Mani Mallika

রাক্ষসীর প্রেমে পড়েছেন কেউ? ‘মণিমল্লিকা’ বললেন…

তিনি ভিলেন। তিনি রাক্ষসী। সৌজন্যে ধারাবাহিক ‘সাত ভাই চম্পা’। ওই ধারাবাহিকে তিনি মণিমল্লিকা। তিনি সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে কথা বললেন মৌসুমী বিলকিস। যে দিন আমাকে মণিমল্লিকা চরিত্রটা করার জন্য বলা হয়েছিল... আমার নিজের চরিত্রর থেকে ম্যাচিওর্ড একটা ক্যারেক্টার... সেই চরিত্র করতে গিয়ে আমাকে হিমশিম খেতে হয়েছে। এটা টিপিক্যাল ফ্যামিলি ড্রামা নয়, একদমই ফ্যান্টাসি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ১১:১৬
Share:

ধারাবাহিকের একটি দৃশ্যে সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

রাক্ষসী হয়ে গেলেন?

Advertisement

মণিমল্লিকা আমার কেরিয়ারে অন্যতম একটা পাওনা। আমাকে এই চরিত্রের জন্য যাঁরা ভেবেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।

এরকম চরিত্র আগে করেছেন?

Advertisement

আমি প্রথম ধারাবাহিকে কাজ শুরু করি ‘খেলা’তে। সেখানে আমি পজিটিভ লিড রোল করে এসেছি। তারপর ‘জলনূপুর’ থেকে দর্শকরা আমাকে অ্যান্টাগনিস্ট হিসেবে দেখছেন। আর এই ‘সাত ভাই চম্পা’-তে তো আমি ভ্যাম্প। এর পরে মানুষ আমাকে সুন্দরী ডাইনি ছাড়া কিছু ভাববে না। এটা আমার ভীষণ মনে হয়।

সেটা ভেবে দুঃখ হয়?

না। আমার মনে হয়, খুব কঠিন এই ধরনের চরিত্র করা। কারণ, আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুব কম কথা বলি, খুব হাসিখুশি, খুব ইয়ার্কি করি, খুব মজা করি। মণিমল্লিকা যে রকম একটা চরিত্র... প্রচণ্ড স্নব... খুব শয়তান... নিজেকে ছাড়া কিছু বোঝে না... অত্যন্ত ধূর্ত একজন মহিলা... লোভী। যে দিন আমাকে মণিমল্লিকা চরিত্রটা করার জন্য বলা হয়েছিল... আমার নিজের চরিত্রর থেকে ম্যাচিওর্ড একটা ক্যারেক্টার... সেই চরিত্র করতে গিয়ে আমাকে হিমশিম খেতে হয়েছে। এটা টিপিক্যাল ফ্যামিলি ড্রামা নয়, একদমই ফ্যান্টাসি। এই যে মণিমল্লিকা কিছু একটা অ্যাচিভ করার পর অদ্ভুত একটা হাসে... হা হা হা হা হা করে হেসে উঠল (হাসিটা অভিনয় করে)... সেটা আমি দীর্ঘ দিন প্র্যাকটিস করেছি। আমি আগে এরকম ভাবে হাসতেই পারতাম না। আমার লজ্জা করত। এই যে মণিমল্লিকার নখ বড় হয়ে যাচ্ছে, দাঁত বেরিয়ে যাচ্ছে... বাচ্চারা ভয় পাচ্ছে... বলছে, ‘তোমার নখ বড় হয়ে যায়। যাব না তোমার কাছে।’ এটা খুব মজার।

বাচ্চারা আপনাকে ভয় পায়?

হ্যাঁ, প্রচুর! পয়লা বৈশাখে একটা জায়গায় লাঞ্চে গিয়েছি... একটা বাচ্চার মা-বাবা বাচ্চাকে বলছে, ‘মণিমল্লিকা এসেছে। ওর সঙ্গে একটা ছবি তোল’। বাচ্চাটা বলছে, ‘না না, ওর দাঁত বেরিয়ে যাবে! নখগুলো বড় বড় হয়ে যাবে! তারপরে আমাকে খেয়ে নেয় যদি? ঝোলায় ভরে নিয়ে চলে যায় যদি? আমি যাব না।’ এইটা আমার কাছে একটা অ্যাচিভমেন্ট। দর্শক মণিমল্লিকাকে নিয়েছে, ভালবেসেছে... আমার উপরি পাওনা।

মণিমল্লিকার মেকআপ বেশ জটিল...

এটা না বেশ টাইম টেকিং ব্যাপার। তার জন্য থ্যাঙ্কস টু আমাদের মেকআপ টিম, প্রসেনজিতদা, বিকাই এবং সেকেন্ডলি যে লুকটা বানিয়েছে, জয়ন্তী সেন। প্রথম দিকে যে লুকটা ছিল কালো বেনারসি, আমার থিমটাই ছিল পুরো ব্ল্যাক। এখন মণিমল্লিকার কস্টিউম চেঞ্জ হতে হতে যাচ্ছে। তার লুকস অনেক চেঞ্জ হয়েছে। এখন যেমন আমার চোখের নীচে দুটো কালো দাগ হয়। হেড গিয়ার চেঞ্জ হয়েছে।

রাক্ষসীর প্রেমে পড়েছেন কেউ?

রাক্ষসীর প্রেমে... সেরকম করে বলতে গেলে সারা শহর পড়ে আছে। রাক্ষসী কার প্রেমে পড়ছে হুইচ ইজ মোস্ট ইম্পরট্যান্ট (হাসি)!

রাক্ষসী কার প্রেমে পড়েছে?

রাক্ষসী প্রেমে পড়বে কিনা ভাবছে। রাক্ষসী অ্যাকচুয়ালি ওয়ান্টস টু বি সেটেল... কামিং ইয়ারে... দেখা যাক... ঈশ্বর যা চাইবেন সেটাই হবে... আমার চাওয়ার ওপরে কিছু নির্ভর করছে না।

আরও পড়ুন: ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ কি ঋতুপর্ণর বায়োপিক? মুখ খুললেন কৌশিক-প্রসেনজিত্

রাক্ষসীর মনের মানুষকে পাওয়া গিয়েছে?

সেই মানুষকে পাওয়া গিয়েছে কিনা সেটা নিয়ে আমি বেশ কনফিউজড। আমি যে মানুষটিকে পেয়েছি সেই মানুষটির সঙ্গেই আদৌ সেটল করতে পারব কিনা আমি সেটা জানি না। তবে যদি ঈশ্বর চান তো হবে। আমি বিশ্বাস করি যেটা হবে ভালর জন্যই হবে।

মণিমল্লিকার বিষয়ে বাড়ির মানুষরা কী বলেন?

আমার মা প্রত্যেক দিন আমার কাজ দেখে। মা, মাসিরা তো অত বোঝে না। গল্পটাই বোঝে। আমি যখনই যেটা করেছি ওরা ভীষণ ভাবে আমাকে ইন্সপায়ার করেছে। এখনও করে। মা বলে যে, ‘একটু পজিটিভ কিছু কর। তুই বড় শয়তান হয়ে গিয়েছিস। পারুলকে বড্ড জ্বালাচ্ছিস, কষ্ট দিচ্ছিস। চাঁপা ভাইগুলোকে মায়ের কোল থেকে নিয়ে যাচ্ছিস, এত কষ্ট পাচ্ছে ওরা।’

আপনার কাছে কমপ্লিমেন্ট?

ওরে বাবা! আমার ওপর যত মানুষ রেগে যাবে ততই আমার সাকসেস্‌।

অভিনয়ে এত সময় দিয়ে গানের চর্চা করার সুযোগ পান?

একটা সময় নিয়মিত চর্চা করতাম। এখন হয় না। তবে আমি অনেক শো করি, প্রফেশনালি করি। ইউটিউবেও গান আপলোড করি। রেওয়াজ নিয়মিত না হলেও আমাদের টিমের সঙ্গে রিহার্সাল করি।

আরও পড়ুন: #মিটু? ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও কিছু ইচ্ছের বাইরে হয় না, বললেন শর্বরী

গান বা অভিনয় ছাড়া আর কী করতে ভাল লাগে?

গান শুনতে খুব পছন্দ করি। আর... শপিং করতে ভালবাসি। মানে... আমি যে টাকা রোজগার করি তার ৫০ শতাংশ শপিং করে উড়িয়ে দিই। কারণ আমার মনে হয় যে, এক ঘণ্টা পরে কী হবে উই নেভার নো। সো, মুহূর্তে বেঁচে নাও।

আপনার স্বপ্নের চরিত্র?

‘সপ্তপদী’-র রীনা ব্রাউন। এ ছাড়া আমার কাছে স্বপ্নের চরিত্র আর কিছু হতে পারেনি এখনও। যত বারই ওঁকে দেখি তত বারই মনে হয় এটা কী করে সম্ভব? সুচিত্রা সেন... ওই সৌন্দর্য, ওই রকম স্মার্ট, ওই রকম একটা অ্যাপিল... আমার মনে হয় না আমি আর আমার চোখে সেরকম কাউকে দেখেছি বলে।

ভবিষ্যতের ইচ্ছে?

আমি স্টার হতে চাই না কখনও। ভাল অভিনেত্রী হয়ে সকলের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই। যতদিন কাজ করব, সবাই যেন বলে, ‘সুদীপ্তা অসাধারণ অভিনয় করে’। ব্যাস, এটুকুই। আর কিছু চাই না।

(টলিউডের প্রেম, টলিউডের বক্স অফিস, বাংলা সিরিয়ালের মা-বউমার তরজা -বিনোদনের সব খবর আমাদের বিনোদন বিভাগে। )

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement