জন্ম দিল্লিতে। চেন্নাইেতে বড় হয়েছেন অনিতা আগরওয়াল। যিনি বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অনু আগরওয়াল নামেই পরিচিত। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশিওলজিতে সোনার মেডেল পাওয়ার পর ধীরে ধীরে মডেলিং শুরু করেন।
দূরদর্শনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ইসি বাহানে’তে অনুর অভিনয় দেখেছেন দর্শক। কিন্তু ১৯৯০-এ ডেবিউ ফিল্ম ‘আশিকি’তে আলাদা করে দর্শকের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন অনু।
শার্প লুক, লম্বা চেহারা, বাদামী ত্বকের রং তথাকথিত সুন্দরীদের ভিড়ে অনুকে ইন্ডাস্ট্রিতে আলাদা করে চিনিয়েছিল। তার সঙ্গে ছিল বোহেমিয়ান জীবনযাপন।
পাবলিক প্লেসে মার্লবোরো লাইটস্-এ স্বচ্ছন্দে টান দিতেন অনু। শর্ট স্কার্টে সাজাতেন নিজেকে। ইন্ডাস্ট্রির উপর মহলে অনু নিত্য যাতাযাত করতেন। তাঁর অনস্ক্রিন সেক্স অ্যাপিল নিয়েও সে সময় চর্চা হত।
‘১৯৯২’-এ ‘গজব তামাশা’, ১৯৯৩-এ ‘কিং আঙ্কল’, ১৯৯৫-এ ‘জন্মকুণ্ডলী’, ১৯৯৬-এ ‘রিটার্ন অব জুয়েল থিফ’— একের পর এক ছবিতে অভিনয় করেন অনু।
ডেবিউ ফিল্মের মতো সে সব ছবি তুমুল জনপ্রিয় না হলেও অনু ধীরে ধীরে বলি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করছিলেন।
পাশাপাশি সমাজসেবার কাজও করতেন অনু। মুম্বইয়ে পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সী এইডস আক্রান্ত মেয়েদের প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করতেন তিনি।
সমাজ সেবার লক্ষ্যে নিজস্ব ফাউন্ডেশন তৈরি করেছিলেন অনু। অনাথ শিশুদের পাশে থাকতেন। মুম্বইয়ের বস্তি এলাকার শিশুদেরও অর্থ সাহায্য করতেন।
হঠাত্ই বিপর্যয়। ১৯৯৯-এ এক ভয়ঙ্কর গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন অনু। সে সময় ২৯ দিন কোমায় থাকতে হয়েছিল তাঁকে।
বলি সূত্রে খবর, ওই দুর্ঘটনার পর অতীতের সব কিছু ভুলে গিয়েছিলেন অনু। তাঁর চেন্নাইয়ের জীবন, মুম্বইয়ে অভিনয় কেরিয়ার— কিছুই নাকি তখন আর মনে করতে পারেতেন না।
যত দূর জানা যায়, এই মুহূর্তে বেঙ্গালুরুতে একাই থাকেন অনু। যোগাভ্যাস করেন নিয়মিত। শিশুদের যোগা শেখান কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই। এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন অনু, ‘‘আমি যোগচর্চার ওপর ভরসা রেখেছিলাম। তার জেরেই আমি আজ সুস্থ।’’
শোনা যায়, মুঙ্গেরে বিহার স্কুল অব যোগায় মাঝেমধ্যে গিয়ে যোগা শেখান শেখান অনু। যখন সেখানে যান তিনি একটি বাহুল্যবর্জিত ছোট ঘরে থাকেন। ইদানিং ‘আশিকি’র নায়িকা অনু মুম্বইতে গেলেও নাকি কাউকে জানাতে চান না। দুর্ঘটনার আগে এবং পরের অনু যেন দু’টো আলাদা মানুষ।