‘সত্যকাম’-এর লুকে অর্জুন।
অরিন্দম শীলের ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ মুক্তি পাবে আগামী ১২ অক্টোবর। এই ছবিতে একেবারে অন্য রকম চরিত্রে অভিনয় করছেন অর্জুন চক্রবর্তী। বহু মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে দেখা যাবে তাঁকে। কেমন ছিল জার্নি? ব্ল্যাক কফিতে চুমুক দিয়ে বলতে শুরু করলেন অভিনেতা।
আপনিই তো ‘ব্যোমকেশ গোত্র’র ‘সত্যকাম’?
হুম…।
‘সত্যকাম’-এর মধ্যে কতটা সত্য, আর কতটা কাম?
হা হা…। দুটোই। সত্য, কাম দুটো মিলেই মানুষটা। ওর এমন হওয়ার পিছনে যে ব্যাকস্টোরি সেটাও ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে। ও যে জন্মের পর থেকেই মহিলাদের সঙ্গে থাকতে ভালবাসত এমন তো নয়। আস্তে আস্তে ওই জায়গায় গিয়েছে…। কামুক চরিত্র বটে, তবে কথাবার্তায় সত্য নেই, সেটাই বা বলি কী করে?
খুব অন্যরকম চরিত্র…
সত্যিই অন্যরকম, আগে এমন কিছু করিনি। এত অন্যরকম চরিত্রে যে অরিন্দমদা ভেবেছেন, সেটাই বড় পাওয়া।
আর তো ক’টা দিন বাকি রিলিজের। টেনশন হচ্ছে?
টেনশন নয়। টিজার বা ট্রেলার দেখে মিক্সড রিঅ্যাকশন এসছে তো…। এমনও শোনা গিয়েছে, অর্জুনকে নেওয়ার কী দরকার ছিল? অমুক অমুক অমুক বেটার করতে পারত। হয়তো ঠিক। তবে আমি আমার মতো করে করেছি। অন্য কেউ তার মতো করে করত। ডিরেক্টর মনে করছেন, আমাকে নিয়ে ভুল করেননি। ব্যস, আমার কাজ শেষ।
আরও পড়ুন, এত ছোট্ট জায়গা, কে কী বলছেন জানি তো, বিস্ফোরক অরিন্দম
যেহেতু অন্যরকম চরিত্র, প্রিপারেশন করেছিলেন আলাদা করে?
‘সত্যকাম’ গ্রে ক্যারেক্টার। তবে যে কোনও চরিত্রেই প্রিপারেশন নিয়ে আমি বেশি ভাবি না। বেশি ভাবলে ঘেঁটে যায়। স্ক্রিপ্ট তো আছেই। সেখানে যা লেখা হয়েছে, ভেবেচিন্তেই লেখা হয়েছে। ডিরেক্টরের গাইডেন্স ফ্লোরে পেয়েছি। ডিরেক্টর যেটা চেয়েছেন সেটা একজিকিউট করার চেষ্টা করেছি। ডিরেক্টর আমার থেকে অনেক বেশি বার স্ক্রিপ্ট নিয়ে দিন রাত কাটিয়েছেন। সেখানে বেশি ওস্তাদি না করলেই ভাল। কাজটা করে ভাল লেগেছে। কিন্তু জানি যখন ফাইনাল প্রডাক্ট দেখব তখন মনে হবে আরও ভাল হতে পারত। সেটা সব সময়েই হয়।
এমন ফ্ল্যামবয়িশ চরিত্রে আপনাকে দেখে বাড়ির লোকের কী রিঅ্যাকশন?
বাড়িতে আমি যেটাই করি, সবাই খুব অ্যাপ্রিসিয়েট করে। দাদা তো এখনই বলছে, আমি জানি তুই ফাটিয়ে দিয়েছিস। আমি বললাম, এরকম বললে হয় না। আসলে ক্রিটিসিজম বাড়িতে কেউ করে না। সেটা মুশকিলের। বাবা, মা বা বউ হয়তো ভাবে আমি কিছু ভুল করলে নিজেই সেটা বুঝব।
ছবির দৃশ্যে অর্জুন এবং প্রিয়ঙ্কা।
এই যে অনস্ক্রিন এত মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে আপনাকে দেখা যাবে, বউ কী বলছে?
(হাসি) বউ সবটাই জানে। যতটুকু দেখেছে ও অ্যাপ্রিসিয়েট করেছে। আর লোকে যেটা ভাবে, সে ধরনের প্রবলেম কখনও হয়নি। হবেও না। কিন্তু অভিনয় নিয়ে ওর কাছে জানতে চাইলেই বলে, তোমার কাজটা তুমি ভাল বুঝবে। সেটা ঠিক নয়।
আচ্ছা, বাড়িতে কেউ সমালোচনা করেন না। ইন্ডাস্ট্রির কারও সমালোচনাকে গুরুত্ব দেন?
এই সংখ্যাটা খুব কম। যেমন, বুম্বা মামু (প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়) কথা শুনি। ওর জন্যই তো অভিনয় করছি। হঠাত্ করে ‘গানের ওপারে’তে অভিনয় করতে ডেকেছিলেন। তার পর রানাদা, সুদেষ্ণাদি বা জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। যারা আমাকে অভিনেতা হিসেবে গ্রো করতে দেখেছে, তারা বললে ভাল লাগে। তারা জানে আমার কোথায় কোথায় ইমপ্রুভ করার দরকার। কিন্তু সবার ক্রিটিসিজম সিরিয়াসলি নেওয়াটাও আবার কাজের কথা নয়।
আর কী কী কাজ চলছে আপনার?
কিছু চলছে না। কোনও কাজ নেই এখন। অঞ্জন দত্তর ‘ফাইনালি ভালবাসা’ করলাম। আর ব্যোমকেশ রিলিজের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি রিলিজের পরে ভাল কিছু অফার আসবে।
আরও পড়ুন, দেব কি ভাল বাংলা বলেন? উত্তরে সহ-অভিনেতা অর্ণ বললেন...
অর্থাত্ অফার নেই কাজের?
(সামান্য পজ) দেখুন, আগের তুলনায় এখন একটু বেছে কাজ করছি। কারণ দেড় বছর ধরে একটা সিরিয়াল শেষ করলাম। সত্যি বলতে, খুব ভাল ছবি আসছিল এমন নয়। আর মেগাতে তো একটা ডেলি খাটনি যায়। সেটার পর একটা গ্যাপ নিতে চেয়েছিলাম। তার পর মেয়ে হল। ওকে একেবারে সময় দিতে পারিনি। এখন দিচ্ছি। সাত মাস বয়স হল ওর।
মেগারও অফার নেই?
মেগার অফার আছে। কিন্তু এখনই করতে চাইছি না। এখন একটু ছবি করতে চাই। ছবির অফার নেই। হয়তো সেই সিনারিওটা পাল্টাবে ব্যোমকেশ রিলিজের পর।
এই ধরনের কাজ না থাকা ফেজ কেরিয়ারে আগেও গিয়েছে?
হ্যাঁ, তা গিয়েছে।
কোনও সম্পর্কে বাঁধা পরে না সত্যকাম, সম্পর্কের মূল্য খুবই আপেক্ষিক তার কাছে। ছবির দৃশ্যে সৌরসেনী এবং অর্জুন।
ইনসিকিওর্ড মনে হয়নি বা ডিপ্রেসড হননি?
ইনসিকিওর্ড…নট রিয়েলি। লো ফেজ গিয়েছে যখন, দাদা বুঝিয়েছে। অন্যরাও বুঝিয়েছে। এমন হয়। তবে ডিপ্রেশন হয়নি। কারণ আমার ফ্যামিলি, হাতে গোনা কয়েকজন বন্ধু আছে যারা আগলে রাখে সব সময়। ফলে ডিপ্রেশন হয়নি। হবেও না।
আপনাদের জেনারেশন কি কম সুযোগ পাচ্ছে?
আমার মনে হয়, নতুনদের সুযোগ দিয়ে দেখা উচিত। কোথাও গিয়ে ডিরেক্টর বা প্রোডিউসারদের রিস্ক নিতে হবে। আর আমরা তো কিছু না কিছু কাজ করেছি। সেই পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে দেখতে গেলে আমাদের জেনারেশনকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। আস্তে আস্তে হয়তো আমাদের নিয়ে আর একটু ভাবনাচিন্তা হবে।
আরও পড়ুন, ‘সেক্স সিন বিদেশে হলে অসাধারণ, আর আমরা করলে খারাপ!’
নিজের সম্পর্কে কখনও গসিপ শুনেছেন?
(হাসি) অনেক রকম গসিপ শুনেছি। লোকে অনেক কিছু রটায়।
যেমন?
অনেকে মনে করেন, নাম করলেই সে সব লোকেদের সম্পর্কে যা খুশি বলা যায়। কিন্তু এগুলো আমার খুব বিরক্ত লাগে। যারা গসিপ করে তাদের আমার অসহ্য লাগে। যেগুলো শুনেছি সেগুলো অ্যাবসোলিউ ননসেন্স। কে কার বাড়িতে কী করছে, কে কার সঙ্গে কফি খেতে গেল এগুলো নিয়ে আলোচনা করতে লোকে ভালবাসে। কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব হলেও লোকে অন্য রকম রটাতে ভালবাসে।
ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার বন্ধু কে?
আমার আর দাদার ফ্রেন্ড সার্কেলটা এক। ‘গানের ওপারে’ থেকেই বন্ধুত্ব। ইন্দ্রাশিস, অনিন্দিতা, গৌরব, সৌরভ…। তবে ইন্ডাস্ট্রিতে বেশি বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করি না আমি। সেটা হার্মফুল হয়েছে আমার জীবনে। আমার পার্সোনাল লাইফ, আমার কাজ নিয়ে আমি খুশি।
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)