ভিভিপ্যাট। এতেই যাচাই করা যাবে ঠিক জায়গায় ভোট পড়েছে কি না। যন্ত্র-বিভ্রাট কিংবা যন্ত্রে কারচুপির মোকাবিলায় এ বার নতুন যন্ত্র। যে-প্রার্থীর সমর্থনে ভোটযন্ত্রের বোতাম টিপলেন, ভোটটা ঠিক তাঁর ঝুলিতেই পড়ল কি না, বুথে দাঁড়িয়ে ভোটার এখন থেকে নিজেই সেটা দেখে নিতে পারবেন ওই নতুন যন্ত্রে। তবে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আপাতত এই সুবিধা মিলবে মাত্র ২২টিতে।
নতুন যন্ত্রটি ওই সব কেন্দ্রের বুথে ভোটযন্ত্রের পাশেই রাখা থাকবে। ভোটযন্ত্রের বোতাম টেপার পরে ‘বিপ’ শব্দ হলেই পাশে রাখা যন্ত্রের ছোট্ট পর্দায় ভেসে উঠবে ভোটারের পছন্দের প্রার্থীর নাম ও প্রতীক। সময় লাগবে ন’সেকেন্ড। তার পরে ওই যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসবে একটি ছাপানো স্লিপ, যা ওই যন্ত্রের লাগোয়া একটা বন্ধ বাক্সে ঢুকে যাবে। গণনার সময় প্রয়োজন হলে খোলা যেতে পারে ওই বাক্স। নির্বাচন কমিশন এই ব্যবস্থার নাম দিয়েছে ‘ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রেল’ বা ভিভিপ্যাট।
ব্যালট পেপার ব্যবস্থায় ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠত যখন-তখন। ইভিএম বা ভোটযন্ত্র আসার পরে সেই সমস্যা থাকবে না বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু যন্ত্রও গড়বড় করছে বা যন্ত্রেও কারচুপি চলছে বলে অভিযোগ উঠছে। বুথে দাঁড়িয়ে ভোটার নিজেই যাতে যাবতীয় সন্দেহ নিরসনের সুযোগ পান, সেই জন্য ভোটযন্ত্রের সঙ্গে ভিভিপ্যাটের বন্দোবস্ত করেছে কমিশন। রাজ্যে গত লোকসভা নির্বাচনে পরীক্ষামূলক ভাবে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভিভিপ্যাট ব্যবহার করা হয়েছিল। এ বার তার ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। কমিশন ভবিষ্যতে সব কেন্দ্রের ভোটারদের এই সুবিধে দিতে চায়।
সম্প্রতি হাওড়ার সদর নির্বাচন দফতরে ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণের সময়ে ওই নতুন যন্ত্র দেখানো হয়। কী ভাবে তা ব্যবহার করা যাবে, হাতে-কলমে তার সবিস্তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাঁদের। হাওড়া সদরের মহকুমাশাসক সমীর দাস বলেন, ‘‘কোনও ভোটার যদি বোতাম টেপার পরে পর্দায় দেখেন ভোট পড়ে গিয়েছে অন্য জায়গায়, তখন তিনি প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে প্রিসাইডিং অফিসার তাঁকে ফের ভোট দেওয়ার সুযোগ দেবেন।’’ তবে মিথ্যা অভিযোগ করলে ভোটাদাতার জেল পর্যন্ত হতে পারে।