কাকদ্বীপের এক ভোটারকে সাহায্য করছেন জওয়ান। নিজস্ব চিত্র।
কাকদ্বীপের বামানগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে ঢুকছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মন্টুরাম পাখিরা। তাঁকে ঘিরে সংবাদমাধ্যমের ভিড়। এক অত্যুৎসাহী চিত্রগ্রাহক মন্ত্রীর ভোটদানের ছবি তুলতে বুথের ভিতর ঢুকে পড়ার উপক্রম করতেই বাধা দিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। বুঝিয়ে দিলেন, এর বেশি এগোনোর অনুমতি নেই। ভাঙা হিন্দিতে অনুরোধ করলেন, ‘‘আমাদের কাজটা ঠিকঠাক করতে সহযোগিতা করুন।’’
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার চার কেন্দ্রের ভোটে আগাগোড়া কখনও নরম, কখনও গরম মেজাজে থেকে নির্বিঘ্নে ভোট উতরে দিল বাহিনী। গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, সাগর, কাকদ্বীপে কার্যত শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য বাহিনীকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সকাল থেকেই কড়া হাতে ভোট পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কাকদ্বীপের রথতলা প্রাথমিক স্কুলের বাইরে এ দিন জটলা করেছিলেন কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্রুত এসে ভিড় হটিয়ে দেয়। ওই কেন্দ্রের সুন্দরবন বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে ভোটকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে একটি দোকানে বিজেপি কর্মীদের বসে থাকতে দেখেও দ্রুত সরিয়ে দেওয়া হয়। বাহিনীর দাপটে ভোট কেন্দ্রের আসে পাশে কার্যত কোনও জমায়েত দেখতে পাওয়া যায়নি।
প্রতিবন্ধী এক ভোটদাতাকে কোলে করে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে দেখা যায় এক জওয়ানকে। এ দিন বাড়ি থেকে টোটো করে কাকদ্বীপের ১২২ নম্বর বুথে ভোট দিতে আসেন যোগেন্দ্র রায় নামে ওই ব্যক্তি। গেট থেকে বুথ পর্যন্ত তাঁকে কোলে করে নিয়ে যান জওয়ান। ভোটদানের পরে ফের টোটো পর্যন্ত কোলে করে পৌঁছেও দেন তিনি। সুন্দরবন বালিকা বিদ্যালয়েও ক্র্যাচ হাতে ভোট দিতে আসা এক বৃদ্ধাকে সাহায্য করে বুথে পৌঁছে দিতে দেখা যায় জওয়ানকে।
কাকদ্বীপের বাসিন্দা সমর সাহা বলেন, ‘‘বাহিনী খুবই ভাল কাজ করেছে। নিরাপত্তার দিকটা যেমন আঁটোসাটো ছিল, তেমনই দুঃস্থ, বয়স্কদের ভোটদানের ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন ওঁরা।’’
কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমায় এ দিন কার্যত কোনও অশান্তির খবর মেলেনি। দু’একটি জায়গায় ভোটদাতাদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয় বাহিনী। পাথরপ্রতিমায় বুধবার রাতে তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে ফাঁকা মাঠে বোমাবাজির অভিযোগ তোলে বিজেপি। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করে। কাকদ্বীপে একটি বুথে বিজেপির এক পোলিং এজেন্ট গেরুয়া পাঞ্জাবি পরে বসায় বিতর্ক বাধে। পরে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।