West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: গোলের পথে কাঁটা পদ্ম, গোষ্ঠীকোন্দলও!

আক্ষরিক অর্থেই যেন এ বার ‘খেলা হচ্ছে’ মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রে।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৯
Share:

কল্যাণ চৌবে, রূপা বাগচী এবং সাধন পাণ্ডে

‘খেলা হবে’!

Advertisement

আক্ষরিক অর্থেই যেন এ বার ‘খেলা হচ্ছে’ মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রে। যুযুধান দুই শিবিরে স্ট্রাইকার, গোলকিপার রয়েছেন। আর দু’দলের মাঝে রয়েছেন আর এক পোড়খাওয়া ‘খেলোয়াড়’। মানিকতলার রাজনীতি নিয়ে ওয়াকিবহালেরা বলছেন, খেলার ফল কোন দিকে গড়াবে তা অনেকটাই নির্ভর করছে এই পোড়খাওয়া ‘মিডফিল্ডার’-এর উপরে!

‘স্ট্রাইকার’ শব্দটি শুনেই মুচকি হেসে ফেললেন আট বারের বিধায়ক, তৃণমূলের সাধন পাণ্ডে। বললেন, ‘‘এ বারেও জিতব। তা হলে ন’বার হয়ে যাবে।’’ এই আট থেকে ন’য়ে পা দেওয়ার আর্জি নিয়েই ফ্লেক্সে প্রচার করছেন সাধনবাবু। তবে শেষমেশ জালে বল জড়াতে পারবেন কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। কারণ, পদ্ম শিবিরের হয়ে এ বার লড়াইয়ে নেমেছেন জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলকিপার কল্যাণ চৌবে। তিনি কি আটকে দেবেন স্ট্রাইকারের গতি?

Advertisement

বিজেপি কর্মীদের অনেকেই আশা দেখছেন গত লোকসভার ফলাফলে। সে বার এই বিধানসভায় মাত্র ৮৬১ ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। ঘাসফুলের শক্ত ঘাঁটিতে সে সময়ে যে ভাবে পদ্মের হাওয়া বয়েছিল, তাতেই যেন অক্সিজেন পেয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। এ বারও ভোটের প্রচার ঘিরে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে মানিকতলা। স্থানীয় বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘স্ট্রাইকার’ মন্ত্রীর গতি তো আটকাবেই, বরং ২০১৯ সালের লোকসভার সামান্য ফারাকটুকু টপকে গোল করবেন গোলকিপারই। এ ব্যাপারে কল্যাণবাবুকে বার বার ফোন করা হয়েছে। প্রতিবারই শোনা গিয়েছে, ‘‘দাদা ব্যস্ত আছেন।’’ তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক কর্মী বলছেন, ‘‘দাদা সকাল থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত খাটছেন। অনেক সভা-বৈঠক করছেন।’’

মানিকতলার বাড়িতে বসে মন্ত্রীমশাই অবশ্য লোকসভার ফলকে ধর্তব্যে আনতে রাজি হন। বলছেন, ‘‘লোকসভার ভোট এক রকম আর বিধানসভার হিসেব অন্য। আমার সঙ্গে স্থানীয়দের যোগাযোগ ৩৬৫ দিনের। আমি এলাকায় উন্নয়ন করেছি।’’ ভোটের ফলাফলে যদিও দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে তৃণমূলের ভোট কমেছিল। বিজেপির যে পরিমাণ ভোট বেড়েছিল, তার মধ্যে জোড়াফুল শিবিরের ভোটও কিছুটা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে অনেকে বলছেন, মানিকতলায় তৃণমূলের ‘কোন্দল’ সুবিদিত। ‘প্রৌঢ় বনাম যুব’-র গোলমালও দেখা গিয়েছে। লোকসভায় ভোট কমার পিছনে সেটাও হয়তো কাজ করেছিল। তবে এলাকার যুবকর্মীরা বলছেন, ‘‘মনোমালিন্য যাই থাক, আগেও বিজেপির বিরুদ্ধে আমরা এক হয়েই লড়েছি। এ বারও তাই।’’ গোষ্ঠী-কোন্দলের কথা শুনে হাসছেন মন্ত্রীও। বলছেন, ‘‘ওদের চৈতন্য হোক।’’

যোগাযোগ করা যায়নি সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী রূপা বাগচীর সঙ্গেও। তবে এলাকায় ঘুরে বোঝা গিয়েছে, ভোট ভাগাভাগির খেলায় তাঁর ভূমিকাকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউ। একদা মানিকতলার বিধায়ক এবং পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী রূপাদেবী ভোটের লড়াইয়ে যথেষ্ট
পোড়খাওয়া। এমনকি বিরোধীদের অনেকেই এ-ও মেনে নিচ্ছেন যে, এলাকায় তাঁর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। বামেরা বলছেন, মানুষ তাদেরই জেতাবে। লকডাউন-কোভিডে জেরবার এলাকার মানুষ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ব্যর্থতার’ জবাব দেবে। বিকেলে মানিকতলার নানা প্রান্তে নানা দলের প্রচার চলছে। সে সব চাপান-উতোরের মাঝেই উটকো এক মাইকে ভেসে এলেন রবি ঠাকুর। ‘নয় নয় এ মধুর খেলা।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement