উদয়নারায়ণপুরে বিরোধী এজেন্টের ঘরে ভাঙচুরের পর। ছবি: সুব্রত জানা।
ভোটগ্রহণ পর্ব মেটার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বড় কোনও ঝামেলা না হলেও অন্য জেলার মতো ভোট পরবর্তী হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে হাওড়া জেলায়ও।
বাড়িতে ভাঙচুর, মারধর, হুমকির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে সোমবার ভোটগ্রহণ পর্ব মেটার কিছু ঘণ্টা অতিক্রম হওয়ার পর থেকেই। আমতার খোষালপুরে বাসিন্দা নীহাররঞ্জন দলুই, স্বপন মালিক ও গোবিন্দ দাস সোমবার উদয়নারায়ণপুরের জোট প্রার্থী সরোজ কাঁড়ারের হয়ে বুথে এজেন্টের দায়িত্ব সামলেছিলেন। ভোটের নানা কাজ মিটিয়ে রাত আটটা নাগাদ বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া করছিলেন। অভিযোগ সেই সময়ই তৃণমূলের লোকেরা তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়। স্বপনবাবুদের অভিযোগ, ‘‘ঘরের মধ্যে যখন ছিলাম তখনই শুনতে পাই বন্দেমাতরম বলতে বলতে একদল লোক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। কয়েক মুহূর্ত পরেই বোমা ফাটার আওয়াজ পাই আমরা। এর সামান্য পরেই আমাদের বাড়িতে তারা আক্রমণ করে। টালির চালে লাঠি-বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে থাকে। হুড়মুড়িয়ে টালি ভেঙে পড়ে।’’ কার্যত আতঙ্কে তাঁরা একটি ঘরের মধ্যে সিঁটিয়ে যান বলে গোবিন্দবাবুরা জানান। তাঁদের আরও অভিযোগ, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূলের লোকেরা হুঁশিয়ারিও দিয়ে যায়। স্বপনবাবুরা আমতা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ অস্বীকার করে এটাকে চক্রান্ত বলে দাবি করেছে উদয়নারায়ণের বিদায়ী বিধায়ক সমীর পাঁজা।
শুধু উদয়নারায়ণপুর নয়। একই অভিযোগ আসছে পাঁচলার জলা কান্দুয়া এলাকা থেকেও। ওই এলাকার ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে চড়াও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। নাসের মল্লিক নামে এক ফব কর্মীর জরির কারখানায় ভাঙচুর করে তাঁকে প্রাণে মারারও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আপাতত তিনি বাড়িছাড়া। অভিযোগের আঙুল সেই তৃণমূলের দিকে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা নাসের মল্লিক-সহ কয়েকজন এবারে জোট প্রার্থী ডলি রায়ের হয়ে নির্বাচনে কাজ করেছিলেন। তাই তৃণমূল তাঁদের উপর হামলা চালায় এবং কয়েকজনকে মারধরের পরিকল্পনা করে শ’খানের তৃণমূল কর্মী-সমর্থক মঙ্গলবার সকালে নাসেরের বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। নাসেরের দাবি, মূল গেটের তালা ভাঙতে পারেনি বলে ওরা ভিতরে ঢুকতে পারেনি। না হলে তারা প্রাণে মেরে দিত। কোনও রকমে লুকিয়ে এলাকা ছাড়েন বলে নাসের জানিয়েছেন। মারধর খেয়ে যান কামাল মল্লিক। এ ক্ষেত্রেও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।