বিগ বি-র সুপারহিট ছবি ‘লাওয়ারিশ’ ঘিরে জড়িয়ে আছে অনেক অজানা তথ্য, যা চমকে দেবে আপনাকে। আসুন, জেনে নিই সে রকমই কিছু চমকপ্রদ তথ্য।
১৯৮১ সালের মে মাসে মুক্তি পাওয়া এই ছবির পরিচালক ছিলেন প্রকাশ মেহরা। চিত্রনাট্য লিখেছিলেন শশীভূষণ, কাদের খান এবং প্রকাশ মেহরা। অমিতাভ বচ্চন, জিনাত আমন, রাখি, আমজাদ খান এবং সুরেশ ওবেরয়ের মতো তারকা-সমাহারে এই ছবি ছিল বক্স অফিসে চূড়ান্ত সফল।
ছবিতে অলকা যাজ্ঞিকের কণ্ঠে ‘মেরে অঙনে পে’ গানটি খুবই জনপ্রিয় হয়। তখন তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগত। এই পারফরম্যান্স তাঁকে পায়ের নীচে জমি পেতে সাহায্য করেছিল। পরে ছবিতে অমিতাভের কণ্ঠেও এই গানটি সংযোজিত হয়।
ছবিতে প্রথমে অমিতাভের বিপরীতে নায়িকা ছিলেন পরভিন ববি। সে সময় তিনি ‘ক্রান্তি’ ছবিরও শুটিং করছিলেন। ‘ক্রান্তি’-র সেটে তিনি আহত হন।
পরভিন এমনিতেই তখন মানসিক দিকে দিয়ে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর সবসময় মনে হত, কেউ যেন তাঁকে খুন করার চেষ্টা করছে! ফলে আহত হয়ে তিনি আরও অস্থির হয়ে পড়েন মানসিক দিক দিয়ে।
‘ক্রান্তি’ এবং ‘লাওয়ারিশ’, দু’টি ছবি থেকেই সরে দাঁড়াতে হয় পরভিনকে। তাঁর বদলে ‘লাওয়ারিশ’-এ সুযোগ পান জিনাত।
১৯৮১ সালে মোট পাঁচটি ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন অমিতাভ ও আমজাদ। চারটি ছবিতে যথারীতি অমিতাভ নায়ক এবং আমজাদ খলনায়ক। কিন্তু ‘লাওয়ারিশ’-এ আমজাদ ছিলেন অমিতাভের বাবার ভূমিকায়। অথচ বাস্তবে আমজাদ বয়সে মাত্র দু’বছরের বড় ছিলেন অমিতাভের থেকে।
এর পর প্রকাশ মেহরা চেয়েছিলেন অমিতাভ-পরভিনকে নিয়ে ‘জমিন’ নামে একটি ছবি তৈরি করতে। ছবির বিষয়বস্তু ছিল মুষ্টিযোদ্ধা মহম্মদ আলির জীবন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা প্রকাশ খারিজ করেন ‘ক্রান্তি’ দেখার পর।
কারণ ‘ক্রান্তি’ ছবিতে এমন অনেক দৃশ্য ছিল, যেগুলি প্রকাশ চেয়েছিলেন ‘জমিন’-এও রাখবেন। ফলে তিনি ‘জমিন’ ছবি তৈরির ইচ্ছে মুলতুবি রাখেন।
‘লাওয়ারিশ’ ছবির একটি গান ‘জিসকো কোই নেহি’ প্রথমে গেয়েছিলেন কিশোর কুমার। পরে মান্না দে-ও গানটি গাইবার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তাঁকে নিরাশ করেননি পরিচালক। তাঁর গলায় গানটি চিত্রায়িত করা হয় এক ফকিরের উপর। এবং পরে মান্না দে-এর কণ্ঠেই বেশি জনপ্রিয় হয় গানটি।
ছবির প্রিমিয়ারে এসে মেজাজ হারান জয়া বচ্চন। তিনি জানতেন না ছবিতে অমিতাভ মেয়ে সেজেছেন ‘মেরে অঙনে পে’-এর দৃশ্যায়নে। তিনি স্বামীর এই রূপ মানতে পারেননি। মাঝপথেই ছবি ছেড়ে উঠে যান জয়া।
ব্যক্তিগত জীবনেও প্রকাশ মেহরার সঙ্গে তাঁর বাবার সম্পর্ক ভাল ছিল না। ফলে তিনি ‘লাওয়ারিশ’ ছবির সঙ্গে অনেক বেশি একাত্ম বোধ করতেন। এ কথা পরে জানিয়েছিলেন তিনিই।
ছবির শুটিং চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রকাশ মেহরা। সে সময় ছবির শুটিং-এর কাজ পরিচালনা করেছিলেন আমজাদ খান এবং প্রকাশের সহকারী পরিচালক রাম শেট্টি।
রাম শেট্টির কাজ এতটাই পছন্দ হয়েছিল পরিচালক প্রকাশের যে, তিনি রামকে ‘ঘুঙরু’ ছবি পরিচালনার দায়িত্বও দিয়েছিলেন। (ছবি: ফেসবুক)