অঞ্জন দত্ত এবং বিনোদ ঘোষাল
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম এবং ইউটিউব চ্যানেলগুলিকে কটাক্ষ করতে গিয়ে গল্পকার-ঔপন্যাসিক বিনোদ ঘোষালের তোপের মুখে পড়লেন পরিচালক অঞ্জন দত্ত। গত দু’তিন ধরে একের পর এক ফেসবুক পোস্ট লিখে ‘মধ্যমেধা’ দূর করার চেষ্টা করেছিলেন অঞ্জন। গত ৭ অগস্ট একটি পোস্টে তিনি লোকাল ট্রেনের হকারদের তাচ্ছিল্য করেন। অথচ অঞ্জনই এক সময়ে হকারদের নিয়ে লিখেছিলেন, ‘বসে আছি ইস্টিশানেতে, লেবু লজেনসের শিশিটা হাতে’ গানটি।
ফেসবুকে কী লিখেছিলেন অঞ্জন? তাঁর পোস্ট বলছে, ‘গুচ্ছের বাংলা পোর্টাল এবং ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম হয়েছে ডিজিটালাইজেশনের এর দৌলতে। যারা ক্রমাগত ভুল বাংলা এবং খুব খারাপ ইংরিজিতে কথা বলে নানা বিষয় মন্তব্য করে যায়। কারুর ‘শ’ এর দোষ, কারুর উচ্চারণ পরিষ্কার নয়। প্রায় সবাই ক্রিস্টোফার নোলান এবং কোয়েন্টিন টারান্টিনোর ছবির পোস্টার লাগিয়ে তাদের বাড়িতে বসে নানা জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কাজ ট্রেলার রিভিউ করা। কেউ বই (সিনেমা) রিভিউ করেন না। কেউ গীতিকার দূরের কথা, গান নিয়ে আলোচনা করেন না। প্রায় সবাই যাদের গালমন্দ করেন, তাদের ইন্টার্ভিউ করতে গেলে ভিজে বেড়াল হয়ে যান।’ দীর্ঘ পোস্টে ডিজিটালাইজেশনের ‘ফলশ্রুতি’কে আক্রমণ করার পর অঞ্জনের প্রশ্ন, ‘আজ যদি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম না থাকত, তাহলে এঁরা কী করতেন? লোকাল ট্রেনের হকারি? কী করতেন? নিশ্চই করে খেতেন।’
বিনোদ ঘোষালের মন্তব্য
বুধবার সেই দীর্ঘ পোস্টের তলায় মন্তব্য করে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিনোদ ঘোষাল। তাঁর বক্তব্যকে ভুল প্রমাণ করার আগে যদিও নিজেকে অ়ঞ্জনের এক জন অনুরাগী হিসেবে পরিচয় দিলেন বিনোদ। লোকাল ট্রেনের হকারদের কথা উল্লেখ করে সাহিত্য অকাদেমি যুব পুরস্কার প্রাপ্ত বিনোদ লিখলেন, ‘মেধার দিক থেকে এঁদের অনেকে অনেক উচ্চমেধার এবং উচ্চমেধার ভান করে থাকা দীন হৃদয়ের ব্যক্তির থেকে অনেক সৎ। স্রেফ গতরের পরিশ্রম দ্বারা লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের বহুযুগ ধরে অনেক কিছু দিয়ে আসছেন।’
অঞ্জনের সুরেই তাঁর দিকে তোপ দাগলেন ‘ডানাওলা মানুষ’-এর লেখক বিনোদ ঘোষাল, ‘আজ যদি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম না থাকত, (মানে যে প্ল্যাটফর্মে আপনারই সদ্য একটি ছবি রিলিজ করেছে) তাহলে আপনারা কী করতেন? গান? অভিনয়? পরিচালনা?’
পোস্টের শেষে বিনোদ লেখেন, ‘লোকাল ট্রেনে হকারি বড় কঠিন কাজ অঞ্জনবাবু। অনেক সময় সিনেমা বানানোর থেকেও কঠিন। সুস্থ থাকুন।’