এই অভিযোগের বিষয়ে কী বলেছেন জায়েদ খান?
বাংলাদেশের বিতর্কিত অভিনেতা জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ফের গুরুতর অভিযোগ। এ বার শোনা যাচ্ছে, শ্যুটিংয়ের নাম করে বছর ছয়েক হল এক পরিবারের জমি, বাড়ি ও ক্লিনিক দখল করে রেখেছেন তিনি! প্রতিবাদ করলে মিলছে মারধর, খুনের হুমকি। এমনই অভিযোগে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করেছেন বাড়ির মালিক গীতারানি মজুমদার, তাঁর মেয়ে অনন্যা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।
অভিযোগ, একটি ছবির শুটিংয়ের নাম করে পিরোজপুর সদরে গীতারানিদের জমি ও ৪০ শয্যার একটি ক্লিনিক দখল করেন জায়েদ খান। জায়েদ খানের ভাই ওবায়দুল হক পিন্টু ও শহীদুল হক মিন্টুও নাকি এই ঘটনায় জড়িত।
বাংলাদেশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, একটি বিজ্ঞপ্তিতে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন অভিযোগকারিণী গীতারানি মজুমদার। সেই তথ্য অনুযায়ী, হামলা হয় গত ২০১৬ সালের ২১ মার্চ, রাত দুটো নাগাদ। তাঁদের ক্লিনিকটি পাঁচতলা। পঞ্চম তলায় গীতারানিরা থাকতেন। অভিযোগ, সেই রাতে জায়েদ খান দলবল নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালান গীতারানি ও তাঁর পরিবারের ওপর। মারধর করে টাকাপয়সা ও ক্লিনিকের অ্যাম্বুল্যান্স লুঠ করে নিয়ে যান তাঁরা। এমনকি, গীতারানির স্বামীকে বেদম মারধরের পর ঝিনাইদহে রেললাইনে ফেলে রেখে যাওয়া হয়। আরও অভিযোগ, ওই বছরের ২৬ মার্চ এই নিয়ে এজাহার দায়ের করার পর থেকে জায়েদ খান গীতারানি ও তাঁর পরিবারকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। গায়ের জোরে পাঁচতলা বাড়িটির বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় বর্তমানে গীতারানিরা ওই বাড়িতে থাকতে পারছেন না।
২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আর্জি জানানো হয়। হাইকোর্ট আক্রান্ত পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। গীতারানিরা বর্তমানে ঢাকায় থাকেন। তাঁদের অভিযোগ, পিরোজপুরের বাড়ির সব কিছু জায়েদ খান ও তাঁর দলবল লুঠ করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে ৬ জুন ২০১৮ সালে মামলা করা হয়েছে। যা এখনও বিচারাধীন।
তাঁর বিরুদ্ধে মারাত্মক এই অভিযোগের বিষয়ে কী বলেছেন জায়েদ খান? বাংলাদেশ সংবাদমাধ্যমকে এক ভিডিয়ো বার্তায় জায়েদ জানিয়েছেন, “যে বিষয়টা আজ দেখলাম, তা খুবই দুঃখজনক ও হাস্যকর। যারা নির্বাচনে আমাকে হারানোর জন্য হত্যা মামলার আসামি করতে চেয়েছিল, তারাই আজ প্রেস ক্লাবে এ সব করিয়েছে। ওই পরিবারকে টাকা দিয়ে পিরোজপুর থেকে এনে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। ...ওই ক্লিনিক বা জমি কোনও কিছুর সঙ্গেই আমার সম্পর্ক নেই। আমার আপন মেজো ভাই ওই ক্লিনিকের অর্ধেকের মালিক। বাকি অর্ধেক কেনার জন্য ওই পরিবারকে টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা জমি রেজিস্ট্রি না করে দিয়ে আমাদের ঘোরাচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি মামলা আদালতে চলছে। ওই জমির মালিকানা নিয়ে আমার ভাই ও তাদের নিজস্ব সমস্যা এটি। এর সঙ্গে আমার কিছুই জড়িত নেই।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আগে অভিনেত্রী সাদিকা পারভীন পপি জায়েদ খানের অত্যাচার নিয়ে সরব হন। অভিনেত্রী শিমু খুন হওয়ার পরেও প্রাথমিক গুঞ্জন ওঠে জায়েদকে নিয়েই। এদিকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেত্রী নিপুণ হেরে গিয়ে অভিযোগ করেছেন, টাকা এবং গায়ের জোরে জিতেছেন জায়েদ। নিপুণ-জায়েদ আইনি লড়াই চলছে।
জায়েদ খানের বিরুদ্ধে বারবার উঠে আসা নানা ধরনের অভিযোগ কি শুধুই চক্রান্ত? এই প্রশ্নের উত্তর জরুরি বলেই মনে করছেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সমাজ।