—ফাইল চিত্র।
আমপানের পর প্রথম দফায় কেন্দ্রীয় সরকার ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় আরও ২৭০৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ৩৭০৭ কোটি টাকা দেওয়া হলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কী ভাবে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বললেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনী প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ তথ্য প্রচারের অভিযোগও তুলছে তাঁর বিরোধীরা।
গত বছর ২০ মে রাজ্যে আছড়ে পড়েছিল অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপান। তাতে উপকূলীয় জেলাগুলিতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। তার পরেই খোদ প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে এসে হেলিকপ্টারে এলাকা পরিদর্শন করেন এবং কেন্দ্রীয় সরকার ১ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ খাতে ঘোষণা করে। যদিও রাজ্যের দাবি ছিল, ক্ষয়ক্ষতির যা পরিমাণ তাতে ১ হাজার কোটি টাকায় কিছুই হবে না। রাজ্যে কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানতে চায় কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের দাবি, রাজ্য প্রথমে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার হিসেব দিয়েছিল। কিন্তু সেই হিসেবে ‘অস্পষ্টতা’ থাকায় তা ঠিক করে জমা দিতে বলা হয়। সেই খতিয়ান জমা দেওয়ার পর অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন কমিটি ২৭০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তাও বলছেন, ‘‘দুই দফা মিলিয়ে ৩৭০৭ কোটি টাকা মিলেছিল। তার বাইরে কিছু মেলেনি।’’ প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কোন তথ্যের ভিত্তিতে ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী?
তৃণমূল সূত্রের দাবি, রাজ্য গোড়াতেই প্রায় ৬৩৫০ কোটি টাকা খরচ করেছিল। তার পরে আরও কিছু খরচ হয়েছিল। কেন্দ্রীয় অনুদান থেকে তার অর্ধেকও মেলেনি।
কেন্দ্রীয় সরকারি একটি সূত্রের দাবি, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতি হয়েছিল। তাদের সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গকে ২৭০৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়। নতুন করে বাংলার বরাতে আর কোনও ক্ষতিপূরণের টাকা জোটেনি।
তবে এ কথাও অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আমপান ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে এ রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বহু ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তেরা ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি বলে অভিযোগ। তা নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলাতেই প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন আমপান ত্রাণ বিলি নিয়ে সিএজি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।