পাল্টা সভায় হুঙ্কার মমতার

দু’দিন আগে সিউড়িতে এসে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে গিয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। চব্বিশ ঘণ্টা আগে মুরারইয়ের সভা থেকে একই ভাবে রাজ্য সরকার ও মমতাকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় ও দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১০
Share:

মুরারইয়ের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — সব্যসাচী ইসলাম

দু’দিন আগে সিউড়িতে এসে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে গিয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। চব্বিশ ঘণ্টা আগে মুরারইয়ের সভা থেকে একই ভাবে রাজ্য সরকার ও মমতাকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। বৃহস্পতিবার সেই দুটি জায়গায় সভা করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে পাল্টা সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘এটা উন্নয়ন সত্বেও বিরোধীরা শুধু কুৎসা করছে। তাঁদের চোখ নেই কানও নেই।’’ শুধু বিরোধীদের উদ্দেশ্যে সুর চড়ানো নয়, কঠোর ভাষায় আক্রমণ করেছেন নির্বাচন কমিশনকে।’’

Advertisement

এ দিন মমতার প্রথম সভাটি ছিল মুরারইয়ের গুসকরায়। মমতা বলেন, ‘‘কথায় কথায় বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করতে হবে। সেলিমকে কেন গ্রেফতার হবে না? কেন অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হবে? কি করেছে সে? কেন অধীর গ্রেফতার হবে না? কেন সুজন গ্রেফতার হবে না? কেন বিমান গ্রেফতার হবে না ? কেন বুদ্ধ গ্রেফতার হবে না? যাও আগে গিয়ে করে এস। আগে গিয়ে করে এস।’’

সুর নরম করে মমতা বলেন, ‘‘বড় বড় ভাষণ দিচ্ছো। বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে। আমার কথা বলা অধিকার আছে। তোমার কথা বলার অধিকার আছে বলে তুমি ভগবান নও। কথা বলার অধিকার সবার আছে। তোমার কথা তুমি বলবে। আমার কথা আমি বলব। তুমি তোমার কাগজ ফলাবে,আমি আমার গণতান্ত্রিক অধিকারে কথা বলব। এসব দেখিয়ে আমাকে চমকিয়ে কোনও লাভ নেই।’’

Advertisement

এরপরই মমতা নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘মোদী তোমায় বলে দিয়েছে তাই তোমায় চিঠি পাঠাতে হবে। সনিয়া তোমায় বলে দিয়েছে তাই তোমায় চিঠি পাঠাতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ওসব কেয়ার টেয়ার করে না। একটা ইলেকশনকে কেন্দ্র করে কতো বদনামি চলছে। সকাল থেকে রাত অবদি গালিগালাজ করছেন।’’ তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, ‘‘কমিশনে আমার নামে নালিশ করেছে আমি বলেছি ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে উত্তর চাই। অফকোর্স চাই। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে উত্তর নেব। এই কুৎসার বিরুদ্ধে, অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, চরিত্র হননের বিরুদ্ধে।’’

একই সুর ছিল সিউড়ির সভাতেও। সিউড়িতে চাঁদমারি মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপ্টার সিউড়িতে ঠিক তিনটে ২৭ মিনিট নাগাদ।

পাক্কা সাড়ে তিনটের সময় মঞ্চে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগেই দলের মন্ত্রী সাংসদ ও এবার বিধানসভায় প্রার্থীরা হাজির হয়ে যান। কর্মী-সমর্থকদের ভিড় জমতে শুরু করছিল বেলা একটা থেকে। মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে পৌঁছনোর আগেই মাঠ ভরে যায়। তৃণমূলের হিসাবে প্রায় ১ লক্ষ লোকের জমায়েত হয়েছিল। পুলিশের হিসাবে জনসভায় লোকসংখ্যা হাজার পঁচিশ থেকে ত্রিশ। বিরোধীরা বলছেন লোকসংখ্যা যাই হোক, ভোটবাক্সে প্রভাব পড়বে না। আর ভিড়ের অধিকাংশই হয়েছিল কপ্টার দেখতে।

সিউড়ির সভায় ছিলেন জেলা সভাপাতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী, সাংসদ শতাব্দী রায় এবং জেলার প্রার্থীরা।

মমতা প্রত্যেকের সমর্থনে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান। বক্তব্য এগোতেই ঝাঁঝ বাড়ে বিরোধী ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণ, দুটি। এক নির্বাচন কমিশন নাকি বিরোধীদের কথায় উঠছে বসছে। একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এমনকী তাঁকেও শো-কজ করছে। দ্বিতীয়ত, বীরভূমে নির্বাচন করানোর কাণ্ডারী জেলা সভাপতি অনুব্রতর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। দাবি উঠেছে, গ্রেফতারির। মমতা বলেন, ‘‘বিরোধীরা অকারণ কুৎসা ছড়াচ্ছে, এরা কোনও কাজ করে না।’’

তিনি বলেন, ‘‘গায়ে হাত দিয়ে দেখো। গায়ে হাত দিয়ে দেখো।

আমরা সরকারে আছি বলে আমরা মরে যাইনি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement