সম্পর্ক নিয়ে বলিউড চিরকালই একটু রক্ষণশীল। তাই ‘নিষিদ্ধ প্রেম এবং কাম’ নিয়ে ছবি বলিউডে খুব একটা হয় না। বেশিরভাগ বলিউডি ছবির বিষয়বস্তুই দু’জন বিবাহিত বা অবিবাহিত মানুষের প্রেম। তাঁর একটা বড় কারণ হয়তো পরকীয়ার মতো দর্শকরা গ্রহণ করবেন কিনা। এই জন্যই ‘গেহরাইয়াঁই’-র ঝলক দেখে দর্শক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ‘গেহরাইয়াঁ’ ছবিতে একাধিক ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন এবং সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী। তবে ‘গেহরাইয়াঁ’-ই প্রথম নয় বলিউডে নিষিদ্ধ প্রেম এবং সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে আগেও ছবি হয়েছে। রইল এমনই পাঁচ ছবির কথা।
এই তালিকায় প্রথমেই আসে ১৯৬৫ সালের বিজয় আনন্দ পরিচালিত ছবি ‘গাইড’। গাইডের প্রধান চরিত্রে ছিলেন দেব আনন্দ এবং ওয়াহিদা রহমান। স্বামীকে এড়িয়ে দেব আনন্দের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত প্রেমে জড়ান ছবির নায়িকা। ছবিটি সেই সময়ে সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতে নেয়।
১৯৮১ সালে মুক্তি পায় যশ চোপড়ার অন্যতম সেরা ছবি ‘সিলসিলা’। এই ছবিতে অভিনয় করেন অমিতাভ বচ্চন, রেখা, জয়া বচ্চন, শশী কপূর প্রমুখ অভিনেতারা। ‘সিলসিলা’ সেই সময়র সাপেক্ষে যথেষ্ট সাহসী ছবি, বক্স অফিসে তেমন সাফল্যও পায়নি।
‘সিলসিলা’ ছবিতে দেখানো হয় জয়া বচ্চনের সঙ্গে বিয়ের সাত বছরে পরেও অমিতাভ এবং রেখার বিবাহবহির্ভূত প্রেম। সেই সময় এই ছবি যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি করে। যদিও এই ছবিতে জয়া বচ্চন এবং রেখার পরিবর্তে স্মিতা পাটিল এবং পরভীন ববিকে নেওয়ার কথা ছিল, পরে অমিতাভের সঙ্গে আলোচনা করে যশ চোপড়া সিদ্ধান্ত বদলান।
বিবাহবহির্ভূত প্রেম নিয়ে এর পরই আসে মহেশ ভট্টের ‘অর্থ’ ছবির নাম। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন কুলভূষণ খরবন্দা এবং শাবানা আজমি। অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন স্মিতা পাটিল এবং রাজ কিরণ।
অনেকেই দাবি করেন ‘অর্থ’ ছবির কাহিনি কিছুটা মহেশ ভট্টের ব্যক্তিগত জীবন থেকে অনুপ্রাণিত। তাঁর এবং পরভীন ববির প্রেমকে তিনি ছবিতে কুলভূষণ খরবন্দা এবং স্মিতা পাটিলের বিবাহবহির্ভূত প্রেমের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন। ছবিতে শাবানা আজমি তাঁর স্বামী কুলভূষণের পরকীয়ার কথা জানতে পেরে তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ করে স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার জীবন বেছে নেন।
১৯৮৭ সালে ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সম্পর্ক নিয়ে গুলজার বানান ‘ইজাজ়ত’। সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে যেটি বলিউডের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ছবি। এই ছবির প্রধান চরিত্রে ছিলেন রেখা, নাসিরুদ্দিন শাহ এবং অনুরাধা পটেল। নাসিরুদ্দিন শাহ দু’জনের সঙ্গেই একই সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
সম্পর্ক নিয়ে সমকালীন ছবিগুলোর তুলনায় ‘ইজাজ়ত’ যথেষ্ট এগিয়ে ছিল। আশা ভোসলের গাওয়া ‘ইজাজ়ত’ ছবির ‘মেরা কুছ সামান’ গানটি আজও জনপ্রিয়। এই গানের জন্য গুলজার সেরা গীতিকার এবং আশা ভোসলে সেরা মহিলা গায়িকা বিভাগে জাতীয় পুরস্কার জিতে নেন।
এর পর ২০০০ সালে মুক্তি পায় টাবু অভিনীত ও মহেশ মঞ্জরেকর পরিচালিত হিন্দি-মরাঠি ছবি ‘অস্তিত্ব’। এই ছবির মূল বিষয়বস্তু বিবাহবহির্ভূত প্রেম, বধূ নির্যাতন এবং পুরুষতন্ত্র।
‘অস্তিত্ব’ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র অদিতি (টাবু) এবং শ্রীকান্তের বৈবাহিক সম্পর্ক সুখের ছিল না। এই ছবিতে দেখানো হয় অদিতি এবং তাঁর সঙ্গীত শিক্ষকের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক। যার যেরে অদিতি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সেই সময়ের বিচারে এই ছবি অনেকটাই এগিয়ে ছিল। ‘অস্তিত্ব’ সেরা মারাঠি ছবির বিভাগে জাতীয় পুরস্কারও পায়।