ফাইল চিত্র।
এ বারের ভোট-পর্বে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আগাগোড় সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কমিশন বিজেপির কথায় চলছে। তারই পাল্টা এ বার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্র্কাশ নড্ডা মন্তব্য করলেন, ‘‘যে দল হারে, তারাই আম্পায়ারকে দোষ দিতে শুরু করে! তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের চেহারায় হারের আতঙ্ক স্পষ্ট ফুটে উঠেছে!’’
রাজ্যে অষ্টম ও শেষ দফার ভোটের প্রচার ফুরিয়ে গেল সোমবারই। দীর্ঘ প্রচার শেষ করে সর্বভারতীয় নেতৃত্ব ও তারকা-প্রচারকদের এখন ঘরে ফিরে যাওয়ার পালা। করোনা পরিস্থিতিতে কমিশনের নির্দেশে রোড-শো বা বড় জনসভা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শেষ দিনে কলকাতা থেকে কিছু ভার্চুয়াল প্রচার কর্মসূচিতেই অংশগ্রহণ করেছিলেন নড্ডা। পরে নিউটাউনের একটি হোটেলে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির বক্তব্য, ‘‘ভোটে যখন তৃণমূল জিতেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তত দিন কমিশনকে নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি! এখন তৃণমূলের হারের সম্ভাবনা আসতেই আম্পায়ারের দিকে আঙুল তোলা শুরু হয়েছে।’’
নড্ডা দাবি করেছেন, ‘‘বাংলায় এই বিধানসভা ভোটের গোটা প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী কখনও নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে গালিগালাজ করেছেন, কখনও আমার নাম নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন, কখনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। এখন আবার রাজ্য পুলিশকেও হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, ২ মে-র পরে দেখে নেওয়া হবে। এত নেতিবাচক, বিভাজনমূলক এবং ধ্বংসাত্মক প্রচার কখনও আমরা দেখিনি!’’
পাঁচ দফার ভোটের পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ দাবি করেছিলেন, বিজেপির ১২২ আসনে জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। নড্ডা এ দিন আসনের কোনও সংখ্যা দাবি করেননি। তবে তিনি বলেছেন, ‘‘ছয় দফার ভোটেই বিজেপি সরকার গড়ার সংখ্যা হাসিল করে ফেলেছে। সপ্তম ও অষ্টম দফায় মোদীজি’র দেখানো উন্নয়নের রাস্তায় আরও এগিয়ে যাচ্ছেন বাংলার মানুষ। বাংলায় ২ তারিখ বিজেপির সরকারই আসছে।’’
মোদী, শাহ, নড্ডাদের মতো বিজেপির সর্বভারতীয় নেতারা এ রাজ্যে এসে বড় বড় সভা করেছেন এবং তার জেরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা দেশে করোনা চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল, ওষুধ, অক্সিজেনের যে হাহাকার চলছে, তার জন্যও কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন তিনি। অন্য বিরোধীদেরও অভিযোগ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার চেয়ে বাংলায় ভোট নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন মোদী-শাহেরা। নড্ডা অবশ্য এই প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘এখন দোষারোপের খেলায় যেতে চাই না। পরিস্থিতি খুবই স্পর্শকাতর। আমাদের সকলেরই দায়িত্ব আছে এবং সকলকে মিলিত ভাবেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।’’