শ্বেতা মিশ্র
ছবি মুক্তির আগে জোরকদমে প্রচার শুরু। ক্যালেন্ডারের প্রায় সমস্ত সংখ্যায় লাল দাগ। সব প্রস্তুত। প্রথম ছবি বলে কথা। রোমাঞ্চ তুঙ্গে। হঠাৎ সব গেল থমকে।
অসুস্থ হলে গেলেন ছবির নায়িকা। হাসপাতালে ভর্তি করতে হল শ্বেতা মিশ্রকে। শয্যায় শুয়ে শুয়ে ‘প্রেম টেম’-এর প্রচার করেছেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলল আনন্দবাজার ডিজিটাল।
অভিনেত্রী জানালেন, দুর্বলতা এখনও রয়েছে। তবে সুস্থ হওয়ার পথে। কিন্তু অসুস্থতার জেরে প্রথম ছবির প্রচার থেকেই বাদ পড়ে গেলেন শ্বেতা। সে প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতে শ্বেতার যাত্রাপথের ঝলক পাওয়া গেল।
বহরমপুরে জন্ম শ্বেতার। স্কুলও বহরমপুরে। কলেজ কলকাতায়। স্কটিশ চার্চ থেকে স্নাতক পাশ করে চাকরি করতে ঢুকে যান অভিনেত্রী। খুব যে কসরত করতে হয়েছে অভিনেত্রী হওয়ার জন্য, তা নয়। ছোট থেকে অভিনেত্রী হওয়ার পরিকল্পনাও ছিল না তাঁর। মঞ্চে অভিনয় করার সূত্রে ছোট পর্দায় সুযোগ পান শ্বেতা। ‘কলর্স বাংলা’-য় ‘জাহানারা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করতেন তিনি। তার পরে একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করার সূত্রে তাঁর কাছে বড় পর্দায় ডাক আসে। ‘বিগ ব্রেক’ বলতে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘প্রেম টেম’।
পাবলো, রাজি ও আর্শি— ছবির ৩ মুখ্য চরিত্র। সৌম্য মুখোপাধ্যায়, সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় ও শ্বেতা মিশ্র, তিনজনেই নতুন মুখ। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু। টলি-পাড়ায় একটি গুঞ্জন খুব শোনা গিয়েছিল ছবি মুক্তির আগে থেকে। দুই নায়িকার মধ্যে নাকি স্পটলাইট নিয়ে কাড়াকাড়ি হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, সুস্মিতাকে যেন একটু বেশিই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শ্বেতা অনেকটা আবছা হয়ে যাচ্ছে যেন। আর তার কারণ নাকি, পরিচালক ও সুস্মিতার ‘বিশেষ বন্ধুত্ব’। সরাসরি সেই প্রশ্নটাই রাখা হল অভিনেত্রীর সামনে।
সুস্মিতা, অনিন্দ্য, শ্বেতা ও সৌম্য
শ্বেতা জানালেন, ‘‘এ রকম প্রশ্ন পেয়ে ভালই হয়েছে। যদি কারও মাথায় আসে, তা হলে সে সবের উত্তর আমি দিয়ে দিতে চাই।’’ শ্বেতার মতে, গুঞ্জনের কথা তিনি নিজে কখনও কানে শোনেননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সবসময়ে একসঙ্গে কাজ করেছি। এ রকম কিছুই ছিল না, নেইও। কেন যে এ সমস্ত রটছে, ভেবে পাচ্ছি না। তার থেকেও বড় কথা, আমাদের গোটা টিমের কেউ কাউকে বাদ দেয়নি আজ পর্যন্ত।’’
তিনি জানালেন, যা দেখা যাচ্ছে, তার পেছনে একটি কারণ রয়েছে। কিন্তু সেটা কেউ জানে না। কী সেটা? ছবির প্রচারে বার বার পাবলো ও রাজিকেই দেখা গিয়েছে। তা সে ‘কলকাতা অ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’-র মঞ্চ হোক, ছবি মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহ দর্শন হোক বা শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর সরস্বতী পুজোই হোক। ফোকাসে সুস্মিতা, নেই শ্বেতা। জনগণের কাছে সেই ছবিই বার বার নজরে এসেছে। কিন্তু পর্দার পেছনে অন্যই গল্প বলে দাবি শ্বেতার। নেপথ্যে ছিলেন তিনি। সব খবর ছিল তাঁর কাছে। প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের হাততালি পর্যন্ত শুনেছেন তিনি। অর্থাৎ সবসময়ে তিনি ফোনে থাকতেন তাঁদের সঙ্গে। সামনে না থাকার কারণ কেবল মাত্র তাঁর অসুস্থতা। শ্বেতার বক্তব্য, ‘‘এটা এক এবং এক মাত্র কারণ। বাকি অন্য কোনও সম্পর্ক বা কূটকাচালি কিছুই নেই এ সবের মধ্যে। এই প্রশ্নের উত্তরটা আমি সকলকে দিতে চাই।’’