কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে উজান মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
সম্পর্ক ও কেরিয়ার নিয়ে বর্তমান প্রজন্মের লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে গান, ‘ক্যালানে যে হতে নেই’। কণ্ঠ দিয়েছেন এবং গানের কথা লিখেছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কন্যা উজান মুখোপাধ্যায়। প্রযোজনায় অশোক রায়। প্রস্তুতির ফাঁকে স্বজনপোষণ, সমাজমাধ্যমে শিল্পীদের উপস্থিতি বা শিল্পীদের হারিয়ে যাওয়া নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বললেন উজান।
প্রশ্ন: ইউটিউবের দৌলতে যে কেউ এখন ‘গায়ক’-এর পরিচিতি পাচ্ছেন। বিষয়টাকে কী ভাবে দেখেন?
উজান: যাঁরা ইতিবাচক দিক থেকে ব্যবহার করছেন সমাজমাধ্যমকে, তাঁদের আমি সমর্থন করি। কিন্তু, অনেকেরই সেই তালিম নেই। একটু তো রেওয়াজ করতেই হবে সে ক্ষেত্রে। অনেকে পেশাগত ভাবে গান গাইছেন সমাজমাধ্যমে। কেউ গাইছেন নিছক ভাল লাগার কারণে।
প্রশ্ন: যে সব শিল্পী সমাজমাধ্যমে সক্রিয় নন, তাঁরা কি অন্তরালে থেকে যাচ্ছেন?
উজান: ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, যাঁরা বছরের পর বছর সাধনা করে যাচ্ছেন, তাঁরা কোনও দিনই হারিয়ে যেতে পারেন না। তবে এটা ঠিক কথা, অনেকেই স্বল্প সময়ে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে যাচ্ছেন তাঁদের তুলনায়।
প্রশ্ন: কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক মতাদর্শ স্পষ্ট। ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁরা এই মতাদর্শ সমর্থন করেন না, তাঁদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ কমে যাবে?
উজান: ইন্ডাস্ট্রিতে আমার বেশি দিন হয়নি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যতটুকু কাজ করেছি, এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হইনি। হ্যাঁ, বাবার রাজনৈতিক মতাদর্শ খুব স্পষ্ট। বিভিন্ন জায়গায় বাবা বক্তব্য রাখেন। তবে বাবা এমন কলাকুশলীদের সঙ্গেও কাজ করেছেন, যাঁরা বাবার রাজনৈতিক মতাদর্শ সমর্থন করেন না। কাজের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি গুরুত্ব পায় না। আমার গান ভাল লাগলে আমাকে ডাকবে, না হলে ডাকবে না। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিষয় প্রভাব ফেলতে পারবে না।
প্রশ্ন: বাবা খ্যাতনামী হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার লড়াই খানিকটা লাঘব হবে?
উজান: সেটা আমি কখনও অস্বীকার করব না। বাবা খ্যাতনামী হওয়ার সুবিধা তো রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে আলাপ হয়েছে সকলের সঙ্গে। ব্যাকগ্রাউন্ডে কেউ না থাকলে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি তৈরি করতে তাঁর দু-এক বছর সময় লেগে যায়। আমার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। কিন্তু এমন উদাহরণও আছে, মা-বাবার পরিচিতি থাকা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েরা নিজেদের জায়গা তৈরি করতে পারেননি। সুতরাং কাজটা ভাল করে করতেই হবে।
প্রশ্ন: নতুন কাজের পরিকল্পনা?
উজান: প্লে-ব্যাক রয়েছে। পাশাপাশি, সমাজমাধ্যমের জন্য কিছু স্বতন্ত্র কাজ রয়েছে। সমাজমাধ্যম ছাড়া তো আজকাল কিছুই করা যায় না! কেউ চিনবেই না। আগামী পাঁচ বছরে নিজের প্রোফাইল তৈরি করাটাই প্রধান কাজ। ভাল কাজ করতে পারলে বড় শিল্পীদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পাব। তাই গানের মাধ্যমেই পৌঁছে যেতে চাই সকলের কাছে। তা ছাড়া, বাইরে আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান থাকে। গত বছর পুজোয় ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠান ছিল। আশা করি, এই বছরও এ ধরনের অনুষ্ঠান থাকবে।