দলীয় প্রার্থীরা জয়ের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলতেই আত্মহারা তৃণমূল কর্মীরা সবুজ আবির নিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলেন। সেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ক্রমে আছড়ে পড়ল বিরোধী রাজনেতিক দল ও সংগঠনের কার্যালয়ে। বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতেও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজ কলেজ কলোনি এলাকায় সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফের একটি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় তৃণমূলের লোকজনকে। এলাকাটি ঝাড়গ্রাম রাজ মহিলা কলেজের গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তাবেষ্টনীর খুব কাছে। ভাঙচুর চলাকালীন জনা সাতেক পুলিশ কর্মীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে অবশ্য ঝাড়গ্রামের আইসি তানাজি দাস বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ছুটে যান।
ঝাড়গ্রাম পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে সিপিএমের ঝাড়গ্রাম শহর জোনাল কমিটির কার্যালয়। সেখানেও চড়াও হয় তৃণমূলের লোকজন। অভিযোগ, ইট-পাটকেল ছুড়ে জানালার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। প্রাঙ্গণের শহিদ বেদির লোহার দণ্ডটি বেঁকিয়ে দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের জামতলায় সিপিএমের শাখা কার্যালয়ের লোহার দরজা ভেঙে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়। বেলপাহাড়ি ব্লকের হাড়দায় সিপিএমের লোকাল কমিটির কার্যালয়েও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। হাড়দায় দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে বিনপুর থানায় ২২ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর নামে অভিযোগ করেছে সিপিএম। তবে পুলিশ কোনও মামলা রুজু করেনি বলে অভিযোগ করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য প্রদীপ সরকার।
নয়াগ্রামে এ বার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল বিজেপি। ভোটের ফলে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে তৃণমূল প্রার্থী দুলাল মুর্মু ফের নির্বাচিত হওয়ার পরে নয়াগ্রাম ব্লক জুড়ে ব্যাপক গোলমাল শুরু হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নয়াগ্রামের কলমাপুকুরিয়া গ্রামে বিজয় মিছিল করে তৃণমূল। কলমাপুকুরিয়া গ্রামে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুমন সাহুর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়াও একাধিক বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর ও বোমাবাজি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ দিন ঝাড়গ্রাম থেকে গোপীবল্লভপুর ফেরার পথে ফেঁকো এলাকায় বিজেপি-র কয়েকজন কাউন্টিং এজেন্টকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বিনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের জামবনি ব্লকেও এক বিজেপি কর্মীর দোকান ভাঙচুর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি চূড়ামণি মাহাতো বলেন, “জোট করেও হালে পানি না পায়নি ওরা। হতাশায় কংগ্রেসের লোকেরাই সিপিএম ও বিজেপির লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। বিরোধীরা নতুন করে নানা চক্রান্ত শুরু করেছে। আমাদের কর্মীদের সংযত ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য বলেছি।”