বিনোদন জগতে এখন বিচ্ছেদের মরসুম। বোঝাপড়ায় ঘাটতি দেখা দিলে দাম্পত্যে দূরত্ব বাড়ে। কখনও আবার ইগোর লড়াই এমন জায়গা নেয় যে সহাবস্থানই দুরূহ হয়। কিন্তু সম্পর্কে যদি তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ ঘটে? সমস্ত বিশ্বাস ভেঙে যখন সঙ্গীর মনে জায়গা করে নেয় অন্য কেউ? দেখে নেওয়া যাক বলিউডের এমনই কয়েক জন তারকাকে, যাঁরা স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে প্রতারণা করেছিলেন।
জ়ারিনা ওয়াহাবকে বিয়ে করেছিলেন আদিত্য পাঞ্চোলি। তাঁদের বোঝাপড়া দেখে অনেকেই নাকি ঈর্ষান্বিত ছিলেন। কিন্তু সেখানেও ঢুকে পড়েন তৃতীয় কেউ। আদিত্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল কঙ্গনা রানাউতের। আদিত্য নিজেই স্বীকার করেছিলেন, শুধু কঙ্গনা নয়, আরও কিছু সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছিলেন জ়ারিনা। কিন্তু ভালবাসার জোরে সেই সম্পর্কে জোড়া লাগে। ধীরে ধীরে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যায় দম্পতির মধ্যে।
খুব কম বয়সে অমৃতা সিংহকে বিয়ে করেছিলেন সইফ আলি খান। ১৩ বছর একসঙ্গে থাকার পরে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তাঁরা। বিচ্ছেদের কারণ ছিলেন ইটালিয়ান মডেল রোজ়া ক্যাটলানো। তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় সইফের। অমৃতার সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে রোজ়ার সঙ্গে কয়েক বছর সম্পর্কে ছিলেন সইফ।
‘কয়ামত সে কয়ামত’ ছবি করে খ্যাতি পেয়েছিলেন আমির খান। ঠিক তার পরেই ছোটবেলার বান্ধবী রিনা দত্তকে বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২১। টানা ১৫ বছর সুখেই ছিলেন তাঁরা। কিন্তু সহ-পরিচালক কিরণ রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আমির। তার পরেই রিনার সঙ্গে বিচ্ছেদ করে কিরণকে বিয়ে করেন আমির। সেই বিয়েতেও বছর কয়েক আগে ইতি টেনেছেন অভিনেতা।
কেশবিন্যাস শিল্পী অধুনা ভবানীর সঙ্গে টানা ১৬ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কে ছিলেন অভিনেতা ফারহান আখতার। কিন্তু ১৬ বছর পরে ফারহানের জীবনে আসেন গায়িকা শিবানী দান্ডেকর। ২০১৬ সালে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙেন ফারহার। বিচ্ছেদের পরে শিবানীকে বিয়ে করেন ফারহান।
অমিতাভ বচ্চন ও রেখার সম্পর্ক বলিউডে বহুলচর্চিত। যদিও নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে কোনও দিন সেই ভাবে মুখ খোলেননি তাঁরা। ‘সিলসিলা’ ছবির সময়ে নাকি রেখার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় অমিতাভের। তত দিনে বিয়ে হয়ে গিয়েছে অমিতাভ-জয়ার। যদিও এ সবের পরেও অমিতাভ ও জয়া একসঙ্গে সংসার করছেন দীর্ঘ দিন।
যোগিতা বালিকে বিয়ে করেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। কিন্তু তার পরেও শ্রীদেবীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। বলিউডের অন্দরে গুঞ্জন শোনা যায়, বিবাহিত অবস্থাতেই শ্রীদেবীকে বিয়ে করেন মিঠুন। পরে অবশ্য শ্রীদেবী জানতে পারেন, যোগিতার সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ না করেই তাঁকে বিয়ে করেছেন অভিনেতা। তিন বছরের মধ্যে সেই বিয়ে বাতিল করেছিলেন শ্রীদেবী।
দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থেকে ২০১৪ সালে শ্বেতা রোহিরাকে বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা পুলকিত সম্রাট। কিন্তু বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এই বিচ্ছেদ পদ্ধতি কুৎসিত আকার নিয়েছিল। শ্বেতা জানতে পারেন, পুলকিত তাঁর সহ-অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতমের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। ইয়ামির উপরেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন পুলকিতের স্ত্রী।
৩১ বছর ধরে স্ত্রী সুনীতার সঙ্গে সংসার করছেন গোবিন্দ। তবে এই দীর্ঘ সময়ে খারাপ পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। ২০০০ সালে এক সহ-অভিনেত্রীর প্রেমে পড়েছিলেন গোবিন্দ। এমনকি, অভিনেত্রীকে বহু দামি উপহারও দিয়েছিলেন তিনি। এক সাংবাদিকের কাছে ধরাও পড়েন তাঁরা। যদিও সেই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে ইতি টেনে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেন গোবিন্দ।
‘কালীচরণ’ ছবির শুটিং-এর সময় রিনা রায়ের প্রেমে পড়েন শত্রুঘ্ন সিন্হা। কিন্তু তত দিনে নিজের দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা পুনম সিন্হাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছিলেন অভিনেতা। রিনার সঙ্গে প্রেম থাকলেও পুনমকেই বিয়ে করেন শত্রুঘ্ন। শোনা যায়, বিয়ের পরেও রিনার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন শত্রুঘ্ন। বিষয়টিতে বেশ ভেঙে পড়েছিলেন রিনা। তিনিই সেই সম্পর্কে ইতি টেনেছিলেন।
স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সঙ্গে সুখে সংসার করছিলেন ধর্মেন্দ্র। কিন্তু তার পরেই ‘ড্রিম গার্ল’ হেমা মালিনীর সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। মন দিয়ে ফেলেন অভিনেত্রীকে। ধর্মেন্দ্র ও হেমা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে প্রথম স্ত্রী মোটেই বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটতে চাননি প্রথমে। তাই বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেন ধর্মেন্দ্র ও হেমা।
রাজ বব্বরের জীবনেও হঠাৎ আসেন অভিনেত্রী স্মিতা পাতিল। তখন প্রথম স্ত্রী নাদিরার সঙ্গে বিবাহিত অভিনেতা। কিন্তু স্মিতাকে বিয়ে করার জন্য নাদিরার সঙ্গে বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছিলেন রাজ। যদিও স্মিতার মৃত্যুর পরে রাজ ফিরে যান নাদিরার কাছেই।