Babul Supriyo on Arijit Singh

রবীন্দ্রনাথের গানের হিন্দি সংস্করণের দু’টি গান গাইতে তিন কোটি চাইলেন অরিজিৎ: বাবুল সুপ্রিয়

“প্রতিটি গানের জন্য দেড় কোটির পারিশ্রমিক চাওয়াটা আমার কাছে খুব অনুচিত। কারণ আমরা জানি অরিজিৎ খুব সাদামাঠা ভাবেই জীবনযাপন করে”, আনন্দবাজার ডট কমকে বললেন বাবুল সুপ্রিয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ২২:০৮
Share:
Image of Arijit Singh and Babul Supriyo

অরিজিত সিংহের পারিশ্রমিক শুনে হতবাক বাবুল সুপ্রিয়। ছবি: সংগৃহীত।

মুম্বইয়ের একটি খ্যাতনামী অডিয়ো সংস্থার বিশেষ উদ্যোগ, হিন্দিতে অনুবাদ করা হচ্ছে ৬টি রবীন্দ্রসঙ্গীত। এই কাজের জন্য মায়ানগরীর গানের লেখক অমিতাভ ভট্টাচার্যকে গান অনুবাদের দায়িত্ব সঁপেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। রবীন্দ্রনাথের এই ৬টি গান কোথায় বা কবে কী ভাবে লেখা হয়েছিল, সেই কাহিনি বলেছেন রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। শান, বাবুল সুপ্রিয়, শ্রেয়া ঘোষাল, মধুমন্তী বাগচি গান গেয়েছেন এই নতুন হিন্দি ভাষার রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবামে। কথা ছিল অরিজিৎ সিংহ একটি একক এবং দ্বৈত গান গাইবেন এই অ্যালবামে।

Advertisement

বাঙালির শিকড়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে এমন উদ্যোগে উৎসাহী বাবুলকে সেই অডিয়ো সংস্থার তরফে অনুরোধ জানানো হয়, তিনি যেন অরিজিতের সঙ্গে গান রেকর্ডিং সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন।

এর কিছু দিন পরেই অরিজিতের সচিবের তরফে জানানো হয়, প্রতিটি গানের জন্য দেড় কোটি টাকা পারিশ্রমিক লাগবে। পারিশ্রমিকের অঙ্ক শুনে কার্যত হতবাক বাবুল। জানা গিয়েছে, বাকি সঙ্গীতশিল্পীরা ন্যায্য পারিশ্রমিকের চেয়ে অনেক কম পারিশ্রমিকে গান গেয়েছেন, হাজার হোক রবীন্দ্রনাথের গান। শিকড়ের প্রতি ভালবাসা থেকেই অন্য শিল্পীরা এই কাজে উদ্যোগী হয়েছেন। এখানে তাই গানের ব্যবসায়িক দিক নয়, বড় হয়ে উঠেছে হিন্দিতে নতুন করে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি। এই প্রসঙ্গে অরিজিতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

গানগুলি সফল হলে অডিয়ো সংস্থার তরফে শিল্পীদের রয়্যালটি দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। তা সত্ত্বেও অরিজিতের পারিশ্রমিক দেড় কোটি, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সঙ্গীতমহলে। সঙ্গীত জগতের ঘনিষ্ঠমহল থেকে ঘটনা জানতে পেরেছে আনন্দবাজার ডট কম। এর পর বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “হ্যাঁ এটা সত্যি। এটা তো কোনও বাণিজ্যিক উদ্যোগ নয়। রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতো ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই এই কাজের মূল উদ্দেশ্য। প্রতিটি গানের জন্য দেড় কোটির পারিশ্রমিক চাওয়াটা আমার কাছে খুব অনুচিত। আমি খুবই অবাক হয়েছি। আমরা নিজেরাও কম পারিশ্রমিকে কাজ করেছি। আমরা তো জানি অরিজিৎ খুব সাদামাঠা জীবনযাপন করে। আমরা তা-ই দেখেছি। সে ক্ষেত্রে এই টাকার অঙ্কের সঙ্গে অরিজিৎকে মেলাতে পারছি না। বিশেষ করে যখন গানগুলি গাওয়ার ব্যাপারে ওর সঙ্গে আমার, শুধু পারিশ্রমিক ছাড়া, আর সব ব্যাপারে ফোনে বিস্তারিত কথা হয়েছিল!”

বাবুল আরও বলেন, “এই অঙ্কের পারিশ্রমিক শুনে মুম্বইয়ের যে খ্যাতনামী অডিয়ো সংস্থা এটা রেকর্ড করছে, তার কর্ণধার অরিজিতের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি রয়্যালটি ইত্যাদিরও প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু ওকে রাজি করানো যায়নি। আমরা সকলে খুবই আশাহত। গত সপ্তাহে মুম্বই গিয়ে শ্রেয়ার দু‘টি গান, শান ও মধুমন্তীর গানগুলি ডাব করে এসেছি। সব বাঙালি গায়ক-গায়িকাকেই হিন্দি সংস্করণটিতে চেয়েছিলাম তাই অমিতাভ ভট্টাচার্যকে দিয়ে গানগুলি লেখানো হয়েছে। খুবই পরিশ্রম করেছি আমরা, যাতে রবীন্দ্রনাথের গানের হিন্দি সংস্করণ করতে গিয়ে মূল গানগুলির ভাব পরিবর্তন না হয়। জানি না, অরিজিৎ খুব সাদামাঠা ভাবেই জীবনযাপন করে বলে জানি, জঙ্গিপুরে স্কুটারে ঘোরার ছবি, ভিডিয়ো দেখি, তা হলে বাঙালি হিসাবে রবি ঠাকুরের গান গাইতে কী এমন হল সেটা ঠিক বুঝতে পারছি না। আমাদের কাছে রবীন্দ্রনাথের গান স্বাভাবিক ভাবেই শ্রদ্ধামিশ্রিত! অরিজিৎকে নিয়ে ভাবা গানগুলি ওকে ছাড়া ভাবতেই পারছি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement