West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: দীর্ঘ ভোটপর্বে শামিল শহরের বাস, দীর্ঘমেয়াদি যাত্রী-ভোগান্তিও

এ বারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী বেশি থাকায় জেলায় ভোটের আগেই শহরের বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে বেসরকারি বাস কমছে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০৯
Share:

পথ চেয়ে: কখন আসবে বাস? অপেক্ষায় নিত্যযাত্রীদের ভিড়। ধর্মতলায়। ছবি: সুমন বল্লভ।

ভোট যত দিন, তত দিন ভোগান্তি! কারণ, ভোট-যজ্ঞে শামিল হবে বলে শহর থেকে উধাও হচ্ছে একের পর এক বাস। বাসের হাপিত্যেশ প্রতীক্ষায় মোড়ে মোড়ে নাকাল মানুষ। কখনও ৩০ মিনিট, কখনও বা তারও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।

Advertisement

রাজ্যে ইতিমধ্যেই প্রথম দু’দফার বিধানসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে। গোটা নির্বাচন পর্বে যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিপুল পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি এ বার রাজ্যে বুথের সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনী, রাজ্য পুলিশ এবং ভোটকর্মীদের যাতায়াতে জেলা ও শহরের অসংখ্য বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। এর জেরে ভোট শুরু হতেই শহরে কমতে শুরু করেছে যাত্রিবাহী সরকারি এবং বেসরকারি বাস। পথে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন আমজনতা।

তথ্য বলছে, এ বারের ভোটে মোট ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে রাজ্যে। গত নির্বাচনের থেকে বুথের সংখ্যাও বেড়েছে ২২ হাজারের বেশি। এ ছাড়া রাজ্য পুলিশ তো আছেই। ফলে এই পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশকর্মী এবং ভোটকর্মীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে শহর থেকে পর পর বাস তুলে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বাস ইউনিয়নগুলির দাবি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য এমনিতেই শহরে বাসের সংখ্যা কম ছিল। নির্বাচনের জন্য তার মধ্যে থেকেও শহরের বাস নেওয়া শুরু হয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলিতে এত কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকায় তাদের যাতায়াতের জন্য বাস তুলনামূলক কম লাগত। শুধুমাত্র শহর এবং শহরতলির নির্বাচনের সময়ে শহরের বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্যা তখন কমে যেত। এ বারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী বেশি থাকায় জেলায় ভোটের আগেই শহরের বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে।

ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে বেসরকারি বাস কমছে। যে কারণে পথে বেরিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। গড়িয়াহাট, রুবি, উল্টোডাঙা, রাসবিহারী, শিয়ালদহ, ধর্মতলায় বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে মানুষকে। যদিও বা অল্প কিছু বাসের দেখা মিলছে, তাতেও বাদুরঝোলা ভিড়। করোনা আতঙ্কের মধ্যেও সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ভিড় বাসেই উঠতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। বিমানবন্দর যাওয়ার বাসের অপেক্ষায় বৃহস্পতিবার রুবির মোড়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন মধুরিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ভোট শুরুর দিন থেকেই বাস দেখা যাচ্ছে না। কখনও ৩০ মিনিট, আবার কখনও ৪৫ মিনিট বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।” রাসবিহারী মোড়ে দাঁড়িয়ে ভোগান্তির একই অভিজ্ঞতা শোনালেন হাওড়ার আন্দুলের বাসিন্দা নারায়ণ সরকার। তাঁর ক্ষোভ, “আগে শহরে নির্বাচনের সময়ে দেখতাম দু’-এক দিনের জন্য রাস্তা থেকে বাস উধাও হতে। এ বার তো নির্বাচনের প্রথম দফা থেকেই রাস্তা থেকে বাস উধাও হয়ে গিয়েছে।”

শহরের সরকারি-বেসরকারি বাস কমে যাওয়ার কথা এক বাক্যেই মেনে নিচ্ছেন সকলে। পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এর জন্য সাধারণ মানুষের খুব সমস্যা হচ্ছে। এ বার ভোটপর্ব দীর্ঘ এবং বুথ বেশি হওয়ায় ভোগান্তিও বেড়েছে। বেসরকারি বাস ইউনিয়নের একটি, ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমনিতেই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য লোকসানের বোঝা বাড়তে থাকায় রাস্তায় বাস কম নামছিল। এর মধ্যেই জেলার নির্বাচনের জন্য শহরের বিভিন্ন রুট থেকে বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে।”

‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভোট শুরু হতেই নির্বাচন কমিশনের তরফে জেলা এবং শহর থেকে বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে। যে কারণে বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্যা কমছে।”

তা হলে কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে এই পরিস্থিতি? সমস্যার কথা স্বীকার করে পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য আরও
বেশি সংখ্যক সরকারি বাস পথে নামানো হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement