অমিতাভ বচ্চন-প্রেম চোপড়া। ছবি: সংগৃহীত।
আশি পেরিয়েও পরম উৎসাহে কাজ করে চলেছেন তিনি। পর্দা মাতাতে এখনও একাই একশো অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। কিন্তু অভিনয় জীবনের শুরুর দিনগুলিতে প্রচুর প্রত্যাখ্যান সইতে হয়েছে তাঁকে। বাদ পড়তে হয়েছে অনেক ছবি থেকে। ১৯৬৯ সালে ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবি দিয়ে বলিউডে অভিষেক হয় অমিতাভের। কিন্তু ১৯৭৩ সালে ‘জঞ্জির’-এর সাফল্যের আগে পর্যন্ত ইন্ডাস্ট্রিতে নায়ক হিসাবে অমিতাভকে কেউ পাত্তা দিতেন না।
তাঁর দীর্ঘ দিনের সহ-অভিনেতা প্রেম চোপড়া সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অমিতাভের কেরিয়ারের শুরুর দিকের লড়াইয়ের গল্প শোনালেন। ‘ত্রিশূল’, ‘কালা পাত্থর’-এর মতো ছবিতে তিনি অমিতাভের সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রেম জানান, যাঁরা তখন প্রধান চরিত্রে অভিনয় করবেন বলে ভাবতেন, তাঁরা কখনও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে চাইতেন না। ভয় পেতেন, পার্শ্বচরিত্রে কাজ করলে যদি মূল চরিত্রে আর সুযোগ না পান!
কিন্তু অমিতাভের এই ধরনের ভাবনা ছিল না। প্রেম বলেন, ‘‘যখন তিনি (অমিতাভ) ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করার চেষ্টা করছেন, তখন যে কোনও চরিত্রে অভিনয় করতে প্রস্তুত ছিলেন। মনোজ কুমারের ছবিতে এই ধরনের একটা পার্শ্বচরিত্র ছিল। অমিতাভ রাজি ছিলেন করতে, কিন্তু শেষ অবধি কাজটা আর হয়নি।”
প্রেম আরও বলেন, ‘‘শুরুর দিকে কিছু ছবিতে ওঁর বদলে অন্য অভিনেতাকে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রযোজকেরা বলতেন, এটা তো এক ধরনের ব্যবসা, টাকা লগ্নির ব্যাপার রয়েছে এখানে, নায়ক হিসাবে অমিতাভের নিজেকে বেচার ক্ষমতা নেই।” কিন্তু অমিতাভ এ সব কথায় ভেঙে পড়েননি। তাঁর জেদ ছিল যে, এক দিন প্রতিষ্ঠিত হবেনই।
জানা যায়, কুন্দন কুমার পরিচালিত ১৯৭৪ সালের ছবি ‘দুনিয়া কা মেলা’-তে অমিতাভকে নিয়ে কিছু দিন শুটিং হয়ে যাওয়ার পরও তাঁকে বাদ দিয়ে সঞ্জয় খানকে নেওয়া হয়। অমিতাভ পরে জানিয়েছিলেন, সঞ্জয় খান তখন বড় তারকা ছিলেন। কাজেই তাঁর উপরেই নির্মাতারা ভরসা রেখেছিলেন।
অমিতাভের প্রতিভা অবশ্য অচিরেই নজরে আসে। ‘বিগ বি’র গুণের কথা বলতে গিয়ে প্রেম জানান, অমিতাভ খুব সময়ানুবর্তী, সুশৃঙ্খল অভিনেতা। তাঁর কথায়, ‘‘অমিতাভ সময়ে আসতেন, নিয়মে চলতেন। নির্ধারিত সময়ের আগে সেটে পৌঁছে যেতেন। এর ফলে প্রযোজক-পরিচালকেরাও সময়ে আসতে বাধ্য হতেন। তাঁরা ভাবতেন, না হলে অমিতাভের মতো তারকা অপেক্ষা করবেন, বিশ্রী ব্যাপার হবে সেটা।’’