ফরিদপুরের আরতি গ্রামে তৃণমূলের প্রচারে পায়েল। নিজস্ব চিত্র।
ভোটার তালিকায় এখনও নাম ওঠেনি। কিন্তু গ্রামে তৃণমূলের প্রচারের আগাম খবর জেনে আগের রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারেনি রাজিয়া সুলতানা, সুরেয়া খাতুনেরা। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল নিয়ে অবশ্য তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। রাজিয়া, সুরেয়াদের যাবতীয় উত্তেজনা ছিল রুপোলি পর্দার নায়িকার আসার কথা জেনে। বুধবার দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের আরতি গ্রামে তৃণমূল প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারির সমর্থনে প্রচারে আসা পায়েল সরকারকে দেখার পরে আপ্লুত ওই স্কুল পড়ুয়ারা।
পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে পায়েল প্রচারে আসবেন, তা শোনা গিয়েছিল মঙ্গলবার বিকেলে। রাজিয়া, সুরেয়ারা জানায়, ‘জামাই ৪২০’, ‘আই লাভ ইউ’-সহ পায়েল অভিনীত অনেক সিনেমা দেখেছে তারা। সেই নায়িকা তাদের গ্রামে আসবেন, তা-ও একেবারে বাড়ির দরজার সামনে, তা কোনও দিন ভাবেনি তারা। এ দিন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে হুডখোলা গাড়িতে চড়ে পায়েল গ্রামে ঢুকতেই হইচই শুরু হয়ে যায় গ্রাম জুড়ে। রাজিয়া, সুরেয়াদের কথায়, ‘‘সকাল ১০টায় আসবে বলেছিল। কিন্তু আসে আর না। শেষে ১১টা নাগাদ পৌঁছতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। আমাদের দেখে হাত নেড়েছে পায়েল!’’ নায়িকাকে মালা পরাবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন গ্রামের বধূ তৈফুন্নেসা বেগম, নুরজাহান বিবিরা। পায়েল তাঁদের হাত থেকে মালা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক জনের হাতে ধরিয়ে দেন। তবু খুশির শেষ নেই তৈফুন্নেসাদের। তাঁদের কথায়, ‘‘একেবারে নায়িকার হাতে মালা তো দিতে পেরেছি!’’ সকাল ১১টা নাগাদ ফরিদপুরে পৌঁছন পায়েল। আরতি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে তিনি রোড-শো করেন। ঘণ্টাখানেকের কর্মসূচি শেষে ফিরে যান। তবে প্রার্থী জিতেন্দ্রবাবু সঙ্গে ছিলেন না।
এ দিন বিকেলে দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে ভিড়িঙ্গি থেকে বড় মিছিল বেরোয়। বেনাচিতি বাজার পেরিয়ে মিছিল গিয়ে শেষ হয় প্রান্তিকায়। তার পরেই শুরু হয় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। তৃণমূল নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী মিছিল সেরে ফেলতে পারলেও বিজেপির প্রচার কর্মসূচি বিঘ্নিত হয়। দলের প্রার্থী কল্যাণ দুবের সমর্থনে কেন্দ্রীয় নেতা শাহনওয়াজ হুসেনের সগড়ভাঙায় জনসভা করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি দুর্গাপুর স্টেশন এলাকায় দলের কার্যালয়ে আসেন। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে মালা দেন। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় রোড শো আর করেননি।