‘আদিপুরুষ’ ছবির একটি দৃশ্যে প্রভাস এবং কৃতি শ্যানন। ছবি: সংগৃহীত।
হিন্দি ছবির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল নেপালের এক আদালত। সেই তালিকায় রয়েছে প্রভাস-অভিনীত ‘আদিপুরুষ’ও। আদালতের নির্দেশ, দেশের সেন্সর বোর্ড অনুমোদিত কোনও সিনেমার প্রদর্শন বন্ধ করা যাবে না।
গত ১৬ জুন মুক্তি পাওয়া ‘আদিপুরুষ’ নিয়ে সমস্যা একটি নয়। নানা বিষয় নিয়ে বহু দিন ধরেই বিতর্ক জারি রয়েছে। তবে নেপালে ‘আদিপুরুষ’ নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত ছবির এক সংলাপকে কেন্দ্র করে। কৃতি শ্যাননের মুখে একটি সংলাপ রয়েছে, ‘‘জানকী যে ভারতের মেয়ে।’’ এতেই নাকি আপত্তি জানিয়েছিলেন নেপালের জনগণ। কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহের দাবি, ছবির ওই সংলাপ পরিবর্তন করতে হবে। নয়তো নেপালে ওই হিন্দি ছবি দেখানোর অনুমতি মিলবে না। এটিই নেপালে সমস্ত হিন্দি চলচ্চিত্রের উপর নিষেধাজ্ঞার কারণ হয়েছিল।
যদিও পটন হাইকোর্টের বিচারক ধীর বাহাদুর চাঁদ একটি স্বল্পমেয়াদি আদেশ জারি করে বলেছেন যে, সেন্সর বোর্ডের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া ছবির প্রদর্শন বন্ধ করা উচিত নয়। নেপাল মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভাস্কর ধুঙ্গানা বলেন, “এখন আমরা সেন্সর বোর্ডের পাস করানো সব সিনেমা প্রদর্শন করব।”
এই পরিস্থিতিতেও সুর বদলালেন না মেয়র শাহ। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, যে কোনও শাস্তির মুখোমুখি হতে প্রস্তুত আছেন। তবে ‘আদিপুরুষ’ প্রদর্শনের অনুমতি দেবেন না। কারণ বিষয়টি “নেপালের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতা” সম্পর্কিত।নেপালের জনগণের মতে, রাময়ণ মহাকাব্য অনুযায়ী, সীতার জন্ম নেপালের জনকপুরে। ছবিতে সীতার জন্ম ভারতে বলায় গায়ে লেগেছে তাঁদের। নেপালকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসাবে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না নির্মাতারা? সেখানেই জমা হয়েছে অসন্তোষ। কাঠমান্ডুর মেয়রের দাবি, সীতার জন্মস্থান নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তা অবিলম্বে দূর করতে হবে।
মুক্তির দিন এ ছবির প্রথম দিনের শো বাতিল করেছে নেপাল। তার পরেও প্রদর্শন নিষিদ্ধ। আদালতের নির্দেশ অমান্য করার কথা ঘোষণা করে শাহ তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “ছবির চিত্রনাট্যকার বলেছেন যে, নেপাল ভারতের অধীনে ছিল— এতে স্পষ্টতই ভারতের অসদুদ্দেশ্য দেখা যাচ্ছে। এটিকে অগ্রাহ্য করে নেপাল সরকার যদি ছবিটি প্রদর্শনের অনুমতি দেয়, তার অর্থ, নেপাল যে একসময় ভারতের অধীন ছিল তা মেনে নেওয়া। ভারতের শাসনে আদালত এবং সরকার উভয়ই তা হলে ভারতের দাস।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করার জন্য যে কোনও শাস্তি পেতে রাজি আছেন। তবু ‘আদিপুরুষ’ দেখাতে দেবেন না রাজধানীতে।
ওম রাউত পরিচালিত এই ছবির প্রথম ঝলক প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিতর্কের সূ্ত্রপাত। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার অভিযোগে ছবির বিরোধিতা করেছিলেন অনেকে। সেই জল গড়ায় বহু দূর।