ফাইল চিত্র।
রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে ‘তৃণমূলের গুন্ডাদের’ খুঁজে বার করে শাস্তি দেওয়া হবে বলে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একই কথা শোনা গিয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডার গলাতেও। তাঁরা দু’জনেই ফের দাবি করেছেন, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপিই বাংলায় ক্ষমতায় আসছে।
পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের লাউদোহায় সোমবার শাহ বলেছেন, ‘‘১৩০ জন বিজেপি কার্যকর্তাকে তৃণমূলের গুন্ডারা খুন করেছে। গুন্ডারা এখানে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়! আমি বলে যাচ্ছি, ২ মে’র পরে প্রতিটি খুনের সঙ্গে যুক্ত তৃণমূলের গুন্ডাদের খুঁজে বার করে জেলে ঢোকানো হবে।’’ তাঁর আরও ঘোষণা, ‘‘ভোট দিতে গেলে দিদির গুন্ডারা ঝামেলা করে কি না? এ বার বলে যাচ্ছি, কাউকে ভয় পাবেন না। ওই গুন্ডারা আপনাদের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না!
একই সুরে এ দিন বীরভূমে সংক্ষিপ্ত ভাষণে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডাও বলেছেন, ‘‘আমাদের মহিলা প্রার্থীদের উপরেও আক্রমণ হচ্ছে। ক্ষমতায় এলে দোষীদের পাতাল থেকে হলেও খুঁজে এনে আইনের হাতে তুলে দেওয়া হবে! গুন্ডাগিরি, তোষণ বন্ধ করা হবে। গত দশ বছরে যে স্বৈরতন্ত্র চলেছে, তা বন্ধ হবে। ভোটের ফল বেরোনোর পরে মানুষ আমাদের কাজ করার সুযোগ দেবেন, দিদিকে বাড়িতে থাকতে হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘লাশের রাজনীতি’ করছেন বলেও অভিযোগ নড্ডার। বীরভূমেরই অন্যত্র নড্ডা এবং উত্তরবঙ্গে অন্যান্য কর্মসূচিতেও এ দিন একই সুর ছিল শাহের।
অনুপ্রবেশ থেকে শুরু করে কাটমানি, সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে তাঁর চেনা বক্তব্যেরই এ দিন পুনরাবৃত্তি করেছেন শাহ। দিদি শুধু ‘ভাইপোর কল্যাণে’ মন দিয়েছেন আর নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশের মানুষের কথা ভাবছেন বলেও ফের তাঁর দাবি। ক্ষমতায় এলে তাঁরা কী করবেন, তার বিবরণ দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‘বাংলাকে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে একমাত্র বিজেপিই মুক্ত করতে পারে। আগামী ২ মে’তে সরকার পরিবর্তন করুন। তার পরে, সীমান্ত দিয়ে মানুষ কেন, পাখি পর্যন্ত পারাপার করতে পারবে না! এই অনুপ্রবেশকারীরাই বাংলার যুবকদের রোজগার নিয়ে যায়, বাংলার গরিবদের চাল নিয়ে যায়। বাংলার ভিতরে বোমাবাজি করে। বাংলার আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। এই অনুপ্রবেশকারীদের দিদি ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে দেখেন।’’ যদিও তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিরোধীদের প্রশ্ন, সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলায় সরকার গড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কেন? সীমান্তে নজরদারির দায়িত্ব তো কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে।
‘শরণার্থী’দের নাগরিকত্ব দিতে বাংলায় সে তাঁরা সিএএ চালু করবেন, সে কথাও ফের উল্লেখ করেছেন শাহ। পাঁচ দফার ভোটেই বিজেপি ১২২ আসন জিতছে বলে ইতিমধ্যে দাবি করেছেন তিনি। ভোটের ফল প্রসঙ্গেই এ দিন শাহের দাবি, ‘‘পুরো বাংলায় ঘুরতে-ঘুরতে এখানে এসেছি। জঙ্গলমহল, সুন্দরবন, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, ২৪ পরগনা, সর্বত্র গিয়েছি। আমি একটা জিনিস আপনাদের বলতে চাই, ২ মে দিদির বিদায় নিশ্চিত। পুরো বাংলায় এমন আবহাওয়া যে, প্রচণ্ড রোদেও মানুষ দাঁড়িয়ে বিজেপিকে সমর্থন করছেন। এই আবহাওয়া বলে দিচ্ছে, দু’শোরও বেশি আসন পেয়ে এখানে বিজেপি সরকার হবে।’’