চণ্ডীপুরের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে প্রথম দফার ভোটে ৩০টির মধ্যে ২৬টি আসন পাবে বিজেপি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এমন দাবি নিয়ে এ বার পাল্টা কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট কথা, মানুষই এর জবাব দেবেন, আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন পড়বে না।
শনিবার ভোট তখনও শেষ হতে কিছুটা সময় বাকি। তার আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে ভোট ব্যবস্থাপনায় নির্বাচন কমিশনকে শংসাপত্র দিয়ে দিয়েছিলেন এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা। রবিবার তারই পুনরাবৃত্তি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অসম এবং বাংলায় শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য ধন্যবাদ জানান কমিশনকে। এর পরই আরও এক ধাপ এগিয়ে তাঁর সংযোজন, রাজ্যে প্রথম দফায় ভোট হওয়া ৩০টি আসনের মধ্যে ২৬টি দখল করবে বিজেপি। পাশাপাশি ভোটের ব্যবধানও বেশি থাকবে বলে দাবি করেছেন তিনি। শাহের এই দাবি নিয়েই উত্তর দিয়েছেন মমতা। রবিবার চণ্ডীপুরের তৃণমূল প্রার্থী অভিনেতা সোহমের সমর্থনে প্রচার করেন তৃণমূল নেত্রী। জনসভায় তিনি নাম না করে অমিতের দাবির কথা তুলে বলেন, ‘‘কালকে একটা ভোট হয়েছে। ৩০টি আসনে ভোট হয়েছে। আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, আপনি বলুন ক’টা আসন পাবেন? আমি কি ভোটের মেশিনের মধ্যে ঢুকতে যাব? আমি কী করে জানব কটা আসন পাব? মানুষ ভোট দিয়েছেন মানুষ বুঝবেন। হ্যাঁ, আমি আন্দাজে বলতে পারি। ৮৪ শতাংশ যখন ভোট হয়েছে তখন মা-বোনেরা, ভাই-বোনেরা, শ্রমিক-কৃষক আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।’’
রবিবারের ওই জনসভায় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মমতা আরও যোগ করেন ‘‘বিজেপি-র এক নেতা আজ বলেছেন ৩০টার মধ্যে ২৬-টা হামকো মিলেগা (আমরা পাব)। ২৬টা কেন? ৩০-এ ৩০ বলুন না! তিরিশ মে তিরিশই মিলেগা (তিরিশটার মধ্যে তিরিশটাই পাব)। তব গোল্লা জাদা হোগা না (তা হলে তো গোল্লা বেশি হবে)! রস ছাড়া, রসগোল্লা খাবে! ৩০-এর মধ্যে নাকি ২৬ পাবে!’’ এই সূত্রেই মমতার খোঁচা, ‘‘আমি বললাম, আর ৪টে বাকি রাখলেন কেন? সিপিএম আর কংগ্রেসের জন্য? আমি একটাও বলব না। কারণ আমি জানি মানুষ আমাদের দিয়েছেন। আমি মানুষকে সংখ্যা বলতে দেব।’’
শনিবার ভোটের শেষ পর্ব থেকেই দৃশ্যত ‘খুশি’ রাজ্য বিজেপি-র নেতারা। সাংবাদিক বৈঠকেও যার রেশ দেখা গিয়েছে। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে ‘উল্লসিত’ দেখিয়েছে অমিতকেও। কিন্তু তার পরমুহূর্তেই তথ্য এবং পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করে অমিতের বিরোধিতায় নেমেছে জোড়াফুল শিবির। বিহার, দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচনের ফল তুলে ধরে ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইট করেছেন, ‘নির্বাচনের ফলাফলের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে অমিত শাহের রেকর্ড রয়েছে। তিনি ধারাবাহিকভাবে ভুল বলেন। ২০১৫ থেকে তার ট্র্যাক রেকর্ডটি দেখুন!’