অমিতাভ বচ্চন। ছবি: সংগৃহীত।
বিগত কয়েক বছরে হিন্দি বনাম দক্ষিণী ছবির বিতর্ক নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ্যে এসেছে। এ বার এই প্রসঙ্গে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করলেন স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন।
শনিবার পুণের একটি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন অভিনেতা। সেখানেই সিনেমা জগৎ নিয়ে একাধিক কথা বলেন বিগ বি। সাধারণত সিনেমা সমাজজীবনের মূল্যবোধকে প্রভাবিত করে বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন। কিন্তু অমিতাভ নিজে অন্য ধারণায় বিশ্বাসী। স্ত্রী জয়া বচ্চনের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জয়া ‘এফটিআইআই’-এর প্রাক্তনী হিসাবে বিশ্বাস করে, সিনেমার গল্প আমাদের সমাজ থেকেই উঠে আসে।’’ উল্লেখ্য, উৎসবে অমিতাভের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন জয়া।
কথাপ্রসঙ্গেই অমিতাভ জানান, জীবন-সায়াহ্নে তাঁর বাবা কবি হরিবংশ রাই বচ্চন প্রতি দিন একই ছবি দেখতেন। অমিতাভের কথায়, ‘‘প্রতি দিন সন্ধ্যায় বাবা টিভি বা ক্যাসেটে একই ছবি দেখতেন। একই ছবি দেখার কারণ ওঁকে জিজ্ঞাসা করি। তখন তিনি বলেন, ‘আমি তিন ঘণ্টায় পোয়েটিক জাস্টিস (আদর্শ বিচার) দেখতে পাই। বাস্তবে তো সেটা সম্ভব নয়।’ সিনেমা আমাদের এটাই শেখায়।’’
তাঁর বক্তব্যে অমিতাভ দক্ষিণী ছবির প্রশংসা করেন। কিন্তু বলিউডের তুলনায় দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে যে এখন বেশি ভাল ছবি তৈরি হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ রূপে মানতে নারাজ বর্ষীয়ান অভিনেতা। অমিতাভের যুক্তি, ‘‘আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রিতে খুব ভাল ছবি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি যে, হিন্দি ছবির গল্পকেই ওঁরা নতুন মোড়কে হাজির করছেন।’’ কথা প্রসঙ্গেই অভিনেতা জানান, তাঁর সুপারহিট ‘দিওয়ার’, ‘শোলে’ বা ‘শক্তি’ ছবি বহু দক্ষিণী ছবি তৈরির নেপথ্যে অনুপ্রেরণার কাজ করেছে। এই মুহূর্তে মালয়লম এবং তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে মৌলিক ছবির যে গুণগত মান, তার কথা উল্লেখ করেন বিগ বি। একসঙ্গেই বলেন, ‘‘কিন্তু তার মানে কোনও নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলের দিকে আঙুল তুলে ওরা ভাল করছে আর আমরা পারছি না, সেটা বলা ঠিক নয়।’’
এ ছাড়াও, সিনেমা শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তৈরি বিতর্ক প্রসঙ্গেও আলোচনা করেন অমিতাভ। হলিউডের কলাকুশলীদের ‘এআই’ বিরোধী ধর্মঘটের প্রসঙ্গও তিনি উত্থতাপন করেন। অমিতাভের আশঙ্কা, ‘‘অদূর ভবিষ্যতে হয়তো সে দিনও আসবে, যখন আমার পরিবর্তে আমার এআই-কে ডাকা হবে!’’