পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও পিয়া চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
মঙ্গলবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চে অবশেষে তাঁকে দেখা গেল। বিয়ের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। গত ২৭ নভেম্বর ঘরোয়া অনুষ্ঠানে মনো-সমাজকর্মী পিয়া চক্রবর্তীকে বিয়ে করেছেন অভিনেতা। তাঁর বিয়ের কথা অনেকেই জানতেন না। নবদম্পতির বিয়ের ছবি দেখে শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন কাছের মানুষ এবং অনুরাগীরা। তবে বিয়ের পর থেকেই যেন সমাজমাধ্যমে ঝড় উঠল। কারণ, পিয়া সঙ্গীতশিল্পী অনুপম রায়ের প্রাক্তন স্ত্রী। দু’জন প্রাপ্তবয়স্কের স্বাধীন সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে অসুবিধা হচ্ছিল সমাজের একাংশের। তাই নানা ভাবে আক্রমণ করা হয় নবদম্পতিকে। নৈতিকতা, বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা, ন্যায়-অন্যায় নিয়ে সমাজের ‘রক্ষাকর্তারা’ সমানে নিজেদের মত প্রকাশ করা শুরু করেন। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় দু’জনকে। এবং সেই সব আলোচনা এখনও চলেই যাচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে পরমব্রত এবং পিয়া— দু’জনেই তাঁদের রুচি এবং পরিণত বুদ্ধির পরিচয় দেখিয়েছেন। কোনও রকম কটাক্ষের জবাব তাঁরা প্রকাশ্যে দেননি। খুবই ঘনিষ্ঠ পরিসরে বিয়ে সেরে তাঁরা মধুচন্দ্রিমায় ইউরোপে ঘুরতে চলে গিয়েছিলেন।
২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন পরমব্রত। অনুষ্ঠান শেষে নন্দনের মূল ভবনে পরমব্রতকে ঘিরে তখন অনুরাগীদের ভিড়। কাউকে নিরাশ করলেন না। ধৈর্য ধরে তাঁদের নিজস্বীর আবদার মেটালেন। তারকাকে ঘিরে এই জনস্রোতের একাংশই তো সমাজমাধ্যমে কয়েক দিন আগে তাঁর বিয়ে নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। খারাপ লাগে না? পরমব্রত হেসে বললেন, ‘‘আমরা জানতাম এটা হবে। সমাজমাধ্যমে এখন প্রত্যেকেই তাঁদের অবদমিত রাগ, হতাশা এবং বিচার-বিশ্লেষণ প্রকাশ করেন।’’ এরই সঙ্গে পরমব্রত যোগ করলেন, ‘‘আমি এত দিন পর বিয়ে করলাম। সেটা নিয়ে তো নানা জনের নানা বক্তব্য থাকবেই! আজকাল গর্ভবতী মহিলার ছবি পোস্ট করলে তাঁকে পর্যন্ত মানুষ ছাড়ে না! সেখানে আমি এমন এক জনকে বিয়ে করেছি, যাঁর আগে একটা বিয়ে ছিল। তাই সবটা মিলিয়ে এ রকম যে হবে সেটা জানাই ছিল।’’
পরমব্রতর মতে, তারকা হিসাবে ট্রোলিং নিয়ে বাঁচতে তিনি শিখে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আজকে সবাইকেই এটার সম্মুখীন হতে হয়। কখনও রাজ-শুভশ্রী, কখনও আবার সৃজিত-মিথিলা— সবাইকেই কিছু না কিছু ভাবে ফেস করতে হচ্ছে।’’
সোমবার শহরে ফিরেছেন পরমব্রত। বললেন, ‘‘এ বছর চলচ্চিত্র উৎসবে থাকতে পারিনি। কিন্তু বলেছিলাম সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকব। আগামী বছর উৎসবের শুরু থেকেই থাকার ইচ্ছে রয়েছে।’’ বিয়ের পর তাঁর জীবন কতটা বদলাল? পরমব্রতর সহজ উত্তর, ‘‘বিয়ের পর মানুষের জীবন তো অবশ্যই বদলায়। এত তাড়াতাড়ি হয়তো বদলটা বুঝতে পারব না। আর কয়েকটা মাস গেলে বোধহয় বদলটা বুঝতে সময় লাগবে।’’
এই মুহূর্তে শহরেই থাকবেন পরমব্রত। ২৪ ডিসেম্বর ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুবান্ধব নিয়ে একটি রিসেপশন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন পরমব্রত এবং পিয়া। জানুয়ারি মাসে তাঁর পরিচালিত নতুন বাংলা ছবির শুটিং শুরু করবেন অভিনেতা। তাঁর শেষ পরিচালিত ওয়েব সিরিজ় ‘পর্ণশবরীর শাপ’ দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছিল। খুব তাড়াতাড়ি তিনি হিন্দি ছবির পরিচালনাও করবেন বলে জানা গিয়েছে।