সমাবেশ: মঞ্চে আব্বাস সিদ্দিকী। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের মধ্যে ভোটের টিকিট না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ ফের উসকে দিলেন আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকী।
ভাঙড়ে আরাবুল ইসলামের টিকিট না পাওয়ার পিছনে নাম না করে ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি শওকত মোল্লাকে দায়ী করেন তিনি। রবিবার ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রের প্রার্থীর সমর্থনে জীবনতলার পয়নায় এক জনসভা থেকে আব্বাস বলেন, ‘‘ও কেবল জেলায় একা থাকবে বলে টিকিট পেতে দেয়নি। আশপাশে অনেকেই আছে, যারা ওর জন্য টিকিট পায়নি।” যদিও এই বক্তব্য প্রসঙ্গে আরাবুল ইসলাম বলেন, ‘‘কে টিকিট পাবে না পাবে তা শওকত মোল্লা বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করেন। উনি যেটা ভাল বুঝেছেন সেটাই করেছেন। আমরা কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। আমি দলের অনুগত সৈনিক। দলের জন্য কাজ করছি। কে কি বলছে তাতে আমার কিছু যায় আসে না। যিনি বলছেন তিনি তার নিজের দলের ব্যাপারে মাথা ঘামান। আমাদের দলে ব্যাপারে মাথা না ঘামালেও চলবে তার।’’ আব্বাস ছাড়াও ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত বাসন্তীর আরএসপি প্রার্থী সুভাষ নস্কর, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ, ভাঙড় ও ক্যানিং পূর্বের আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকী ও গাজি শাহাবুদ্দিন সিরাজি-সহ অন্যান্যরা।
শওকতের নাম না করে তাঁকে ‘মুনাফেক (ভণ্ড)’ ‘বেহায়া,’ ‘নির্লজ্জ’— বলে কটূক্তি করেন আব্বাস। বলেন, “দিদির নামে কিছু বললে এই মুনাফেকের খুব কষ্ট হয়। অথচ এই মুনাফেক দিদির গাড়িতে বোমা মেরেছিল জীবনতলায়। যারা দিদির জন্য, দলের জন্য জান দিল, তাঁদের বাদ দিয়েছেন দিদি। দিদি কিছু বোঝেন না। তৃণমূলের অবস্থা এখন টাকা দে, দল কর। বেহায়া, নির্লজ্জ এখন ফুরফুরা শরিফে যাচ্ছে অক্সিজেন নিয়ে আসতে, মানুষকে ভুল বোঝানোর জন্য।” শওকত পরে বলেন, “আমাদের দল ওদের মতো ১০ লক্ষ, ২২ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রার্থী করে না। ইতিমধ্যে ওদের দলের সভাপতি এ কথা স্বীকার করেছেন। আমাদের দলের প্রার্থী ঠিক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওঁদের ভাগ্য ভাল। আরাবুল টিকিট পেলে ওঁর ভাইয়ের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যেত। রেজাউল করিম দলের প্রার্থী হয়েছেন। ওঁর (আব্বাস) ভাই ৫০ হাজার ভোটে হারবেন। যে ভাঙড়ের মানুষকে বেজন্মা, বেইমান, কাফের, স্বার্থপর বলেছিলেন, সে ভাঙড়ের মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাচ্ছেন। ওঁর লজ্জা হওয়া উচিত।”
বিমল গুরুংকে দলে টানা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে আব্বাস বলেন, “দিদি বলছে পায়ে চোট লেগেছে। মঞ্চে এক পা তুলে বক্তব্য দিচ্ছেন। হঠাৎ বাঁ পায়ের চোটের উপরে ডান পা তুলে দিলেন। আসলে কিছুই হয়নি। পুরো ঢপ।” বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে আব্বাস বলেন, ‘‘পদ্মফুল থেকে জন্ম জোড়াফুলের। জোড়াফুল পদ্মফুলকে ছাপিয়ে গিয়েছে চিটিংবাজিতে, নাটকবাজিতে। মমতা আরএসএসের বড় সদস্য।”
সেলিম বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় কয়েকজন পুলিশ অফিসার আছেন, যাঁরা জোচ্চোরদের সঙ্গে থেকে এমন অবস্থা হয়েছে, উর্দি খুলে নিলে দেখা যাবে অন্তর্বাসেও তৃণমূলের ছাপ।”