অর্জুন চক্রবর্তী
২০১৬ থেকে ২০২২। ছ’বছরের বিরতি। আবার ছোট পর্দায় অর্জুন চক্রবর্তী। স্টার জলসার ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকে তিনি নাতি সূর্য-র দাপুটে দাদু। সোমবার প্রকাশ্যে এসেছে অর্জুন অভিনীত দৃশ্যের ঝলক। তাঁকে দেখে অন্দরমহল ফের বুঁদ ‘অন্তর্ধান’, ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ স্মৃতিতে। রাতারাতি ২০০টি ফোন এসেছে। প্রত্যেকে জানিয়েছেন, তাঁকে দেখে বাঙালি খুশি।
অর্জুন নিজে কতটা খুশি? জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। অর্জুনের কথায়, ‘‘অবশ্যই ভাল লাগছে। এখন সব মাধ্যম সমান জনপ্রিয়। তবে অবাক হয়েছি এত ফোন আসায়। সবাই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এতটাও আশা করিনি।’’ পিছনে ফিরে দেখলে তপন সিংহের ‘অন্তর্ধান’-এর ভয়াল খলনায়ক চরিত্রে অভিনয়ের পরেই ‘হুইলচেয়ার’-এ নায়ক তিনি। ‘অঙ্কুশ’, ‘এক দিন অচানক’-এও তিনি। কাট টু ছোট পর্দার দাদু! মেলাতে পারছেন অর্জুন?
জোরালো জবাব এল, চেহারা ভেঙে যাবে। গাল বসে যাবে। আর তিনি গাছের ডাল ধরে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে যাবেন, এই পাঠশালায় অর্জুন পড়েননি। যখন যেমন তখন সে ভাবে থাকতে জানেন। তাই সব রকম চরিত্রেই মানিয়ে নিতে পারেন। অর্জুনের মতে, ‘‘ধারাবাহিকে সূর্য ওরফে দিব্যজ্যোতি দত্তের দাদু মানেই কিন্তু টিপিক্যাল চরিত্র নয়। আভিজাত্য আছে। অর্থ, যশ, খ্যাতি, প্রতিপত্তিও আছে। কিন্তু সে সবের বড়াই করি না। রূপ নয় গুণের কদর করি। তাই সূর্যের পাশে। গলা তুলে কথা না বললেও আমার কথাই যে শেষ কথা, সেটা জানে পরিবার। এমন চরিত্রে অভিনয়ে কেন আপত্তি থাকবে?’’ তার পরেই জানিয়েছেন, তার মানে এই নয় আগামী দিনে শুধুই ‘দাদু’র চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে।
অর্জুনের প্রথম ছবি ১৯৮৩ সালে। ঝুলিতে ছবির সংখ্যা ১৩টি। তাঁর সময়ের ইন্ডাস্ট্রি আর এখনকার ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে ফারাক অনেক। কাজ করতে করতে চোখে পড়ছে সে সব? অভিনেতা অকপট, যন্ত্রের দাক্ষিণ্যে অভিনয় এখন অনেকটাই সহজ। আগের সেই পরিশ্রম এখন আর নেই। তার মানে এই নয়, অভিনয় না জেনেও এখন অভিনেতা হওয়া যায়। অর্জুনের যুক্তি, এখনও ভাল অভিনেতার মাপকাঠি ভাল অভিনয়। সেটা না থাকলে টিকে থাকা মুশকিল। প্রযুক্তির কৌশল ব্যস্ততা বাড়িয়েছে। অন্তরঙ্গতা কমিয়েছে? আগের মতোই সবাই আত্মার আত্মীয়? খুব নরম গলায় বললেন, ‘‘ব্যস্ততা বাড়লে কথা বলার সময় কমে। তার মানে আন্তরিকতায় ঘাটতি এটা ভাবা ভুল। সব কিছুই আছে নতুন মোড়কে।’’
আর রাজনীতি? যা নাকি টেলিপাড়াকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে? এত ক্ষণে সাবধানী উত্তর দিলেন অর্জুন, ‘‘আমার চোখে অনন্ত পড়েনি। সবাই জানেন, আমি কোনও রাজনীতিতেই নেই। তাই হয়তো আমার সঙ্গেও কেউ রাজনীতি করতে আসেননি বা আসেন না। খারাপ ব্যবহারও করেন না। বরং আমায় সবাই খুশিমনেই গ্রহণ করেছেন।’’