল পেলে, বড় রোল পেলে করতে রাজি আছি।
টেলিভিশন তো ইকনমিক ব্যাকআপটাও তৈরি করে…
অফকোর্স। আর্থিক ভাবে টেলিভিশন অনেক হেল্প করে। মাঝখানে পাঁচ বছর আমার অপেক্ষা করাটাকে অন্য ভাবে নেওয়া হয়েছিল। অনেকে ভেবেছিলেন, আমি টেলিভিশন করব না। তার পর ‘প্রেমের কাহিনি’ দিয়ে কামব্যাক করি। এখন ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’ করছি। এটাও ভাল কাজ। তবে ওয়ার্ক করা বা না করাটা পুরোটাই দর্শকের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু আমি টেলিভিশন আর করব না, এটা কখনও বলিনি।
তা
আর্থিক ভাবে টেলিভিশন অনেক হেল্প করে, মত অভিনেতার।
হলে অনেকে তেমন ভেবেছিলেন কেন?
সেটা আমারই দোষ হয়তো। আমি পাঁচ বছর ধরে টানা ‘না’ বলে গিয়েছি। কারণ সে সময়টা ফিচার ফিল্মকে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তো টেলিভিশন থেকেই শুরু করেছিলাম। এখনও আমার প্রথম দুটো প্রজেক্ট, ‘গানের ওপারে’ আর ‘অদ্বিতীয়া’ সবচেয়ে বেশি হিট। লোকে এখনও ওগুলো নিয়ে কথা বলে। আমি খুব বড় বড় সিনেমার ছোট ছোট অংশ হয়েছি। কিন্তু ছবিটা হিট হওয়াতে আমার চরিত্রের সে ভাবে ক্রেডিট ছিল না। বড়জোর লোকে বলে, তোমাকে ‘চতুষ্কোণ’-এ বা ‘হৃদমাঝারে’তে ভাল লেগেছে। কিন্তু টেলিভিশনে আমি সেই স্পেসটা পাই।
টেলিভিশনে মহিলা চরিত্রদের গুরুত্ব বেশি বলেন অনেকে। আপনিও তাই মনে করেন?
সেটা নিয়ে আমার কোনও দ্বিমত নেই। ‘গানের ওপারে’র আগে প্রায় তিনটে লিড রোল অফার করা হয়েছিল আমাকে। কিন্তু আমি বুঝেছিলাম এটা আমার নামে চলবে না। ফিমেল লিডের নামে চলবে। যদিও ‘গানের ওপারে’তে লিড রোল ছিল না। কিন্তু লোকে মনে রাখবে ওই কাজটা। তবে এ রকম কাজ খুব কম হয়। একটা বিষয় জানেন, আমাকে কম দেখা গেলে আপত্তি নেই। কিন্তু ভাল রোলে দেখা গেলে ভাল লাগবে। ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’তেও একটা বাচ্চা মেয়ে ভাল কাজ করছে। কিন্তু আমারও স্পেস আছে।
আরও পড়ুন, সাংবাদিকদের সম্পর্কে কী ধারণা পার্নোর?
যে ভাবে আপনি শুরু করেছিলেন, আর আজ যেখানে রয়েছেন— আরও বেটার পজিশনে থাকার কথা ছিল তো?
আমি যে ভাবে শুরু করেছিলাম, ইট ওয়াজ আ ক্রেজি স্টার্ট। আমি নিজেও ভেবেছিলাম এখন আরও ভাল পজিশনে থাকব। কিন্তু সামহাউ হল না। শুধু অনেস্টি, ডেডিকেশন, হার্ডওয়ার্ক ম্যাটার করে না। লাকও ম্যাটার করে। এটা এখন আমি বিশ্বাস করি।
এত আনসার্টেনিটি সামলান কী ভাবে?
দিস ইজ পার্ট অফ মাই প্রফেশন। এই আনসার্টেন লাইফটাই ভাল লাগে। আলাদা উত্তেজনা তৈরি করে। তবে আমি সব সময় আশাবাদী। সব সময় নিজের মনের কথা শুনেছি। যেটা আমাকে বলছে যে এ বার ইন্টারভিউয়ের সংখ্যা বাড়বে (হাসি)।
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)