পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। ফাইল চিত্র।
সামনেই বিধানসভার ভোটগ্রহণ পর্ব। শান্তিতে ভোট করানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ লালবাজারের কাছে। একই সঙ্গে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যাতে বাহিনীকে ঘায়েল করতে না পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকছে লালবাজার। সূত্রের খবর, করোনার সামান্যতম উপসর্গ দেখা দিলেই কলকাতা পুলিশের কর্মী, হোমগার্ড বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগে পর্যন্ত ওই কর্মীকে কোয়রান্টিনে থাকতে হবে।
রাজ্যে করোনা ফের মাথাচাড়া দেওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, বুধবার কলকাতায় করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮০ জন। গোটা রাজ্যে সেই সংখ্যাটা ৯৮২। করোনার এমন বাড়বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র বাহিনীকে ওই নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশ এ দিন প্রতিটি থানা এবং ইউনিটে পাঠানো হয়েছে এবং তা মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কলকাতা পুলিশের বাহিনীতে এক সময়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে নেমে গিয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাহিনীর সদস্যেরা ফের নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। পুলিশের এক কর্তা জানান, বাহিনীর মধ্যে যাতে আবার আগের মতো করোনা না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতেই ওই পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই কোয়রান্টিনে যেতে বলা হয়েছে, যাতে সংক্রমণকে রোখা যায়।
পুলিশকর্মীদের বক্তব্য, শহরে ভোটগ্রহণ পর্ব চলাকালীন বাহিনীর সদস্যেরা করোনায় আক্রান্ত হলে সমস্যা হতে পারে। মূলত সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই ওই নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার, যাতে ভোটের সময়ে অসুবিধা না হয়। গত বছর এ রাজ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পরে কলকাতা পুলিশের ৪১৫৯ জন এখনও পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন পুলিশকর্মী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৪ জন পুলিশকর্মীর।
সতর্ক থাকার পাশাপাশি বাহিনীর সদস্যেরা যাতে সব সময়ে মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করেন, সে নিয়েও লালবাজারের তরফে আধিকারিকদের বলা হয়েছে। ভোটের প্রচারের ভিড়ে বা মিছিলের সময়ে যাতে পুলিশকর্মীরা কোভিড-বিধি মেনে চলেন, তা দেখার জন্য আধিকারিকদের বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা-বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষও যাতে বাইরে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করেন, সে দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে পুলিশকে। এক পুলিশকর্তা জানান, পথচলতি বহু মানুষকে প্রতিদিনই মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও তা পরার ক্ষেত্রে প্রবল অনীহা দেখা যাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, মাস্ক না পরার অভিযোগে বুধবার ১২৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।