জিনাতকে দেখেই নাচ এবং গানের দৃশ্যে ঠোঁট মেলানোর আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলেন পরভীন। — ফাইল চিত্র।
অভিনয়ে আসার আগে মডেলিং করতেন পরভীন ববি। তাঁর প্রথম ছবি ‘চরিত্র’ (১৯৭৩)-তে তাঁর সঙ্গে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন ক্রিকেটার সেলিম দুরানিও।
বড় পর্দায় নাচ এবং গানে ঠোঁট মেলানোর ব্যাপারে পরভীনের আত্মবিশ্বাস ছিল না। কিন্তু যখন তিনি দেখেন ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর সহকর্মী জিনাত আমন গানের দৃশ্যে সাবলীল ভাবে অভিনয় করছেন, তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়ে। ১৯৭৬ সালের একটি সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছিলেন পরভীন।
তিনি মনে করেন, জিনাত যখন পারছেন, তিনিও পারবেন।
পরভীনের প্রথম ছবিটি সফল হয়নি। ১৯৭৪ সালে ‘মজবুর’ এবং ১৯৭৫ সালে ‘দিওয়ার’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এই ছবিগুলি মূলধারার ছবিতে তাঁকে প্রতিষ্ঠা দেয়।
যে জিনাতকে দেখে নাচ এবং এবং গানের দৃশ্যে ঠোঁট মেলানোর আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলেন পরভীন, তাঁর সঙ্গে ‘অশান্তি’ (১৯৮২), ‘আমির আদমি গরিব আদমি’(১৯৮৫) ছবিতে অভিনয়ও করেন তিনি।
সত্তর দশকের মধ্যভাগ থেকে আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত জিনাত এবং পরভীন দু’জনেই পর্দায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় নায়িকা ছিলেন। তাঁদের পোশাক-আশাকেও ছিল য়ালাদা চমক।
যখন পরভীন তারকা হিসাবে পরিচিতি পেলেন, তাঁর মনে হল, খুব অল্প কাজ করেই অনেক অর্থ উপার্জন করে ফেলেছেন তিনি। বিশেষ করে পুরুষ সহকর্মীদের তুলনা করলেই পরভীন দেখতেন তাঁর কাজের তালিকা অনেক কম। পরবর্তীকালে সাক্ষাৎকারে অকপটে সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। জানিয়েছেন, গাছের চারপাশে গান গেয়ে নাচতে তিনি একেবারেই স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। করিশ্মা উপাধ্যায়ের লেখা পরভীনের জীবনীতে রয়েছে জিনাতের কথা। পরভীনের চালিকাশক্তি ছিলেন তিনিই। তাঁকে দেখেই পরভীন ভাবেন, “ও যদি নাচতে পারে আমি কেন পারব না!”
প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী হিসাবে বিদেশি পত্রিকার প্রচ্ছদে জায়গা করে নিয়েছিলেন পরভীন। তখন তিনি মাত্র ২৭ বছরের তরুণী। পরভিনের উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল, ‘কালা পাত্থর’ (১৯৭৯), ‘দো আউর দো পাঁচ’ (১৯৮০), ‘শান’ ( ১৯৮০), ‘ ক্রান্তি’ (১৯৮১), ‘নমক হালাল’ (১৯৮২) ইত্যাদি। তাঁর শেষ ছবি ‘ইরাদা’ (১৯৯১) ।
২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারি মাসে মাত্র পঞ্চাশ বছর বয়সে প্রয়াত হন অভিনেত্রী।