বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত।
তিনি বাংলাদেশি অভিনেত্রী। এ পার বাংলায় ইতিমধ্যেই সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসনেনি’ ওয়েব সিরিজ়ে তাঁকে দেখেছেন দর্শক। এ বার বলিউডের ছবিতে আজমেরী হক বাঁধনকে দেখবেন দর্শক। সোমবার প্রকাশ্যে এল বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ‘খুফিয়া’ ছবিটির ট্রেলার। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর প্রেক্ষাপটে তৈরি এই থ্রিলারে রয়েছেন তব্বু, আলি ফজ়ল, ওয়ামিকা গাব্বির মতো তারকারা। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেও বাঁধনও। ঢাকা থেকে তাঁর প্রথম ভারতীয় হিন্দি কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী।
২০২১ সালে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবিটির প্রদর্শন উপলক্ষে কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলেন বাঁধন। সেখানে অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। অভিনেত্রী জানালেন, সমাজমাধ্যমে সেই ছবি দেখে বিশাল ভরদ্বাজের কাস্টিং ডিরেক্টর অনুরাগের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বাঁধন বললেন, ‘‘সত্যি বলতে আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি। ভেবেছিলাম অন্য কেউ। মনে হয়েছিল, ওঁরা আমাকে কেন চাইছেন!’’ কথা প্রসঙ্গেই জানালেন, বাংলাদেশের একাধিক অভিনেত্রীর সঙ্গে পরিচালকের টিম থেকে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু বিশাল নাকি তাঁকেই পছন্দ করেছিলেন।
আজমেরী হক বাঁধন-তব্বু। ছবি:সংগৃহীত।
২০২১ সালে অডিশনে নির্বাচিত হওয়ার পর ছবির শুটিং শুরু হয় দিল্লিতে। পরের বছর বাকি অংশের শুটিং হয় মুম্বইয়ে। বাঁধন বললেন, ‘‘অডিশনে যে দিন নির্বাচিত হলাম, তার পরের দিন বিশাল ভরদ্বাজের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে আমার প্রথম আলাপ।’’
ছবিতে তাঁর চরিত্রটি নিয়ে এখনই খুব বেশি তথ্য দিতে চাইলেন না অভিনেত্রী। তবে বললেন, ‘‘আমার চরিত্রটি বাংলাদেশি। খুবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।’’ এরই সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘ওঁরা যে বাংলাদেশি চরিত্রের জন্য বাংলাদেশি অভিনেত্রীকে ভেবেছেন, এই বিষয়টা আমার খুব ভাল লেগেছিল।’’ সোমবার সকালে ছবির ট্রেলার প্রকাশ্যে আসার পর ঢালিউড থেকে কী রকম প্রতিক্রিয়া পেলেন তিনি? বাঁধন জানালেন, শুরু থেকেই তাঁর এই কাজ নিয়ে ঢালিউডে উৎসাহ লক্ষ্য করেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণত আমরা যৌথ প্রযোজনায় কাজ করি। এটা নেটফ্লিক্সের কাজ। সেখানে আমি আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। তাই দায়িত্বও বেশি ছিল।’’
এই ছবিতে বলিউডের চর্চিত একাধিক অভিনেতা রয়েছেন। সেখানে তব্বুর সঙ্গেই বেশির ভাগ দৃশ্য ছিল বাঁধনের। বললেন, ‘‘আমাদের দেশে ওঁর প্রচুর অনুরাগী। প্রথম দিন শট দিতে গিয়ে রীতিমতো আমার পা কাঁপছিল। কিন্তু ওঁর সঙ্গে অভিনয় করে আমি ওঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছি।’’ কথাপ্রসঙ্গেই বাঁধন জানালেন বিশালের কথা। বললেন, ‘‘ওঁকে দেখে রাশভারী মনে হলেও, শুরুতেই উনি একটা কমফোর্ট জ়োন তৈরি করে দিয়েছিলেন। ইউনিটের সবাইকে বলেছিলেন আমি তাঁদের অতিথি। তাই যেন আলাদা ভাবে খেয়াল রাখা হয়।’’
তব্বুর সঙ্গে ক্যামেরার বাইরেও বেশ কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন বাঁধন। অভিনেত্রী জানালেন, হোটেলে তব্বুর ঘরেই তাঁরা শটের রিহার্সাল করতেন। সেটে তব্বু নিয়মিত খাবার নিয়ে আসতেন। বাঁধনের কথায়, ‘‘এক দিন ওঁর তৈরি ডেজ়ার্ট ভাল লেগেছিল বলে আমার জন্য পরে আলাদা করে আমার মেকআপ ভ্যানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।’’ এখানেই শেষ নয়, বাঁধন জানালেন, বাংলাদেশের ছবি নিয়েও তব্বু তাঁর সঙ্গে একাধিক বার শটের ফাঁকে আলোচনা করতেন। বাঁধন বললেন, ‘‘আমি ওঁর জন্য একটা জামদানি শাড়ি নিয়ে গিয়েছিলাম। পরে তিনি আবার আমাকে একটা সুন্দর কুর্তি উপহার দিয়েছিলেন। ওঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো আজীবন মনে থাকবে।’’
টলিপাড়ার পরে বলিউডের ছবিতেও কাজ করে ফেললেন বাঁধন। টলিউডে তাঁকে আর দেখা যাচ্ছে না কেন? বাঁধন বললেন, ‘‘প্রথমত, নারীপ্রধান গল্প আমাকে একটু বেশি আকর্ষণ করে। মাঝে কয়েকটি প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু কোনও কারণে সেগুলো আর বাস্তবায়িত হয়নি।’’ তবে ভবিষ্যতে গল্প এবং চরিত্র পছন্দ হলে টলিউডে তিনি আবার কাজ করবেন বলে জানালেন বাঁধন।