‘মেন্টাল’ ছবিতে যশ দাশগুপ্ত এবং নুসরত জাহানের লুক। ছবি: সংগৃহীত।
প্রযোজনা সংস্থার ঘোষণা করেই টলিপাড়ায় শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন যশ দাশগুপ্ত এবং নুসরত জাহান। তাঁদের প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘মেন্টাল’-এ মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন যুগলে। ছবির শুটিং শেষ। মঙ্গলবার ছবির প্রথম পোস্টারও প্রকাশ্যে এল। এই ছবি নিয়ে তাঁরা কতটা আশাবাদী? আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে মনের কথা উজাড় করলেন ‘যশরত’।
বড়দিনের আগের দিন রাতে টলিপাড়ার এই চর্চিত যুগলকে একসঙ্গে পার্টি করতে দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে যশ তখন গাড়ির চালকের আসনে। ফোন স্পিকার মোডে রেখে বললেন, ‘‘নুসরত আমার পাশেই রয়েছে। আমরা একসঙ্গে উত্তর দেব।’’ বড়দিনে ছবির পোস্টার প্রকাশ করলেন না কেন তাঁরা? নুসরতের সহজ উত্তর, ‘‘সাধারণত বড়দিনের রেশ কাটতে একটু সময় লাগে। তাই ভিড়ের মধ্যে আমরা পোস্টার প্রকাশ করতে চাইনি। তাই একটু ঝুঁকি নিয়ে মঙ্গলবার প্রকাশ করলাম।’’ সকাল থেকে এই পোস্টার নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় উচ্ছ্বসিত যশ। বললেন, ‘‘বুঝতে পারছিলাম দর্শক অপেক্ষা করছিলেন। পোস্টার প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই অসংখ্য শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছি। খুব ভাল লাগছে।’’
প্রথম প্রযোজনা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে প্রতি মুহূর্তেই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন যশ এবং নুসরত। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘অন্য কারও ছবিতে অভিনয় করার তুলনায় নিজেদের প্রযোজিত ছবিতে চাপ এবং দায়িত্ব বহু গুণ বেড়ে যায়। কিন্তু এই চাপটা নিতে ভাল লাগে।’’ এরই সঙ্গে যশ যোগ করলেন, ‘‘কেউ বিশ্বাস করবে কি না জানি না, আমরা এই ছবিটা নিয়ে এখন প্রায় সারা দিন কাজ করছি। সেই সঙ্গে নতুন নতুন জিনিসও শিখছি।’’
যশ এবং নুসরত দু’জনেই বাংলা বাণিজ্যিক ছবি থেকে উঠে এসেছেন। কিন্তু আজকে সেই ছবিই ইন্ডাস্ট্রিতে কোণঠাসা। ‘মেন্টাল’-এর মাধ্যমে পুরনো বাণিজ্যিই ছবির স্বাদকেই নতুন মোড়কে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন যুগল। স্মৃতিমেদুর নুসরত বললেন, ‘‘বাণিজ্যিক ছবি এক সময় রমরমিয়ে চলেছে। আমার বিশ্বাস আজকেও অগণিত দর্শক সে রকম ছবির অপেক্ষায় রয়েছেন। তাঁদের আবার বাণিজ্যিক ছবির পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করতে চাই।’’ এরই সঙ্গে নুসরত বর্তমান সমাজমাধ্যমের নতুন ‘ট্রেন্ড’ নিয়েও কিছুটা হতাশা প্রকাশ করলেন। স্পষ্ট বললেন, ‘‘এখন দেখি আগে থেকেই সমাজমাধ্যমে নানা কথা লিখে দেওয়া হচ্ছে। কোনটা রিমেক, কোনটা বাজে ছবি! এর ফলে দর্শক বিভ্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু তাঁদেরকেও ধন্যবাদ। কারণ, এই সব কিছু দেখেই কিন্তু আমরা ভাল বাণিজ্যিক ছবিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছি।’’
এই ছবিতে যে যশকে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে দেখকা যাবে তা আগেই জানা গিয়েছিল। ছবির পোস্টারে তাঁর নতুন অবতার ধরা পড়ল। গায়ে উর্দি, দাড়ি কামানো গাল। কপালে রক্তের দাগ, হাতে পিস্তল। অনুমান করা যায়, চরিত্রটির ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ দিকটি। লেদার জ্যাকেট এবং টাউজার্সে নুসরতের লুকটিও যেন বাণিজ্যিক ছবির স্মৃতিমেদুরতা ফিরিয়ে দিয়েছে। নিজের প্রথম প্রযোজনা নিয়ে ইতিমধ্যেই টেনশনে রয়েছেন যশ। হেসে বললেন, ‘‘প্রযোজক হিসাবে প্রথম কাজ। তাই কোনও রকম ফাঁক রাখতে চাই না। আমি যে কতটা নার্ভাস, সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’’ ছবি নিয়ে প্রতি দিন যে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন, দু’জনে এক জোট হয়ে তার সমাধানও করছেন যুগল। নতুন বছর কি তা হলে কাজের ব্যস্ততায় শহরেই কাটবে? যশ বললেন, ‘‘সাধারণত নিউ ইয়ারে শহরের বাইরে কোথাও চলে যাই। কিন্তু এ বার সেটা হবে না। তাই এ বারে নতুন বছরটা আমাদের দু’জনের কাজের মধ্যেই কাটবে।’’ বিষয়টাকে ইতিবাচক দিক থেকেই দেখতে চাইচেন নুসরত। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন বছরে এটা তো আমাদের নতুন পথচলা। আর সেটা যাতে ভাল হয় তাই সকলের কথা ভেবেই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।’’ তাঁদের প্রযোজনা সংস্থার অধীনে নতুন বছরে যে আরও চমক অপেক্ষা করছে, তারও ইঙ্গিত দিলেন যুগল।
পোস্টার দেখলেন দর্শক। তা হলে ছবি কবে মুক্তি পাবে? না, যশ এবং নুসরত দু’জনেই আপাতত এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। নুসরত হেসে বললেন, ‘‘আর একটু সময় যাক। ধীরে ধীরে সবটাই জানিয়ে দেব।’’