প্রতীকী ছবি।
মনোনয়ন যাচাই করার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্কতাগ্রহণের নির্দেশ দিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কার্যালয়। শনিবার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইও আরিজ আফতাব। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই মনোনয়নের যাচাই-প্রক্রিয়া নিয়ে সতর্ক-বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছ, কর্তব্যে গাফিলতি ফের নজরে এলে সংশ্লিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপও করা হতে পারে।
সম্প্রতি পুরুলিয়ার জয়পুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে দেয় কমিশন। তা নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। এখন আরও মনোনয়ন পর্ব বাকি রয়েছে। অনেক প্রার্থীই আগামী দিনে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। তখনও এমন ঘটনা ঘটলে আইনি লড়াইয়ে কমিশনকে ব্যস্ত হতে হবে। সূত্রের বক্তব্য, ভবিষ্যতে এমন বিতর্ক তৈরি হওয়া ঠেকাতেই অফিসারদের ফের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রত্যেককে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত ভাবে নিশ্চিত হয়ে এবং মারাত্মক ত্রুটি থাকলে তবেই মনোনয়ন বাতিল করতে হবে। ফলে ছোটখাটো ভুলের ক্ষেত্রে কিছুটা উদার হয়েই মনোনয়ন যাচাই করতে হবে অফিসারদের। সে ক্ষেত্রে ভুলের প্রকৃতি প্রার্থীকে জানিয়ে তা সংশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেক প্রার্থীর মনোনয়ন সম-গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করতে হবে অফিসারদের। কোনও অফিসারের গাফিলতি নজরে এলে তাঁকে সাসপেন্ড করতেও পিছপা হবে না কমিশন। পাশাপাশি পোস্টাল ব্যালটের ‘কাউন্টার পার্ট’-এর সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, পর্যবেক্ষকদেরও কমিশনের ‘সি-ভিজিল’ অ্যাপ দেওয়া হবে। তাতে যে অভিযোগগুলি জমা হবে, সেগুলি দেখতে পারবেন তাঁরা। এক ভোট-কর্তার কথায়, “এ দিনের বৈঠকে সম্পূর্ণ ভাবে মনোনয়ন প্রক্রিয়ার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছিল। যে ঘটনা পুরুলিয়ায় ঘটেছে, সেটা কমিশনের কাছে অনভিপ্রেত। তাই এই প্রশ্নে আরও কড়া অবস্থান রাখবেন কমিশন-কর্তারা।”
এ দিন সিইও দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার দ্বিতীয় দফার মনোনয়নের শেষ দিন ছিল। ওই দফায় ৩০টি আসনের ভোট হবে। ওই দিন পর্যন্ত ১৭৭টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে কমিশনের কাছে। তৃণমূল এবং বিজেপি ৩০টি করে, বিএসপি ৭, সিপিআই ২, সিপিএম ১৬, কংগ্রেস ৯, ফরওয়ার্ড ব্লক ২, অন্যান্য ৪৭ এবং নির্দলের ৩৪টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত কমিশনের কাছে ৩৫১২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ২৫৬৪টি অভিযোগ সঠিক। ভোট ঘোষণার দিন থেকে এ পর্যন্ত ১৭ কোটি ৭ লক্ষ টাকা মূল্যের নগদ, ৩৯ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার মাদক, ৮ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকার মদ, ৬ কোটি ৫ লক্ষ টাকার সোনারুপো এবং ১৭ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকার অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৮৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে।