Rakhi Gulzar

এত ছবি করেছি যে অভিনয়ের প্রতি আর কোনও মোহ নেই, এই ছবিই শেষ: রাখি গুলজ়ার

“আমরা রোজ অভিনয় করি। কোনও না কোনও ভূমিকায়। কেবল সাউন্ড আর ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল শিখে নিলে আপনিও অভিনেতা।”

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৪২
Share:
Actress Rakhi Gulzar opens up on her come back  in Bengali Movie Amar Boss

অভিনয় নিয়ে আর কী বললেন রাখি গুলজ়ার? নিজস্ব চিত্র।

তিনি কি অভিনয় দুনিয়ার প্রতি নির্মোহ, নির্লিপ্ত? তাঁর প্রতি কথায় কী ভীষণ বাঁধন ছেড়ার তাগিদ! শান্ত গলায় নিখুঁত বাংলায় বলে চলেছেন, “এত ছবিতে অভিনয় করেছি যে, আর কোনও আসক্তি নেই! আপনারা বিশ্বাস করুন।” এটাই আশি ছুঁইছুঁই রাখি গুলজ়ার। কলকাতার প্রথম সারির এক অফিসে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর হাত ধরে সত্তর দশক হাজির।

Advertisement

অফিস চত্বরে গোধূলির মায়া আলো। গায়ে লাল শিফন শাড়ির আঁচল জড়িয়ে ধীর পায়ে এলেন। সোনালি ফ্রেমের চশমায় গমরঙা ত্বকের জৌলুস। সকলকে দেখতে দেখতে ঢুকলেন নির্দিষ্ট স্থানে। রাখি কলকাতায়। ২২ বছর পর যে ছবি তাঁকে আবার ক্যামেরার মুখোমুখি করেছে সেই ছবির প্রচারে। নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বস’ ছবিতে তিনি শিবপ্রসাদের মা। এই সন্ধ্যার সাক্ষী আনন্দবাজার ডট কম।

মাতৃত্ব তাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে। কখনও তিনি পর্দার ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করছেন। কখনও খোঁজ করছেন তাঁর প্ৰিয় ‘নোলক’-এর। এই ছবির এক অভিনেত্রী উমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই নতুন নামকরণ বর্ষিয়ান অভিনেত্রীর কল্যাণে।

Advertisement
‘আমার বস’-এর সকলে।

‘আমার বস’-এর সকলে। নিজস্ব চিত্র।

এ দিন ছবির প্রথম ঝলক মুক্তি পেল। সেই ঝলক দেখতে দেখতে স্মৃতিতে ডুবলেন পরিচালক নন্দিতা। বললেন, “তখন 'শর্মিলি' ছবির কাল। রাখিজি সাদা শিফন শাড়িতে সেজে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। সে দিন এক মুহূর্তের জন্য ওঁর থেকে চোখ ফেরাতে পারিনি! এতটাই মুগ্ধ। সেই নায়িকা আমার ছবিতে অভিনয় করলেন।” পরিচালক জুটির অন্যতম পরিচালকের দাবি, তারকার যোজন দূরত্ব কমিয়ে রাখি গুলজ়ার এখন উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থার ঘরের লোক। শিবপ্রসাদ জানালেন, রাখিজির নির্দেশেই তিনি পর্দায় অভিনেত্রীর ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

তার পরেই রাখিকে জড়িয়ে ধরে আবদার পরিচালক-অভিনেতার, “আবার আমাদের ছবিতে অভিনয় করবে তো?”

রাখির পাতলা, লালচে ঠোঁটে প্রশ্রয়ের হাসি, “আর না। এটাই শেষ। এ বার তো যাওয়ার পালা!” সঙ্গে সঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ উপস্থিত শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, কাঞ্চন মল্লিক, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, শ্রুতি দাস, ঐশ্বর্য সেন-সহ ছবির বাকি অভিনেতাদের। এসেছিলেন সস্ত্রীক অনুপম রায়, শিবপ্রসাদের লেখিকা-চিত্রনাট্যকার স্ত্রী জ়িনিয়া সেন।

নিজের বলা কথার রেশ ধরেই রাখি আপন মনে বলে চলেছেন, “এই ছবিটাও করতাম না। ছবির বিষয় আমায় টেনেছে। একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে যাচ্ছে। মা-বাবারা বড্ড একা। জানেন, আমার মেয়ে বসকি বিয়ের আগের রাতেও আমার গা ঘেঁষে শুয়েছে। আর এখন? সারা ক্ষণ ব্যস্ত। আমি কখনও অফিসে চাকরি করিনি। তাও জানি, ঘরে ঘরে এই দৃশ্য। এই ছবি সেই সব একা হয়ে যাওয়া মা-বাবাকে আগলে রাখার বার্তা দেবে। যা খুব জরুরি।”

ঘরময় পিন পড়লেও শোনা যাবে এমন নিস্তব্ধতা। বর্ষিয়ান অভিনেত্রী মৃদু গলায় বলেই চলেছেন, “আমি অভিনয় শিখিনি। অভিনয় করতে পারি না। আমার জন্য কোনও ছবি হিট, এও বিশ্বাস করি না। কারণ, কাউকে আলাদা করে অভিনয় শিখতে হয় না। রোজ আমরা কোনও না কোনও ভূমিকায় অভিনয় করি।”

তাঁর মতে, কেবল ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল আর কণ্ঠস্বর ব্যবহারের কায়দা সকলের জানা নেই। ওটা জানা থাকলেই সবাই সফল অভিনেতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement