Entertainment News

‘লজ্জায় বলতাম না যে অভিনেতাদের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকি’

বিশ্বজিৎ ঘোষ। ‘কে আপন কে পর’ ধারাবাহিকের নায়ক পরম। দাসানি-২ স্টুডিয়োয় শুটিংয়ের অবসরে তাঁর মুখোমুখি মৌসুমী বিলকিস।ভাল প্রোডাকশনে কাজ করেছি শুরু থেকেই, ভাল মানুষদের সঙ্গে কাজ করেছি। শুরু করেছিলাম ‘প্রফুল্ল’ বলে একটা সিরিয়াল দিয়ে। তার পরে পরেই গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করি। তখন ডিসাইড করলাম চাকরিবাকরি করা খুব ইম্পর্ট্যান্ট। তো টিসিএস-এ দেড় বছর কাজ করেছি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৯ ১৬:১৯
Share:

বিশ্বজিৎ ঘোষ।

পরমের কী অবস্থা?

Advertisement

পরমের ওয়াইফ (জবা) এখন প্রেগন্যান্ট। ছেলেমেয়ে বড় হয়ে যাওয়ার পর মা কনসিভ করেছে সেটা নিয়ে পরিবারে মনোমালিন্য চলছে। যেহেতু আমাদের মেয়ের ক্যানসার। ওর শিবলিং-এর থেকে বোন ম্যারো নিয়ে ওকে বাঁচাতে হবে। সেই কারণে কনসিভ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জবা। কিন্তু সেটা দর্শকরা জানলেও বাড়ির লোকেরা জানে না। পরম আর জবা তাই একটা লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এই মুহূর্তে।

‘কে আপন কে পর’-এর গল্প অন্যান্য বাংলা ধারাবাহিকের থেকে কোথায় আলাদা?

Advertisement

এক অল্প বয়সী মেয়ে যে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে লড়াই করে যাচ্ছে, একটা সংসারে নিজের জায়গা করে নিয়েছে, বাড়ির কাজের লোক থেকে উকিল হয়েছে। প্লাস, ছেলেমেয়ের জন্য তার স্যাক্রিফাইস...এই বয়সে এসে কনসিভ করতে বাধ্য হয়েছে...সব মিলিয়ে জবার লড়াই একটা দেখার মতো বিষয়, যে মা কতটা এক্সটেন্টে যেতে পারে তার ছেলেমেয়ের জন্য।

আপনার অভিনয়ে আসার জার্নিটা কেমন?

খুবই ভাল। ভাল প্রোডাকশনে কাজ করেছি শুরু থেকেই, ভাল মানুষদের সঙ্গে কাজ করেছি। শুরু করেছিলাম ‘প্রফুল্ল’ বলে একটা সিরিয়াল দিয়ে। তার পরে পরেই গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করি। তখন ডিসাইড করলাম চাকরিবাকরি করা খুব ইম্পর্ট্যান্ট। তো টিসিএস-এ দেড় বছর কাজ করেছি। তারপর মনে হল এটা আমার জন্য নয়। তখন জব ছেড়ে ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে আসি। মধ্যবিত্ত ফ্যামিলিতে চাকরি করা সিকিওর বলে মনে করা হয়। আমার বাড়িতেও সেটা ছিল। আমি যখন চাকরি ছেড়ে দিয়েছি বাবা এক দিন বললেন, ‘বাড়িতে বসে আছিস? ছুটি নিয়েছিস?’ আমি তখন জানালাম, চাকরি ছেড়েছি। বাবার তখন ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। টিসিএস-এর চাকরি বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে কেউ ছেড়ে দিতে পারে ভাবতেই পারছিল না। তিন মাস বাড়িতে বসে থাকার পর জি বাংলার ‘রাজযোটক’ সিরিয়ালে কাজ করার সুযোগ পাই। দু’বছর চলেছিল। তার পর কালার্সের ‘আপনজন’ করি। শেষের দিকে ঢুকেছিলাম। ঢোকার মাস দেড়েকের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। তার পর ‘কে আপন কে পর’-এ সুযোগ পাই।

আরও পড়ুন, কপিলের চেহারা জিনগত ভাবেই আলাদা, অনুকরণ করা কঠিন: রণবীর

টিসিএস ছেড়ে অভিনয়ে। বাড়ির সদস্যরা কী বলেন এখন?

এখন সবাই খুশি। সবাই অ্যাকসেপ্ট করে নিয়েছে। সিকিওরিটি সবাই চায়। প্রথম দিকে আমি বাড়িতে না বলেই ইন্ডাস্ট্রিতে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করতাম। লজ্জায় বলতাম না যে অভিনেতাদের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকি। তো ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ সিরিয়ালে প্রথম ছোট একটা রোল পাই। এটাতেই প্রথম সংলাপ বলার সুযোগ পাই। সেই প্রথম অভিনয়ের কথা বাড়িতে বলি।


ধারাবাহিকের দৃশ্যে পরম এবং জবা।

চাকরি করা যেমন একঘেয়ে, সিরিয়ালে অভিনয়ও কি তাই?

না, সিরিয়াল করাটা একঘেয়ে ঠিক বলব না। যেহেতু এখন একটা টাইম বেঁধে দেওয়া হয়েছে, চোদ্দো ঘণ্টা হয়েছে, আমাদের প্রচুর লড়াইয়ের পর। আগে যখন ডে-নাইট কাজ চলত, চার ঘণ্টা মাত্র গ্যাপে কাজ হত, তখন ভীষণ রাগ হত...মানে...বুঝতে পারতাম কারও একটা ফল্টে রাত জাগতে হচ্ছে বা এ রকম বেকায়দা ভাবে শুটিং হচ্ছে...হয়তো লুকস ঠিক হয়নি বা অন্য কিছু... সমস্যাটা বুঝতে পারতাম বলেই রাগ হত। কিন্তু শুটিং করতে বোর লাগেনি, যদি আমাকে প্রপার টাইম দিয়ে... যদিও সেটা হয় না সিরিয়ালে... হাতে গরম স্ক্রিপ্ট দিয়ে বলা হয়, ‘চল, বলে দেবে’। এটা অভ্যাস। আরও একটা বিষয়, তিন বছর ধরে একটা চরিত্র করছি, এই চরিত্রে ভেরিয়েশন দেওয়ার মতো আর কিছু থাকে না। প্রথম দিকে চরিত্র বিল্ড আপ করতে অনেক শেডস দেওয়া হয়। তিন বছর পর খুব ড্রাস্টিক কিছু চেঞ্জ না হলে চরিত্রকে নতুন কিছু দেওয়ার থাকে না।

তিন বছরের একঘেয়েমি কাটানোর জন্য কিছু ভাবছেন?

কী হয়, কিছু জিনিস থাকে নিজের পছন্দের আর কিছু জিনিস দর্শকের পছন্দের। দর্শক চাইছেন জবা-পরম একসঙ্গে থাকুক। তো তাঁদের ওপর কিছুটা ছাড়তে হয়, তাঁদের ভালবাসা পেতে গেলে কিছুটা স্যাক্রিফাইস করতে হয়। এখন যদি আমি এটা ছেড়ে দিয়ে অন্য কিছু করি, একটা ফিল্ম করি, তা হলে হয়তো নিজের ইচ্ছে পূর্ণ হবে কিন্তু দর্শক চরিত্রটা মিস করবে। মানুষ যখন বাইরে আমাকে দেখে এমন ভাবে অ্যাকসেপ্ট করে যেন আমি তাদের ঘরেরই লোক। এটা সিরিয়ালই করতে পারে। আমি সেটা ফিল করেছি।

আরও পড়ুন, বিয়ের আগে জয়াকে নিয়ে লন্ডন যেতে দেননি বাবা, স্মৃতিমেদুর অমিতাভ

যেমন?

এক বার এক শপিং মলে গিয়েছি। এক মহিলা আমাকে দেখে কেঁদে ফেলেছেন। বলছেন, ‘বাবা, তুমি এমন ভাবে কষ্ট পেও না’। আমার বাড়ির কাজের মহিলা আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তোমার কি সত্যি ওই মাছে অ্যালার্জি?’ এক একটা দৃশ্য দেখে তাঁদের মনে হয়েছে এ সব। তো সবটাই তাঁদের মনের মধ্যে ঢুকে যায়। (হাসি) এমনকি, যখন আমার বউকে নিয়ে কোথাও যাই অনেকে জিজ্ঞেস করে, ‘জবা কোথায়? জবা আসেনি?’...হা হা হা...মানুষ রিয়ালাইজ করে না রিল আর রিয়েলের পার্থক্য। এগুলোই পাওনা।

স্ত্রী রাগ করেন না?

অভ্যস্ত হয়ে গেছে (হাসি)। প্রথম প্রথম একটুখানি ভ্রূ কোঁচকাতো। এখন সেটাও করে না।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে। )

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement