ইন্দ্রাণী
ভাল কাজের সন্ধানে তিনি সব সময়ে থাকেন। হয়তো সে কারণে কাজ কম করা হয় তাঁর। তবে এ বার ধারাবাহিকে কাজ করতে চলেছেন অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী দত্ত। ‘জীবন সাথী’ ধারাবাহিকের অন্যতম প্রধান চরিত্র এবং চমক তিনি। ঠিক কী ভেবে ছোট পর্দায় এলেন? ‘‘কিছু না ভেবেই এসেছি। প্রস্তাবটা ভাল লাগল বলে রাজি হয়ে গেলাম। এর আগে টেলিফিল্ম করেছি কয়েকটা, কিন্তু ডেলি সোপ করিনি,’’ বক্তব্য ইন্দ্রাণীর।
নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ২০০০-এর শুরুর দিকেও বড় পর্দায় কাজ করেছেন। তার পরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নাচ আর সংসার নিয়ে। অভিনয় জগৎ মিস করেননি? ‘‘করেছি তো। সমসাময়িক নায়িকাদের তুলনায় আমার বিয়ে বেশ খানিকটা আগেই হয়েছিল। তখন বিয়ের পরে অভিনেত্রীদের চাহিদা কমে যেত। আমার কাছেও কাজের প্রস্তাব আসা কমতে লাগল।’’ এখন বলিউড বা টলিউডে বিয়ের পরেও নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করে যাচ্ছেন অনেকে। ইন্দ্রাণীর কথায়, ‘‘হ্যাঁ, কিন্তু আমার কোথাও মনে হয়, বিবাহিত অভিনেত্রীদের গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। তবে এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত।’’ অভিনেত্রী দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘বেলাশেষে’ দিয়ে বড় পর্দায় ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু মাঝের ক’বছরে অভিনয় করেননি কেন? ইন্দ্রাণীর সাফ জবাব, ‘‘কেউ আমাকে ডাকেনি তাই।’’ নিজে থেকে কাউকে বলেননি? ‘‘ওগুলো আমি পারি না। আমার মনে হয়, বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে তো সকলে আমাকে চেনেন। আমি কেমন অভিনেত্রী জানেন, তা হলে আলাদা করে কাজ চাইতে যাব কেন? ‘আমাকে কাজ দাও’ বলার মধ্যে খারাপ কিছু নেই কিন্তু আমার অস্বস্তি হয়। তা ছাড়া কোথাও একটা অভিমানও তৈরি হয়েছিল,’’ অভিনেত্রী অকপট।
বড় পর্দা থেকে সরে এসে আঁকড়ে ধরেছিলেন নাচ। নিজস্ব ট্রুপ নিয়ে দেশে-বিদেশে নিয়মিত শো করেন। তবে মনে করেন, অভিনেত্রী সত্তাটাই তাঁকে নাচের দুনিয়ায় অতিরিক্ত মাইলেজ দিয়েছে। অতিমারির সময়ে নাচের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বাড়িতে বসে ভিডিয়ো, ভার্চুয়াল শো করেছেন। মেয়ে রাজনন্দিনীর পরামর্শে ওয়েব সিরিজ়-মুভি দেখে সময় কাটিয়েছেন। মেয়ের পরামর্শ তিনি শোনেন। মা কি মেয়েকে পরামর্শ দেন? ‘‘দরকার পড়লে দিই। এই মাসের শেষে ও কাজে ফিরবে,’’ বললেন ইন্দ্রাণী। করোনায় অনেক কাজের সুযোগ নষ্ট হয়েছে আবার নতুন দরজাও খুলে গিয়েছে। চ্যানেলে সদ্য ‘জীবন সাথী’র প্রোমো চালানো শুরু হয়েছে। তার প্রতিক্রিয়ার তোড়ে ইন্দ্রাণী ছোট পর্দার দাপট বেশ বুঝতে পারছেন। জানালেন, বুধবার থেকে পুরোদস্তুর শুটিং শুরু করবেন।
নায়িকা হিসেবে তাঁকে পজ়িটিভ চরিত্রেই দেখা যেত। কিন্তু ‘জীবন সাথী’তে তাঁর চরিত্রে ধূসর ছাপ। ইন্দ্রাণীর কথায়, ‘‘এই রকম চরিত্র আগে করিনি বলেই আমার আগ্রহ বেশি। তবে পুরোপুরি নেগেটিভ বলা যাবে না। কারণ সব চরিত্রের মধ্যেই অনেক পরত থাকে। আমি রোম্যান্টিক ছবিতেই কাজ করেছি বেশি। তবে তখন তো কমবয়সি চরিত্র করতাম। পরিণত নারী-পুরুষের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে ভাল চিত্রনাট্যে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে।’’
‘বেলাশেষে’র পরে বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজও করেছেন। অপেক্ষা করছেন ‘বেলাশুরু’র রিলিজ়ের জন্য। তবে আপাতত ছোট পর্দার এই জার্নি উপভোগ করতে চান অভিনেত্রী।