চিকিৎসকদের বক্তব্য, মাইক্রোফোনের মুখে ডাবল মাস্ক পরানো উচিত।
রাজ্যে একের পর এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব করোনায় সংক্রমিত। বিধানসভা নির্বাচনের দুই প্রার্থীর মৃত্যু হয়েছে করোনায়। অনেক প্রার্থী সংক্রমিত। কেউ কেউ হাসপাতালে। তাতেও করোনা নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে না বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। এখনও মাস্ক ছাড়াই প্রায় বক্তৃতা হচ্ছে। হচ্ছে সাংবাদিক বৈঠকও। সব দলেরই দাবি, মাইক্রোফোন ‘স্যানিটাইজ’ করা থাকায় ভয়ের কারণ নেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বক্তব্য, ওই ভাবে মাইক্রোফোন জীবাণুমুক্ত করা যায় না। চিকিৎসক কুণাল সরকারের দাবি, ‘‘রাজনীতির মানুষেরা মুর্খতার মধ্যে ঘোরাফেরা করছেন। প্রধানমন্ত্রী থেকে কাউন্সিলার কেউই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক নন।’’ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর বক্তব্য, ‘‘স্যানিটাইজ করলে হবে না। মাইক্রোফোনের মুখেই মাস্ক পরানো উচিত।’’ অনেকের আবার অভিমত, পারলে মাইক ছাড়াই কথা বলুন নেতানেত্রীরা।
প্রায় প্রতিদিন মাস্ক ছাড়াই সাংবাদিক বৈঠক করা রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য নিজেও জানেন না মাইক্রোফোন ‘স্যানিটাইজ’ করা যায় কিনা। তাঁর কথায়, ‘‘আসলে মাস্ক পরে থাকলে মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের ঠিক নেয় না। তাই মাইক্রোফোন স্যানিটাইজ করার উপরেই নির্ভর করতে হয়। তবে আমি সতর্ক।" তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, "আমাদের দল এই ব্যাপারে খুবই সতর্ক। মাস্ক না পরা থাকলেও প্রতি বক্তার বলার পরে মাইক্রোফোন স্যানিটাইজ করা হয়। মঞ্চে সঞ্চালকের জন্য আলাদা মাইক্রোফোনও রাখা হয়।"
২০২০ সালের জুলাই মাসে অভিষেক বচ্চন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। মনে করা হয়েছিল ওয়েব সিরিজের জন্য ডাবিং করতে গিয়ে মাইক্রোফোন ব্যবহার করায় অভিষেক করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইদানীংকালে মাস্ক ছাড়া মাইক্রোফোনে কথা বলা সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তৃণমূলের শশী পাঁজাও করোনায় আক্রান্ত। যদিও সাংবাদিক বৈঠকে শশীর মুখএ মাস্ক ছিল। অসুস্থ অধীরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব না হলেও তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, তিনি ‘স্যানিটাইজ’ করিয়েই মাইক্রোফোন ব্যবহার করেন।
সিপিএম-এর নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, "আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে নিয়ম করে মাইক্রোফোন স্যানিটাইজ করা হয়।" কিন্তু বিমান বসুর মতো প্রবীণের পক্ষে স্যানিটাইজারে ভরসা করা উদ্বেগের বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। সুবর্ণ বলেন, "বয়স্কদের বেশি সাবধানতা দরকার। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সকলেরই বয়স ষাটের উপর। তাই তাঁদের খুবই সতর্ক থাকা দরকার।" তাহলে কী করা উচিত? তিনি বলেন, "মাইক্রোফোনের মুখে ফুটো ফুটো থাকে, তাই স্যানিটাইজার স্প্রে করলেও তা জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব নয়। বরং মাইক্রোফোনে মাস্ক পরানো উচিত। সেটাও ডাবল মাস্ক হলে ভাল।"