অভিষেক এবং দেবশ্রী
প্রথমে তাপস (পাল) চলে গেল। তার পর মিঠু (অভিষেক চট্টোপাধ্যায়)। চলে যাওয়ার মতো একেবারেই বয়স হয়নি ওদের। কিন্তু আচমকা ‘নেই’ হয়ে যাচ্ছে কাছের বন্ধুরা। খবরটা শোনার পর থেকেই মনখারাপ। অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসছে। বুকের ভিতরটা কেমন যেন চাপ ধরে আছে। মাত্র ৫৭! মিঠু, এটা কি তোর চলে যাওয়ার বয়স?
খুব মনে পড়ছে, তরুণ মজুমদারের ‘পথভোলা’ ছবিতে নয়না দাস আর অভিষেক চট্টোপাধ্যায় নতুন মুখ। এর পরেই আমি, মিঠু, দেবিকা মুখোপাধ্যায় মিলে করি ‘ওরা চারজন’ ছবিটি। শমিত ভঞ্জের ওই ছবিতে কাজ করতে করতে ভীষণ মজা করতাম সবাই। মিঠু খুবই প্রাণবন্ত ছিল। সারা ক্ষণ সবার পিছনে লাগা। দুষ্টুমি করা। সমান তালে তাল দিত আমাদের সঙ্গে। আমরা চার জন মিলে কী ভূতের ভয় দেখাতাম!
কখনও আমার প্রেমিকের চরিত্রে। কখনও আমার ভাই মিঠু। পাশাপাশি গানও গাইত খুব ভাল। নেপথ্য গায়ক হিসেবেও পুরস্কার পেয়েছে। অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, চিরঞ্জিৎ, তাপস, মিঠু আমার প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কে বেশি অনায়াস ছিলেন? সবাইকে বলেছি, ও ভাবে অভিনেতাদের মাপা সম্ভব নয়। আমাদের সব চরিত্রেই সাবলীল হতে হয়। তবে মিঠু কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেই সেই প্রজন্মের ‘হার্টথ্রব’ হয়ে উঠেছিল। ভীষণ সুন্দর দেখতে ছিল তো! আমরা একসঙ্গে অনেক মাচাও করেছি। তখন দেখতাম, মেয়েরা ওকে একটু কাছ থেকে দেখবেন বলে, ছোঁবেন বলে কী পাগলামিই না করতেন!
বড় পর্দাতে ভাল ছাপ ফেলেছিল মিঠু। আচমকাই সরে দাঁড়াল। কেন সরে গেল, সেই বিতর্ক আজ থাক। মানুষটাই তো চলে গেল। মৃত্যুর পায়ের শব্দ যেন খুব কাছ থেকে শুনতে পাচ্ছি।