এ যেন প্রবাসে বাংলা নাট্যচর্চায় এক নতুন পালক। এডিনবরা আর্ট ফেস্টিভ্যাল (এডফ্রিঞ্জ) এই প্রথম কোনও প্রবাসী বাংলা নাট্যদলকে আমন্ত্রণ করল উৎসবে। সেই ডাকেই সাড়া দিয়ে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত নাট্যদল ‘ইস্টার্ন থেস্পিয়ান্স’ ২৮-৩১ অগস্ট মঞ্চস্থ করবে তাদের তৃতীয় বাংলা নাটক ‘উত্তরাধিকার’। বাংলা না জানা দর্শকদের জন্য সাবটাইটলের ব্যবস্থাও থাকছে নাটকে।
লন্ডনবাসী চিকিৎসক, ব্যারিস্টার এবং আইটি পেশায় যুক্ত এক ঝাঁক নাট্যপ্রেমী মিলে ২০১২ সালে তৈরি করে ফেলেন ‘ইস্টার্ন থেস্পিয়ান্স’। ইতিমধ্যেই এই দলের নতুন দু’টি নাটক ‘অর্থ’ ও ‘মূক’ লন্ডনের বিভিন্ন মঞ্চে বেশ কয়েকবার অভিনীত হয়েছে। দর্শকদের কাছে প্রশংসিতও হয়েছে। এর পর এই আমন্ত্রণ পেশার ফাঁকে সংস্কৃতি চর্চায় উৎসাহিত করছে দলের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের।
এডফ্রিঞ্জের ইতিহাস বলছে, এ বারে ৬৮ বছরে পা দিচ্ছে এই আন্তর্জাতিক আর্ট ফেস্টিভ্যাল। এত বছরে এই প্রথম উৎসবের মঞ্চে কোনও পূর্ণাঙ্গ বাংলা নাটক পরিবেশিত হতে চলেছে। ‘ইস্টার্ন থেস্পিয়ান্স’-এর হাত ধরে আসা সেই সাফল্যে উদ্দীপিত নাট্যকর্মীরা। বিদেশের দর্শকদের কাছে উচ্চমানের বাংলা নাটক পরিবেশন করাই ছিল দলের উদ্দেশ্য। এশিয়ান স্ল্যাপ স্ট্রিক কমেডি, যা পাশ্চাত্যের দর্শক দেখতে অভ্যস্ত তার থেকে খানিকটা আলাদা এদের নাটক।
‘উত্তরাধিকার’ গল্পের পটভূমি গোয়া। কয়েক প্রজন্ম ধরে সেখানে বসবাস করা এক পর্তুগিজ পরিবারের ভাঙনের গল্প এটি। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে গোয়ার উপরে পর্তুগিজ সরকারের কর্তৃত্ব শিথিল হয়ে যায়। ডি কুনহা পরিবারের প্রতিটি সদস্য অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়েন। পর্তুগিজ, গোয়ান না ভারতীয়.... কী তাঁদের প্রকৃত উত্তরাধিকার! প্রবাসীদের কাছেও প্রাসঙ্গিক এই সঙ্কট।
‘ইস্টার্ন থেস্পিয়ান্স’-এর তিনটি নাটকেরই লেখক ও নির্দেশক চিকিৎসক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। চান্দ্রেয়ী সেনগুপ্ত, শিব্লু চৌধুরী, সম্রাট সেনগুপ্ত, সুচিরা রায়, ও চন্দন রয়েছেন বিভিন্ন চরিত্রে। অডিও-ভিস্যুয়াল সামলাবেন অর্জুন সেন ও ওয়াসিম জাভেদ। সাবটাইটেলের দায়িত্ব থাকছে নীলাঞ্জনা রায়ের উপরে। মঞ্চের পিছনে অদ্রিকা সেন ও মৌমিতা পালের সহযোগিতা নিয়ে এডিনবরা আর্ট ফেস্টিভ্যালে নতুন এই উপহার দর্শকদের সামনে তুলে ধরার অপেক্ষায় শিল্পীরা।