পুরশুড়ার বিজেপি প্রার্থী বিমান ঘোষের সমর্থনে রোড শো-য়ে হাজির জে পি নড্ডা। বুধবার আরামবাগ-চাঁপাডাঙা রোডে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
নন্দীগ্রাম কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে ‘নিরাপদ’ কেন্দ্র? বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডার একটি মন্তব্য ঘিরে নন্দীগ্রামে ভোটের আগের দিন রাজনীতি সরগরম হল। হুগলির ধনেখালিতে বুধবার নির্বাচনী সমাবেশে নড্ডা বলেন, ‘‘ভবানীপুর থেকে ভয় পেয়ে মমতা পাড়ি দিয়েছেন নন্দীগ্রামে।’’ তাঁর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, ‘‘সত্য কখনও চাপা থাকে না। নন্দীগ্রাম যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে সহজ এবং বিজেপির পক্ষে কঠিন কেন্দ্র, তা জে পি নড্ডাই স্বীকার করে নিলেন।’’ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর অবশ্য পাল্টা ব্যাখ্যা, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছিলেন নন্দীগ্রাম তাঁর পক্ষে নিরাপদ আসন। তবে সেখানকার ভোটের পর তিনি হয়তো দক্ষিণবঙ্গের অন্য কোনও নিরাপদ আসন খুঁজে সেখানে মনোনয়ন জমা দেবেন।’’
বিজেপি প্রার্থী তুষার মজুমদারের সমর্থনে ধনেখালির ফিডার রোডের সভায় এ দিন নির্দিষ্ট সময়ের আড়াই ঘণ্টা পরে পৌঁছন নড্ডা। তাঁর এ দিন লিলুয়ায় সভা করার কথা থাকলেও তা বাতিল হয়। তার বদলে জি টি রোড ধরে রোড শো করেন তিনি। লিলুয়া আরপিএফ মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নামার পর বালিঘাট গিয়ে সেখান থেকে বেলুড় মঠ পর্যন্ত রোড শো করার কথা ছিল নড্ডার। কিন্তু তিনি আগে বেলুড় মঠে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে ৬০০ মিটার রাস্তা ধরে রোড শো করার পর হাওড়ার ইছাপুরে সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে চলে যান নড্ডা। তাঁর রোড শো’তে দৃশ্যত হাজার খানেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। যদিও বালির বিজেপি প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়া বলেন, ‘‘রাস্তার দু’ধারে এবং রোড-শো’তে এত লোক হয়েছিল যে, গাড়ি এগোতে পারছিল না। তাই নড্ডাজিকে অন্য কর্মসূচিতে চলে যেতে হয়েছে।’’
বিজেপি সূত্রের খবর, হাওড়ার ইছাপুরে সাংগঠনিক বৈঠকে নড্ডা বলেন, ভোটের ময়দানে এখন শুধু রাস্তায় বড় সমাবেশ করাই যথেষ্ট নয়। কর্মীদের প্রতি তাঁর নির্দেশ— ব্যক্তিগত ভাবে ভোটার এবং স্থানীয় ক্লাব ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। পদ্মফুলে সব ভোট— এই আবহ তৈরি করতে হবে।
অন্য দিকে, বিধানসভা ভোটের দ্বিতীয় দফার আগের দিনও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান অব্যাহত। হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয়ে এ দিন রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নেতৃত্বে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক দীনেশ
বাজাজ এবং শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নান্টু পাল-সহ এক ঝাঁক নেতা-কর্মী। দীনেশ বলেন, ‘‘দিদির সঙ্গে আমি ২০ বছর ছিলাম। কিন্তু এখন আর তৃণমূল দিদির নিয়ন্ত্রণে নেই।’’ নান্টু বলেন, ‘‘তৃণমূল ত্যাগ করে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব ঠিক করেছিলাম। কিন্তু গতকালই অরবিন্দ মেননের সাথে কথা হয়। তাঁর অনুরোধেই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’’ এ ছাড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এবং কুলতলি বিধানসভা এলাকার পঞ্চায়েত স্তরের কয়েক জন তৃণমূল নেতাও এ দিন বিজেপিতে যোগ দেন।