চপার দেখতে ইঞ্জিনে
আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে মঙ্গলবার পুরুলিয়ার পাড়ার গুড়গুড়িয়া ময়দানের হেলিপ্যাডের কাছে রাখা ছিল দমকলের একটি ইঞ্জিন। কিন্তু আকাশে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চপার দেখতে পেয়ে উৎসাহের চোটে সেই ইঞ্জিনেই চড়ে বসলেন সভায় আসা লোকজন। দেখতে দেখতে দমকলের ইঞ্জিনটা যেন মানুষের ভিড়ে ঢাকাই পড়ে গেল। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে পুলিশকর্মীরা তেড়ে গেলেন। কিন্তু তাঁদের কথা কেউ শুনলে তো! মুখ্যমন্ত্রীকে নাগালে পেয়ে উৎসাহ তখন লাগামছাড়া। হাল ছেড়ে দিয়ে এক পুলিশকর্মীর কাকুতি— ‘‘চপার নামাতে গিয়ে যদি বিপদ হয়, দমকলের ইঞ্জিন খালি করতেই তো সময় চলে যাবে রে!’’ কিন্তু চপারের গর্জন, জনতার উল্লাসে তা চাপা পড়ে গেল।
নীহার বনাম নীহার
তৃণমূলের কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জোট প্রার্থী হয়েছেন নির্দল কাউন্সিলর নীহাররঞ্জন ঘোষ। কিন্তু মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন দ্বিতীয় নীহার ঘোষ। ইনি পেশায় শিক্ষক।। সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসই তাঁকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। কারণটাও খুব স্পষ্ট। ভোটাররা যাতে জোটের নীহারবাবুর সঙ্গে তাঁকে গুলিয়ে ফেলেন! কে এই দ্বিতীয় নীহার? শিক্ষক নীহারবাবু স্থানীয় মহলে কৃষ্ণেন্দুবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। জোটের নেতাদের বক্তব্য, ভোটের বাজারে এই পুরনো কৌশলে কোনও কাজ হবে না। মানুষ জানেন, কোন নীহার ঘোষকে ভোট দিয়ে জেতাতে হবে।
হঠাৎ বাইসন
‘স্যার, ওই যে ও দিকটায় দেখুন’। ভুট্টা খেতের ভিতরে দাঁড়িয়ে দু’টি প্রমাণ আকারের বাইসন। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বনকর্মীদের তড়িঘড়ি নির্দেশ দিলেন, “তাড়াতাড়ি করুন। এখনই এদের জঙ্গলে ফেরাতে হবে।’’ খেতে তখন কয়েকশো মানুষ। বিনয়বাবু ছুটে গেলেন সে দিকে, ‘‘করছেন কী! সরে যান।” শেষ পর্যন্ত যদিও মাথাভাঙায় তৃণমূলের প্রার্থী বিনয়বাবুর মুখে তৃপ্তির হাসি। হঠাৎই সকালবেলা এখানকার উত্তর দরিবস গ্রামে ঢুকে পড়া বাইসন দু’টির একটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করা গিয়েছে। আর একটি? ডুডুয়া নদী পার হয়ে সে চলে গিয়েছে।
জোট জোয়ারে
একেই বলে জোটের হাওয়া। মাস ছয়েক আগে এগরা-১ ব্লকের সাহারা পঞ্চায়েত এলাকার শীপুর কেশবেশ্বর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন সমিতির ৪০টি আসনে ভোট হয়। কিন্তু ২২টি আসনের ফল বেরোনোর পরেই গণনা বন্ধ করে হাইকোর্ট। সেই ২২ আসনে তৃণমূল পেয়েছিল ১২টি, বিরোধীরা ১০। তখন জোটের কোনও গন্ধও ছিল না বাজারে। কিন্তু আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার ফের ভোট হল বাকি ১৮টি আসনে। আর তার মধ্যে ১৩টিই জিতে নিয়েছে তৃণমূল-বিরোধী জোট। কংগ্রেস-বাম তো রয়েছেই এই জোটে, আছেন তৃণমূলের বিদ্রোহীরাও।